Thursday, December 12, 2013

কাদের মোল্লার ফাঁসির পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব বিপন্ন Bangladesh executes Islamist leader for 1971 war crimes, clashes loom बांग्लादेश में कट्टरपंथी इस्लामी नेता अब्दुल कादर मुल्ला को फांसी दे दी गई है। देश की सर्वोच्च न्यायालय ने कट्टरपंथी इस्लामी नेता अब्दुल कादर मुल्ला की मौत की सज़ा को बरक़रार रखा था और गुरुवार देर शाम उन्हें फांसी दे दी गई। बांग्लादेश के गृह मंत्रालय ने मुल्ला की फांसी की पुष्टि करते हुए बताया कि उन्हें गुरुवार को रात दस बज ढाका के सेंट्रल जेल में फांसी दी गई। कादर मुल्ला को फांसी दिए जाने को लेकर देश भर में सुरक्षा सुबह से ही कड़ी कर दी गई थी, इसके बावजूद उन्हें फांसी देने के बाद बांग्लादेश के कुछ शहरों में हिंसा की खबरें मिली हैं। पूरे बांग्लादेश में हिंसा,सीमा पर भारी तनाव,फिर शरणार्थी सैलाब की आशंका,अल्पसंख्यकों पर हमले तेज

কাদের মোল্লার ফাঁসির পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব বিপন্ন

Bangladesh executes Islamist leader for 1971 war crimes, clashes loom

बांग्लादेश में कट्टरपंथी इस्लामी नेता अब्दुल कादर मुल्ला को फांसी दे दी गई है। देश की सर्वोच्च न्यायालय ने कट्टरपंथी इस्लामी नेता अब्दुल कादर मुल्ला की मौत की सज़ा को बरक़रार रखा था और गुरुवार देर शाम उन्हें फांसी दे दी गई। बांग्लादेश के गृह मंत्रालय ने मुल्ला की फांसी की पुष्टि करते हुए बताया कि उन्हें गुरुवार को रात दस बज ढाका के सेंट्रल जेल में फांसी दी गई। कादर मुल्ला को फांसी दिए जाने को लेकर देश भर में सुरक्षा सुबह से ही कड़ी कर दी गई थी, इसके बावजूद उन्हें फांसी देने के बाद बांग्लादेश के कुछ शहरों में हिंसा की खबरें मिली हैं।

पूरे बांग्लादेश में हिंसा,सीमा पर भारी तनाव,फिर शरणार्थी सैलाब की आशंका,अल्पसंख्यकों पर हमले तेज

পলাশ বিশ্বাস


Shahbag Square প্রজন্ম চত্বর

December 10

Join

"STOP THE MADNESS: WE WANT OUR COUNTRY BACK" - Citizens of Bangladesh

Thursday, December 12 at 2:00pm in UTC+06

Mirpur Road, Manik Mia Ave Intersection

1,989 people are going


Shahbag Square প্রজন্ম চত্বর shared M R Karim Reza's status.

December 10

Citizens of Delhi, India have found AAP,those of Pakistan have PTI as alternative political force!!

How long we have to search for an alternative political force,here in Bangladesh??


কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় রাত ১০টা ১মিনিটে কার্যকর করা হয়েছে।

আমার পাশের বাড়িতে থাকেন প্রয়াত বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম সন্ক্রান্ত উপদেষ্টা মহোমহাপধ্যায় রায়চৌধুরীর দুই ছেলে, দুজনেই ডাক্তার।

চক্ষু চিকিত্সক ড. একে রায়চৌধুরী এবং ড. সুব্রত রায়চৌধুরীর দাদা ও প্রয়াত ।মহোমহাপধ্যায়ের বড় ছেলে বুধবার রাতে ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন৤তাঁর তিন কন্যা ঢাকায় সুপ্রতিষ্ঠিত


একমাত্র পুত্রসন্তান দেবল রায়চৌধুরী কাকাদের সঙ্গে কলকাতাতেই বসবাস করে

দেবল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃত সাহিত্যে এমএ পাশ করার পর সেখান থেকেই রিসার্টো করেছে এবং সোদপুরেই একটি চশমার দোকান চালায়


দেবলের প্রতীক্ষায় তাঁর বাবা মৃতদেহ

দেবল ঢাকায় পৌছানোর পরই মরদেহ বরিশালে পৌতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা

ভিসা সন্ক্রান্ত জটিলতা কাটিয়ে দেবল সন্ধ্যায় ঢাকা উদ্দদেশ্যে বিমানযোগে ঢাকা রওয়ানা হয়েছে বাংলাদেশে অগ্নগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই।


কাদের মোল্লার ফাঁসির পরই বাংলাদেশে সর্বত্র আগুন ।

ঢাকায় গভীর রাতেও মুড়ি মুড়কির মত বোমাবাজির খবর।

সবিতা রায়চৌধূরী পরিবারের সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠ।

রাত বারোটা নাগাদ সে আমায় অফিসে ফোন করে জানায়,ঢাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।

দেবলের সঙ্গেও যোগাযোগ হয়নি।

জোর আশন্কা ঢাকা থেকে মরদেহ দেশের বাড়িতে বরিশালে বোধ হয় আর নেওয়া সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশের আগুনের আঁচ এভাবেই কমবেশি সারা দেশে বাঙ্গালিকে স্পর্শ করেছে।


কলকাতায় জামাতের জোর সমর্থন।

জামাতিরা কলকাতায়লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ করেছে সহবাগের পাল্টা হিসাবে।

কাল তাঁরা রাস্তায় নামে কিনা,নামলে কি হয়,সেটাও পশ্চিম বঙ্গে অশনি সংকেত

সীমান্ত জুড়ে গভীর উদ্বেগ।

এটা যে হতে চলেছে,তা খূবই জানা ছিল।

কিন্তু পশ্চিম বঙ্গ সরকার বা ভারত সরকার এঈ বিপর্যয় এড়ানোর আদৌ কোনো চেষ্টাই করে নি।

সারা বংলাদেশে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা হয়েছে

জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে আগামী রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিটিনে ফাঁসি কার্যকরের পর তাৎক্ষণিকভাবে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াত।


Bangladesh executes Islamist leader for 1971 war crimes, clashes loom!Bangladesh executed Islamist opposition leader Abdul Quader Mollah on Thursday for war crimes he committed in 1971, in a move likely to spark more violent protests less than a month before elections are due to be held.

बांग्लादेश में कट्टरपंथी इस्लामी नेता अब्दुल कादर मुल्ला को फांसी दे दी गई है। देश की सर्वोच्च न्यायालय ने कट्टरपंथी इस्लामी नेता अब्दुल कादर मुल्ला की मौत की सज़ा को बरक़रार रखा था और गुरुवार देर शाम उन्हें फांसी दे दी गई। बांग्लादेश के गृह मंत्रालय ने मुल्ला की फांसी की पुष्टि करते हुए बताया कि उन्हें गुरुवार को रात दस बज ढाका के सेंट्रल जेल में फांसी दी गई। कादर मुल्ला को फांसी दिए जाने को लेकर देश भर में सुरक्षा सुबह से ही कड़ी कर दी गई थी, इसके बावजूद उन्हें फांसी देने के बाद बांग्लादेश के कुछ शहरों में हिंसा की खबरें मिली हैं।


ফাঁসি হয়ে গেল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত কাদের মোল্লার। বৃহস্পতিবার বাংলদেশের স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৫নাগাদ ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসি দেওয়া হয় তাকে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী দেহের ময়নাতদন্ত হয়ে গিয়েছে। নিজের গ্রাম ফরিদপুরেই সমাহিত করা হবে তাঁকে। দেহ নিয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে পরিবার। কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই অশান্তির খবর পাওয়া গিয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে। কক্সবাজার, চট্টগ্রামে হিংসাত্মক আকার নিয়েছে পরিস্থিতি।


ফাঁসি দেওয়ার পূর্ব নির্ধারিত সময় ছিল ১০টা ০১মিনিটে। সেই সময় মেনেই কয়েদি নম্বর ২২৪৬-এর কাছে পৌঁছে যান জল্লাদ শাহজাহান। ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হচ্ছে জেনে ২ মিনিট সময় চেয়ে নিয়েছিলেন কাদের মোল্লা। তারপরই তিনি ধীর পায়ে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে যান বলে জানা গিয়েছে।


দুদিন শুনানির পর আজ রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছিল শীর্ষ আদালত। আদালত চত্বরে সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তা ছিল। ফাঁসির আদেশ পুনরায় বহাল হওয়ায় কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করতে যান তাঁর আত্মীয়রা। আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এই রায়ের পরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন বহু মানুষ। আদালতের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে শাহবাগের জনজাগরণ মঞ্চ।


চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল আবদুল কাদের মোল্লার। কিন্তু আসামীপক্ষের আবেদনে পিছিয়ে যায় সেদিনের মতে স্থগিত হয়ে যায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ। দুদিন শুনানির পর অবশেষে ফাঁসির আদেশ বহাল রাখল আদালত। একে নির্বাচন নিয়ে শাসক দল ও বিরোধী শিবিরের তরজা চলছেই। তারমধ্যে এই রাজাকারের ফাঁসি হয়ে গেলে দেশে অশান্তি আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ফেসবুকে দুই বিচারপতিকে খুনের হুমকি দিয়ে পোস্ট করা হয়েছে।


কাদের মোল্লার ফাঁসির পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব বিপন্ন।ইতিমধ্যে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নোয়াখালী, রবিশাল, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশেরবিভিন্ন জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ‌ওপর অত্যাচারের খতিয়ান পাঠিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সমপ্রদায়ের বঞ্চনা অর্পিত সম্পত্তির সাথে বসবাস শত্রু সম্পত্তি আইন বিধিবদ্ধকরণ ও বাস্তবায়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি আইন নামে এর ধারাবাহিকতা বজায়ের মুলে রয়েছে গভীর এক ঐতিহাসিক চক্রান্ত দর্শন- যার ভিত্তি ধর্ম ভিত্তিক পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা।


উদ্বাস্তু সুনামির জন্য প্রস্তুত থাকুন আবার।


পশ্চিম বঙ্গ সরকার বা ভারত সরকারের মাথাব্যথা নেই।


জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের পরপরই গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, ফেনী, সাতক্ষীরা ও দিনাজপুরে সংঘর্ষ ও সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার গোপীনাথপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমানকে (৪০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নাশকতার আশঙ্কায় ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক, অফিস ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর একদল দুর্বৃত্ত বাড়িতে ঢুকে হত্যা করে আজিজুরকে। কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ দারা খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ ব্যাপারে কলারোয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা আজিজুর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।

কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর সাতক্ষীরা সদরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি এলাকায় ১২টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, একই এলাকার ঝাওডাঙ্গা বাজারে দুটি দোকানে আগুন দেন তাঁরা। এ ছাড়া আশাশুনি উপজেলার বোদাহাটা বাজারে তিনটি দোকান ও বোদাহাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়েও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

ফেনীতে অন্তত ১০টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল ও রামপুর রাস্তার মাথা নামক স্থানে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাতটি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান এবং তিনটি প্রাইভেট কারে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ সময় মহিপাল হাইওয়ে থানার সামনে একটি ও মহাসড়কের অন্যান্য স্থানে ১৪-১৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সিরাজগঞ্জে পুলিশ ও থানা লক্ষ্য করে ককটেল ছোড়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা নাটোর-ঢাকা মহাসড়ক দিয়ে পরিবহন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন।

সিরাজগঞ্জে সদর থানার পেছনে রাতে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানোর পর বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের সয়দাবাদ এলাকায় স্থানীয় থানার পুলিশের একটি পিকআপ লক্ষ্য করে পাঁচটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। মহাসড়কে ১০টির মতো গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

নাটোর সদরের হয়বতপুর এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা নাটোর-ঢাকা মহাসড়ক কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এতে নাটোরের সঙ্গে ঢাকা, পাবনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

বাগেরহাটের ফকিরহাটে রাত পৌনে ১২টার দিকে চিংড়ি মাছভর্তি একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। কর্মীরা খুলনা-মংলা মহাসড়কের খাজুরা, বাগেরহাট-মাওয়া মহাসড়কের শ্যামবাগাত ও কানারপুকুর এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করেন।

সিলেট শহরে জালালাবাদ থানার সামনে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ হলে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ছাড়া, রাজশাহীর বিনোদপুরে শিবির-পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। দিনাজপুর-৬ আসনের সাংসদ আজিজুল হকের বাসায় হামলা ও একটি পেট্রলপাম্পে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ফেনীতে বিদ্যুৎ বিতরণ অফিসে এবং মহিপালে ১৫টি গাড়িতে আগুন এবং ফাজিলপুর স্টেশনে হামলা করেছে শিবির। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও সাতকানিয়ায় সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।

সারা দেশে ট্রেন চলাচল স্থগিত: ঢাকা রেলওয়ের প্রধান রেল নিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল হক রাত ১১টার দিকে জানান, ফাঁসি কার্যকরের পর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ঢাকা অঞ্চলে রেল যোগাযোগ স্থগিত করা হয়েছে। চলাচলকারী ট্রেনগুলো যে স্টেশনে আছে, সেগুলো সেখানেই রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রেল চলাচলও স্বাভাবিক হবে।


একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, এতে শুধু তাঁদের পরিবারের শহীদ সদস্যরাই নন, ১৯৭১ সালের ৩০ লাখ শহীদের আত্মা শান্তি পেল। দেশ ও জাতি দায়মুক্তির পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর প্রথম আলোর কাছে তাঁরা এই আবেগঘন প্রতিক্রিয়া জানান।

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমেদ খান বলেন, 'একাত্তরে কাদের মোল্লা ও তাঁর দোসররা কেরানীগঞ্জে আমার বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। আমার ভাই গোলাম মোস্তফা, ভাগনে ওসমান গনিসহ গ্রামবাসীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। তাঁর শাস্তি দেখার জন্য ৪২ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। আমাদের ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর এত দিনের কষ্ট-যন্ত্রণার কিছুটা হলেও উপশম হয়েছে।'

রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিতীয় সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক বলেন, 'এই জল্লাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বিদেশ থেকে ছুটে এসেছিলাম। প্রথমে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় শুনে তরুণদের সঙ্গে রাজপথে নেমেছিলাম। অনেক ক্লান্তি শেষে আজ মনে হচ্ছে, আমার সব কষ্ট সার্থক।' তিনি বলেন, 'রায় বাস্তবায়ন করতে না দেওয়ার জন্য জামায়াতের সব অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম, তা আজ এই সাজা কার্যকরের মাধ্যমে সার্থক হলো।'

রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী কবি কাজী রোজী বলেন, 'আমার বন্ধু কবি মেহেরুননিসাকে কাদের মোল্লা ও তাঁর বাহিনী নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আমি এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। আজ আমার অপেক্ষার পালা শেষ। এই রায় জনতার রায়। এখন মরেও শান্তি পাব।'

মুক্তিযুদ্ধকালে মিরপুরের আলুব্দী (আলোকদী) গ্রামে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন রাষ্ট্রপক্ষের নবম সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লা। ২০০৮ সালে তিনি পল্লবী থানায় কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় আমির হোসেন বলেন, 'অনেক আনন্দ হচ্ছে। স্বাধীন দেশে কাদের মোল্লার মতো খুনিদের ঠাঁই থাকতে পারে না। কেউ অপরাধী হলে ইতিহাস যে তাকে ক্ষমা করে না, তা এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হলো।' তিনি বলেন, 'আলুব্দী গ্রামের হত্যাকাণ্ডে আমার মামা, খালা, খালু, ফুফাতো ভাইসহ ২৩ জন স্বজন প্রাণ হারান। আমার স্বজনসহ ওই হত্যাকাণ্ডে যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের আত্মা আজ শান্তি পাবে।'

ঘাটারচর হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা আবদুল মজিদ পালোয়ান বলেন, 'যে কাদের মোল্লা শত শত নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, সেই কাদের মোল্লার ফাঁসি হলো এ দেশেই। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, পাপ কখনো পাপীকে ছাড়ে না।' তিনি বলেন, 'সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য যদি আমাকে হত্যাও করে কেউ, তাতে আমার কোনো আফসোস থাকবে না। এক বুক তৃপ্তি নিয়েই আমি মরব।'

শহীদ সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবের নাতি খন্দকার অমিয় হাসান বলেন, 'দাদাকে হত্যার পেছনে কাদের মোল্লা জড়িত ছিলেন, তা আগেই প্রমাণিত হয়েছে। কাদের মোল্লার ফাঁসির জন্য অনেক অপেক্ষা করেছি। অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। দাদা দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। আজ তাঁর আত্মা শান্তি পাবে। আমরা কলঙ্কমুক্তির পথে এগিয়ে গেলাম।'



লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষ গুলিতে ৪ জনসহ নিহত ৫

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: ০৩:৪৪, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩ | প্রিন্ট সংস্করণ

     

লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে গতকাল বৃহস্পতিবার র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সঙ্গে ১৮-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হন অর্ধশত। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ কমপক্ষে ৩০ জন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির মাহবুবুর রহমান, যুবদলের ইকবাল মাহমুদ জুয়েল ও মো. সুমন, ছাত্রশিবিরের শিহাব হোসেন। জুয়েল জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি।

বিএনপির জেলা যুগ্ম সম্পাদক হারুনুর রশিদ ব্যাপারীর দাবি, চারজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। র‌্যাবের সদস্যরা জুয়েলের লাশ নিয়ে গেছেন। এ ছাড়া ইসলাম মার্কেট এলাকায় র‌্যাবের সহযোগী সন্দেহে গণপিটুনিতে অজ্ঞাতপরিচয়ের একজন নিহত হন। হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে ১৮ দলীয় জোট কাল শনিবার লক্ষ্মীপুরে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে।

শহরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবউদ্দিন সাবুর উত্তর তেমুহনীর বাসভবনে র‌্যাব-১১ ভোর ছয়টার দিকে অভিযান চালালে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। শহরের বিভিন্ন অংশে বিক্ষিপ্তভাবে এ সংঘর্ষ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এতে পুরো শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা আড়াইটার দিকে র‌্যাবের একটি হেলিকপ্টার পুলিশ লাইনে অবতরণ করে এবং তিনটা ৮ মিনিটে ওই এলাকা ত্যাগ করে। এর আগে ওই এলাকার লক্ষ্মীপুর-চৌমুহনী মহাসড়ক অংশে জনতা র‌্যাবের চারটি গাড়ি ঘিরে ফেলেন। সন্ধ্যার দিকে র‌্যাবের গাড়িগুলো পুলিশ লাইন এলাকা ছেড়ে মান্দারী বাজারের দিকে এলে তারা আবারও জনতার অবরোধের মুখে পড়ে। এ সময় র‌্যাব ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকা ত্যাগ করে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি।

সাহাবউদ্দিনের ভাই আবুল কালাম আজাদের অভিযোগ, তাঁদের বাসভবনে র‌্যাবের অভিযানে স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসীও ছিল। মাইক্রোবাসে করে আসা এসব সন্ত্রাসী বাসভবনে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে এবং তিনটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় সাহাবউদ্দিন, আজিজুল করিম ও বাড়ির দুজন তত্ত্বাবধায়ককে গুলি ও মারধর করে সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সাহাবউদ্দিন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। বাকিরা থানা হেফাজতে আছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন কোনো কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

র‌্যাবের অভিযানে অংশ নেন ১৫-২০ জন সদস্য। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, র‌্যাব-১১-এর একজন কর্মকর্তা অভিযানের নেতৃত্ব দেন। বাসভবনে বসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করা হচ্ছে—এমন খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথ অভিযান চালায়। এতে পুলিশ, আনসার ও বিজিবির সদস্যরাও ছিলেন। এর বাইরে অন্য কেউ ছিল না। লাশ নিয়ে যাওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয় বলে হাবিবুর রহমান জানান। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছিল।

গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লক্ষ্মীপুরে অবরোধ-সমর্থনকারী বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দেশি অস্ত্রসহ আক্রমণ চালান। র‌্যাব সরকারি সম্পদ ও জনগণের জানমাল রক্ষার্থে পাল্টা ব্যবস্থা নিলে সংঘর্ষ বাধে। এই সংঘর্ষে চারজন নিহত হন।

স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, র‌্যাবের অভিযানের খবর পেয়ে জেলা যুবদলের নেতা ইকবাল মাহমুদ জুয়েলের নেতৃত্বে যুবদলের ১৫-১৬ জন কর্মী সাহাবউদ্দিনের বাসার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। এ সময় শহরের চকবাজার এলাকায় জুয়েল এবং যুবদলের কর্মী নেছার র‌্যাবের হাতে গুলিবিদ্ধ হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুয়েলের গুলিবিদ্ধ দেহ র‌্যাবের গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। এরপর র‌্যাবের সদস্যরা লক্ষ্মীপুর থেকে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করলে শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে পুলিশ লাইন পর্যন্ত দিনভর থেমে থেমে ১৮-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শহরের আলিয়া মাদ্রাসা, ঝুমুর সিনেমা, ইসলাম মার্কেট, পুলিশ লাইন, এলজিইডির কার্যালয়সংলগ্ন এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীরা লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়কে গাছ ফেলে রাস্তায় অবরোধ করেন। সংঘর্ষে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এলাকাবাসীও যুক্ত হন।

ইসলাম মার্কেট এলাকায় বন বিভাগের কার্যালয়ের সামনে র‌্যাবের সহযোগী সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক যুবক গণপিটুনিতে নিহত হন। বিক্ষুব্ধ জনতা বন বিভাগের কার্যালয়ও ভাঙচুর করেন।

সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে এনএসআইয়ের সদস্য আনোয়ার হোসেন; মানিক হোসেন, শিমুল, রাকিব হোসেন, কামাল হোসেন, ওসমান গনি, টিপু, তারেক, বেলাল হোসেন, মাহবুব হোসেন, শিহাব হোসেনসহ ১৮ জনকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ও বাকিদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।



ঢাকাঃ টানাপোড়েনের পর্ব শেষ হয়েছিল বৃহস্পতিবার সকালেই। আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট৷ কয়েক ঘণ্টা বাদে একাত্তরের মানবতা-বিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত জামাত-ই-ইসলামির শীর্ষনেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই ঢাকার কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১ মিনিটে ফাঁসি হয় তাঁর। চলতি রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই কাদেরের ফাঁসিকে কেন্দ্র করে হিংসা, মারদাঙ্গায় ফের বাংলাদেশ রক্তাক্ত হতে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ তাদের নেতার ফাঁসির বদলা নিতে হিংসার পথই বেছে নিতে পারে জামাত। তাদের এযাবতকালের আচরণে সেই ইঙ্গিতই প্রবল। হিংসার আগাম আঁচ করে নিরাপত্তাবাহিনীও যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে।

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার মাঝরাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে কাদেরের ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু নাটকীয়ভাবে তাঁর ফাঁসির আদেশে সাময়িক স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ আজ সেই স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডই বহাল রাখে সেদেশের সর্বোচ্চ আদালত৷  

মীরপুরের কসাই। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ পর্বে চরম নৃশংস আচরণের জন্য এহেন কুখ্যাতির তকমাই দেওয়া হয় তাঁকে। প্রতিবেশী দেশটির সেই ঐতিহাসিক অধ্যায়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে মীরপুরের গণহত্যায় কুখ্যাত আল বদর বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।

কাদেরই প্রথম রাজনৈতিক নেতা যাঁকে স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণের দায়ে ফাঁসিতে ঝোলানো হল।

জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কাদেরের সামনে সংবিধানের বিধি বলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোর রাস্তা খোলা ছিল। তিনি তা চান কিনা, সেটা জানতেও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি আবেদন জানানোর সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।

http://www.abpananda.newsbullet.in/international/61-more/44681-2013-12-12-07-20-14

মনে রাখা দরকার

Shahbag Square প্রজন্ম চত্বর shared M R Karim Reza's photo.

December 4

How many citizens,do you want to roast?

Before you call that a democracy!

How much you want to demolish?

Before you whistle for that democracy!!

Shahbag Square প্রজন্ম চত্বর shared M R Karim Reza's photo.

November 28

At least 18 people have been burnt, as miscreants torch a bus at Shahbagh at around 6:30pm on Thursday.

So far, 18 people have reportedly died during the Opposition-sponsored blockade spread over the past three days.

Hundreds of vehicles were set on fire and damaged.

Like ·  · Share


  1. বাংলাদেশ অগ্নিগর্ভ৷পরিস্থিতি যে ভাবে খারাপ হচ্ছে ... - Show all posts

  2. troubledgalaxydetroyeddreams.blogspot.com/2013/.../blog-post_5476.ht...

  3. ৬ এপ্রিল, ২০১৩ - বাংলাদেশ অগ্নিগর্ভ৷পরিস্থিতি যে ভাবে খারাপ হচ্ছে তা বাংলা ও ভারতবর্ষের জন্য রীতিমত উদ্বেগজনক৷ইতিহাস বলে, সীমান্তের ওপারে সংখ্যালঘু উত্পীড়ন নিয়ে ভারত .... ১ মে, ২০০৮ – তসলিমা নাসরিনের লজ্জা উপন্যাসটি পড়ে সত্যিই খারাপ লাগছে সংখ্যালঘুদের জন্য , আসলে এটি শুধু বাংলাদেশের সমষ্যা নয় ,পুরোপৃথিবী ব্যাপিই এ ...

  4. ভালুকায় সংখ্যালঘুদের ভূমি দখলের অভিযোগ :: দৈনিক ইত্তেফাক

  5. www.ittefaq.com.bd/index.php?ref...

  6. ২৫ জুলাই, ২০১৩ - বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ভালুকা শাখার সভাপতি মলয় নন্দী মানিক জানান, ভালুকা উপজেলার সংখ্যালঘু পরিবারের উপর ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের অত্যাচার,উত্পীড়ন অব্যাহত রয়েছে। এ সব অভিযোগের ক্ষেত্রে পৃথকভাবে ভূমি জবর দখলকারীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, ভূমি জবর দখলের ঘটনা অস্বীকার করে তারা বলেন, ক্রয়সূত্রে ...

  7. পালাবি কোথায়, সাহস থাকলে কাছে আয় - Shahbag Conspiracy | Facebook

  8. https://bn-in.facebook.com/ShahbagConspiracy

  9. আমি বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক হয়ে বলছি, যুদ্ধ অপরাধী হউক মানবতা বিরোধী হউক এই সমস্ত ঘৃণীত ব্যক্তিদের বিচার এই বাংলার মাটিতে হওয়া দরকার। ... গরিব পরিবারের সেই দরজি ভাই বিশ্ব জিত্‍'কে কোন দলের সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে এবং সংখ্যালঘু বৌদ্ধ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও তাদের উপাসনার ধর্মীয় মন্দিরগুলো কোন দলের সন্ত্রাসীর ..... বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উত্পীড়ন ও নির্মূল অভিযান ছেড়ে সমঝোতার পথে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, চক্রান্ত ও .



গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এই রায়ের প্রতিবাদে জামাত-শিবির সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা শুরু করে। পুলিশের ওপর আক্রমণ, রাস্তা অবরোধ, যানবাহন, দোকানপাট ভাংচুর ছাড়াও তাদের আক্রমণের লক্ষ্য ছিল সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা হিন্দুদের ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। তাদের হামলায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে মারা গেছেন এক বৃদ্ধ

চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ-এর সভাপতি দেবাশীষ পালিত জানান, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাজশাহী, সিলেট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, বাগেরহাট, লক্ষীপুর, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, ভোলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ ও যশোরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে সারাদেশে প্রায় পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি তিন শতাধিক মঠ-মন্দির এবং তিন শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা লুট এবং ভাংচুর চালানো হয়েছে।

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জামাত-শিবিরের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হিন্দুপাড়া। খোলা আকাশের নিচে এখন আতংক নিয়ে বসবাস করছেন হিন্দু সম্প্রদায়। ছবি মেহদী হাসান খান।

জামাত শিবিরের আক্রমণের কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বর্তমানে চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ বাংলাদেশে নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কিছুদিন আগেও কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায় হামলার শিকার হয়েছিলেন। এবার যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর রায় ঘোষণার পর আক্রমণের শিকার হলেন হিন্দুরা, যাদের সাথে বিচার কার্যের কোনো সম্পকই নেই। আক্রমণের নেপথ্য কারণ সম্পর্কে ব্লগারআরিফ জেবতিক লিখেছেন:

রাজাকারের বিচারের সঙ্গে কিন্তু হিন্দুদের কোনো ধর্মীয় সম্পর্ক নেই, অথচ পরিকল্পনা করে হিন্দুদেরকে আক্রমন করা হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে উস্কে দেয়া। যখনই শোনা গেল যে ইন্ডিয়ার রাষ্ট্রপতি এদেশ সফরে নিশ্চিতই আসছেন, তখন হিন্দুদের উপর এই আক্রমন শুরু হলো। [...]

এখন যদি একই সঙ্গে বাংলাদেশের হিন্দুদেরকে বিপন্ন করে তোলা যায় এবং সেটি ইন্ডিয়াতে সরবরাহ করা যায় তাহলে ইন্ডিয়ার জামায়াত-শিবির তথা শিবসেনা-বিজেপি গোষ্ঠি সেখানে হইচই করার সুযোগ পায়। সেই হইচইয়ে বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে একটি অস্থিরতা তৈরির সুযোগ তৈরি হয়।

এদিকে মুক্তমনার ব্লগার গীতা দাস তার এক পরিচিত আত্মীয়ের উদ্বৃতি দিয়ে লিখেছেন যে, সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়ার কারণে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি ফেসবুকের আমি হিন্দু পেজ থেকে নেয়া।

হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় দেশের নানা স্থানে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। অনলাইনে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে। অলি সৈয়দ মাহবুবফেসবুকে কালের কণ্ঠের সংখ্যালঘু নির্যাতনের খবর শেয়ার করে বলেন:

ভালোই লাগে এদের রক্তের স্রোতে আমি-আমরা বেঁচে আছি। এই সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইদের, এই পুলিশ ভাইদের খুনের রক্তে আমরা নিরাপদ আছি। এরা মরে গেছে বলেই আমাদের মরতে হয় নি। ঢাকা সুরক্ষিত আছে। আরো সুরক্ষিত শাহবাগে আমি যাই-আসি। বাসায় খাই দাই। ভালোই আছি। এদিকে পুড়ে যাচ্ছে ওদের গা-জীবন-স্বপ্ন-স্বাধীনতা! দিগন্ত জুড়ে আমার কেবল অক্ষম  আক্রোশ!

জামাত-শিবিরের হিংস্রতা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার আহবান জানিয়ে সাবরিনা টুইটারে টুইট করেন:

জামাত-শিবির হায়েনার হাত থেকে #দেশ বাঁচান। ওরা #হিন্দু মন্দির ধ্বংস করছে। সংখ্যালঘু #হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করছে। #শাহবাগ।

(লিন্ক)

শেহাব টুইট করেন:

আজকে জামাতের মেনুতে কয়টি হিন্দু পরিবার আছে? আজকের শেফ স্পেশাল কী? ধর্ষণ না অগ্নিসংযোগ? #শাহবাগ #সেভ বাংলাদেশ

বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের পাশাপাশি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-সহ বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায় বাস করেন। সে কথা স্মরণ করে লেনিন টু্ইট করেন:

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই আমাদের ভাই। চলুন জামাত-শিবিরের হাত থেকে তাদের রক্ষা করি।#shahbaghttp://www.thedailystar.net/newDesign/latest_news.php?nid=45104 …

প্রতিবাদী পোস্টার- ধর্ম যার যার, দেশ সবার।

উনিশ শ' একাত্তর সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে যেসব রাজাকার, আলবদর অংশ নিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে। জামাত-শিবির শুরু থেকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধীতা করে দেশজুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আর এর অংশ হিসেবেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করেছে। গত ১০ মার্চ, হাইকোর্ট চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় সংখ্যালঘু সম্পদ্রায়ের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের সাত দিনের মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে। এর আগে হাইকোর্ট নোয়াখালির সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়।

লিখেছেনপান্থ রহমান রেজা (Pantha)


কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ০৩:৫৪, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩ | প্রিন্ট সংস্করণ

     ১২ ডিসেম্বর ২০১৩। রাত ১০টা এক মিনিট। বাংলাদেশের ৪৩তম বিজয় দিবসের প্রাক্কালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রথম রায় কার্যকর হলো।

মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা ও ধর্ষণের দায়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার। নিজের কর্মের জন্য একাত্তরে তিনি 'কসাই কাদের' নামে পরিচিতি পান।

সরকারি ও কারাগার সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টা এক মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মিত স্থায়ী ফাঁসির মঞ্চে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। দণ্ড কার্যকর করতে সহায়তাকারী জল্লাদের প্রধান ছিলেন শাহজাহান ভুঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কারা মহাপরিদর্শক মাঈন উদ্দিন খন্দকার, উপ-কারা মহাপরিদর্শক গোলাম হায়দার, ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শেখ ইউসুফ হারুন, জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক ফরমান আলী, কারাধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, ঢাকার সিভিল সার্জন আবদুল মালেক, কারা চিকিৎসক রথীন্দ্রনাথ শম্ভু প্রমুখ।

শেখ ইউসুফ হারুন প্রথম আলোকে বলেন, রাত ১০টা এক মিনিটে ফাঁসি কার্যকর করে তাঁকে ২০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখা হয়। চারজন জল্লাদ তাঁর (কাদের মোল্লা) ফাঁসি কার্যকর করেন। রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে পুলিশি পাহারায় লাশ ফরিদপুরে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

সন্ধ্যায় কারাগারে কাদের মোল্লার সঙ্গে শেষ দেখা করার পর তাঁর বড় ছেলে হাসান জামিল বলেন, বাবার ইচ্ছা, ফরিদপুরে (সদরপুর উপজেলার আমিরাবাদ) গ্রামের বাড়িতে যেন তাঁকে কবর দেওয়া হয়।

কারাগার সূত্র জানিয়েছে, ফাঁসি দেওয়ার প্রায় ২০ মিনিট পর ১০টা ২১ মিনিটে তাঁকে নামানো হয়। এরপর কিছু প্রক্রিয়া শেষে কারাগারের দুজন চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে রাত নয়টার দিকে কাদের মোল্লাকে গোসল করানো হয়। সাড়ে নয়টায় তিনি নামাজ আদায় করেন। ১৫ মিনিট পর তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। নয়টা ৫৫ মিনিটে কারা জামে মসজিদের ইমাম মনির হোসেন তাঁকে তওবা পড়ান। এরপর ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয়। প্রথা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক তাঁর হাতে রাখা একটি লাল রুমাল মাটিতে ফেললে প্রধান জল্লাদ শাহজাহান ভুঁইয়া ফাঁসির মঞ্চের লিভার (লোহার তৈরি বিশেষ হাতল) টেনে দেন। এতে পায়ের তলা থেকে কাঠ সরে ফাঁসি কার্যকর হয়।

কারাগারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে বিকেল সোয়া চারটায় দিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছায়। এর পরপরই দুজন ম্যাজিস্ট্রেট কাদের মোল্লার কাছে যান। কাদের মোল্লা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না জানতে চাইলে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটদের জানান, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না।

রায় কার্যকর উপলক্ষে সন্ধ্যা থেকেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য নিরাপত্তাব্যূহ গড়ে তোলেন। সঙ্গে ছিল পুলিশের সাঁজোয়া যান। কারাগারের বাইরে ফাঁসির খবর জানতে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের শতাধিক সাংবাদিক। রাত পৌনে ১২টার দিকে কারাগারের সামনে স্থানীয় লোকজন সাজা কার্যকরকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেন। রাত ১১টার পর কাদের মোল্লার মরদেহবাহী দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১৪টি গাড়ির বহর ফরিদপুরের দিকে রওনা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর প্রায় পৌনে চার বছরের আইনি লড়াই শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে একাত্তরের নির্মমতার বিচারহীনতা থেকে মুক্তি পেল জাতি। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য কারও সর্বোচ্চ সাজা কার্যকর হলো।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় (১০ ডিসেম্বর) কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে সরকারের সংবাদ সম্মেলন এবং শেষ মুহূর্তে ফাঁসির কার্যক্রমে নাটকীয় স্থগিতাদেশের পর গতকাল রাতে আর কোনো আগাম ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে স্ত্রী সানোয়ার জাহান, ছেলে হাসান জামিলসহ পরিবারের ১০ সদস্য কারাগারে গিয়ে কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করেন।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) দুটি আবেদন গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় খারিজ করে দেন।

কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে এবার বিশ্বের পরাশক্তি রাষ্ট্রগুলোর পাশাপাশি উচ্চারিত হবে বাংলাদেশের নাম, যারা যুদ্ধাপরাধের বিচারের মতো দুরূহ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ফ্রান্সের মতো রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জার্মান নাৎসি বাহিনীর বিচার করে ন্যুরেমবার্গের ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি ট্রাইব্যুনালে (আইএমটি)। ন্যুরেমবার্গ বিচারে অভিযুক্ত ২২ জনের মধ্যে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হয় ১৯৪৬ সালের ১ অক্টোবর। মাত্র ১৫ দিন পর ১৬ অক্টোবর ১০ যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বাকি দুই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তের একজন ছিলেন পলাতক, একজন ফাঁসি এড়াতে আগের দিন রাতে আত্মহত্যা করেন। ন্যুরেমবার্গের পাশাপাশি টোকিও ট্রাইব্যুনালে বিচার হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অক্ষশক্তি জাপানি নেতাদের, যেখানে ২৮ জনের মধ্যে সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৪৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর তাঁদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

বাংলাদেশে বিচারের শুরু থেকেই জামায়াতে ইসলামীসহ একটি পক্ষ বিচার-প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে। বিশ্বের যেসব দেশে এখন আর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় না, সেসব দেশও সর্বোচ্চ সাজার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানিয়ে আসছিল।

ন্যুরেমবার্গ ট্রায়াল থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্যরত জাতিসংঘের সাহায্যে গঠিত হাইব্রিড ট্রাইব্যুনাল বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিচার নিয়েও সমালোচনা আছে। ন্যুরেমবার্গ ও টোকিও ট্রায়ালে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা আপিলেরও সুযোগ পাননি, রায় ঘোষণার পরই দণ্ড কার্যকর হয়েছে। প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগও তাঁদের ছিল না।

কারা কর্তৃপক্ষের জরুরি চিঠি পেয়ে গত মঙ্গলবার রাতেও কাদের মোল্লার সঙ্গে তাঁর পরিবারের ২৩ সদস্য দেখা করেছিলেন। ওই দিন সকালে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন প্রধান আইনজীবী আবদুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন আইনজীবী।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের সঙ্গে এ দেশের তরুণ প্রজন্মের নাম জড়িয়ে থাকবে চিরদিন। একাত্তরে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে সাড়া জাগিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় আসার এক বছর পর ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে সরকার বিচার-প্রক্রিয়া শুরু করে। কিন্তু চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল-২ কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলে রায়ে অসন্তুষ্ট তরুণ প্রজন্ম রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সারা দেশে তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ।

গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের ফলে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষকে আপিলের সমান সুযোগ দিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ সংশোধন করে জাতীয় সংসদ। দুই পক্ষই শরণাপন্ন হয় সর্বোচ্চ আদালতের। ছয় মাসের আইনি লড়াই শেষে ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায়ে কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ দেন। এরও প্রায় তিন মাস পর ৫ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের ৭৯০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ৮ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিনই তা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এর পরই সরকার সাজা কার্যকরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

গতকাল রাতে কারাগারে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে শাহবাগে তিন দিন থেকে অবস্থান নেওয়া গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা স্বস্তি প্রকাশ করেন। দণ্ড কার্যকরের বিষয়টি মাইকে ঘোষণার পর আলোর মিছিল করেন তাঁরা।

নিজস্ব আইনে ও দেশীয় আদালতে আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার করায় বাংলাদেশ ইতিহাস হয়ে থাকবে। কম্বোডিয়াকে এ বিচারের জন্য ৩৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে, কিন্তু তাদের জাতিসংঘের সাহায্য নিতে হয়েছে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত সময়ে কম্বোডিয়ায় ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ১৯৯৭ সালে হাইব্রিড ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ওই ট্রাইব্যুনাল ২০১০ সালে প্রথম রায় দেন, ২০১২ সালে কম্বোডিয়ার সুপ্রিম কোর্ট তা চূড়ান্ত করেন।

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘটে যাওয়া অপরাধের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয় ৩৯ বছর পর। অন্য কোনো রাষ্ট্র বা জাতিসংঘের সাহায্য ছাড়াই মাত্র পৌনে চার বছরের মাথায় একটি মামলার বিচার শেষ করে দণ্ড কার্যকর হয়েছে—বিশ্বে এমন দৃষ্টান্ত খুব একটা নেই।

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার

হযরত আলী লস্করসহ পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হত্যা ও মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে আপিল বিভাগের ফাঁসির আদেশ

বিচার শুরু

২০১২ সালের ২৮ মে বিচার শুরু। গত ৫ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল-২

ফাঁসির দাবি

কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তরুণদের ডাকে শাহবাগে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ

আইন সংশোধন

২০১৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের সমান সুযোগ রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধন

রায় পুনর্বিবেচনা

১০ ডিসেম্বর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন। ১২ ডিসেম্বর খারিজ

ফাঁসি কার্যকর


১২.১২.২০১৩


রাত ১০.০১ মি.

http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/97780/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0_%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%B8%E0%A6%BF_%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%95%E0%A6%B0


বাংলাদেশের ইতিহাসে যুদ্ধাপরাধের দায়ে প্রথম ফাঁসি

যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়৷

  • অবশেষে ফাঁসি

  • ৪৮ ঘণ্টা ধরে নানা নাটকীয় পরিস্থিতির পর ১২ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করে বাংলাদেশ সরকার৷ এর আগে মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ মুহূর্তে বিচারকের নির্দেশে তা স্থগিত হয়৷ মোল্লাকে এভাবে ফাঁসি না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, জার্মানি সহ অন্যান্যরা৷

12345678910

বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো৷

মঙ্গলবার রাতে এই ফাঁসি কার্যকর করার কথা ছিল৷ কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজের স্থগিতাদেশের কারণে তা কার্যকর হলো বৃহস্পতিবার রাতে৷ সেদিনই ফাঁসির পথে সব আইনি বাধা দূর হয়৷ ফাঁসি কার্যকর করা হয় দড়িতে ঝুলিয়ে৷ আদালতের রায়েও তাই বলা হয়েছিল৷ বলা হয়েছিল জঘন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডই একমাত্র প্রাপ্য শাস্তি৷ মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রাখতে হবে৷

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারা মহাপরিদর্শক, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা সিভিল সার্জন, সিনিয়র জেল সুপারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এই ফাঁসি কার্যকর করা হয়৷ সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলি জানান মঙ্গলবার রাত ১০টায় ফাঁসির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছিল৷ বৃহস্পতিবার ঠিক সেই সময় থেকেই এক মিনিট পর ফাঁসি কার্যকর করা হয়৷ তিনি জানান ভোরে সূর্য ওঠার আগেই কাদের মোল্লার মরদেহতাঁর গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের সদরপুরে পৌঁছে দেয়া হবে৷ সেখানেই তার লাশ দাফন হবে৷ জানা গেছে, রাত ১০টা ১ মিনিট থেকে পরবর্তী ১১ মিনিটের মধ্যে ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের সব প্রক্রিয়া শেষ হয়৷

ফেব্রুয়ারি মাসে ''বিজয়চিহ্ন'' দেখানো কাদের মোল্লার ফাঁসি হলো ডিসেম্বরে

ফাঁসির প্রস্তুতি হিসেবে দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়৷ ঢাকাসহ বড় বড় শহরে র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় বিজিবি৷ আর সন্ধ্যার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ চারপাশ নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়৷

ফাঁসির আগে সন্ধ্যায় কাদের মোল্লার স্ত্রী সন্তানসহ আত্মীয়-স্বজনরা কাদের মোল্লার সঙ্গে কারাগারে শেষ দেখা করেন৷ কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল তখন বলেন, ''ইসলামী আন্দোলন করার কারণেই আমার পিতাকে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়েছে৷'' কাদের মোল্লার আইনজীবীরা বৃহস্পতিবার কারাগারে তার সাক্ষাৎ চেয়েও পাননি৷ তার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেন কাদের মোল্লা ন্যায়বিচার পাননি৷

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, কাদের মোল্লার নতুন করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ ছিল না৷ কারণ তিনি আগেই প্রাণভিক্ষা চাইতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন৷ আর ট্রাইব্যুনাল আইনে জেল কোড প্রযোজ্য নয়৷ রিভিউ আবেদন বাতিল হওয়ায় কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়ার সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়৷

এদিকে দণ্ড কার্যকর করার আগে থেকেই সারাদেশে জামায়াত-শিবির সহিংসতা শুরু করে বলে খবর পাওয়া যায়৷ ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবিরের চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে বুধবার গভীর রাতে৷ আর জামায়াতে ইসলামী এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার প্রতি ফোঁটা রক্তের হিসাব নেয়ার হুংকার দিয়েছে৷ কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে জামায়াত রবিবার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে৷

এদিকে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে শত শত মানুষ উল্লাস প্রকাশ করেছেন৷ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার ডয়চে ভেলেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জাতি আজ কলঙ্ক মুক্ত হলো৷ ৪২ বছর পরে হলেও একজন যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকর হলো৷ তিনি আশা করেন সব যুদ্ধাপরাধীর দণ্ডই কার্যকর হবে৷

বৃহস্পতিবার বিকেলে শেষ দেখা করেন মোল্লার পরিবারের সদস্যরা

এর আগে জার্মানির মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার মার্কুস ল্যোনিং বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না করতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন জার্মানি নীতিগতভাবে মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না৷ তাই ফাঁসির পরিবর্তে কারাদণ্ড দেবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি৷

২০১০ সালের ১৩ জুলাই কাদের মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়৷ একই বছরের ১৪ অক্টোবর তাকে যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়৷ গত বছরের ২৮ মে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়৷ আর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ৩ জুলাই থেকে৷ চলতি বছরের ৫ই ফেব্রুয়ারি তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল-২৷ কিন্তু এই রায় মেনে নিতে পারেনি দেশের তরুণ প্রজন্মসহ সাধারণ মানুষ৷ ৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু হয় প্রতিবাদ৷ গড়ে ওঠে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ৷ তারা কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন৷ সরকার শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের মুখে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের বিধান করে৷ এরপর হাইকোর্টের আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষ কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে এবং কাদের মোল্লা খালাস চেয়ে আপিল করে৷ ১৭ সেপ্টেম্বর আপিলের রায়ে কাদের মোল্লাকে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের মতামতের ভিত্তিতে৷ ৫ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ৭ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল-২৷ ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ৷ তবে তার আগেই রাত ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আসামি পক্ষের আবেদনে ফাঁসি কার্যকর স্থগিত করেন৷ পরদিন ১১ ডিসেম্বর তারা রিভিউ আবেদন করেন৷ ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ এই আবেদন খারিজ করে দিলে কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়ার পথে সব বাধা দূর হয়৷

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কাদের মোল্লা ঢাকা, কেরানীগঞ্জ এবং ফরিদপুরে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটতরাজের মতো জঘন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে আদালতে প্রমাণ হয়েছে৷ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়৷ কাদের মোল্লাই হলেন প্রথম, যার দণ্ড কার্যকর হলো৷

DW.DE


  1. Bangladesh News Update
  2. 3 hours ago

  3. ফাঁসির মঞ্চেও স্বাভাবিক ছিলেন কাদের মোল্লা

  4. ফাঁসির মঞ্চেও স্বাভাবিক ছিলেন জামায়াত নেতা কাদের মোল্লা। মঞ্চে উঠেও তিনি একটুও বিচলিত হননি। অন্য সময়ের মত সেখানেও দৃঢ় আত্মবিশ্বাসে অটল ছিলেন তিনি। ফাঁসি কার্যকরের পর তাকে ২০ মিনিট ধরে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

  5. ফাঁসি কার্যকরের পর সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী কারা ফটকে কিছু তথ্য জানিয়েছিলেন। তবে এরপর ডেপুটি জেলার নুর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, কারাবিধিতে প্রেস ব্রিফিংয়ের কোনো সুযোগ নেই। যে কারণে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাতে পারছি না।

  6. http://www.sheershanews.com/2013/12/13/17018

  7. 2Like ·  · Share

  8. Recent Posts by Others on Bangladesh News UpdateSee All

    • Islam Sumon
    • Islamsumon
    • 1 · 4 hours ago

    • Tariful Islam
    • Kader mollar rai karjokor korta bada nai janalen adalot
    • 15 hours ago

    • Mohammad Nazmul Islam
    • আবারো জেগে উঠতে সুরু করেছে সাহাবাগ তাই মুনাফিকদের এই বাংলাদেশ থেকে দুর করতে হবে তাই আমাদের বেবস্থা নিতে হবে মুসলিম ভাইএরা তোমরা সবাই রেডি হও
    • December 11 at 12:25pm

    • Joshit Biswas
    • doctor murad hatya kando nia kichu likhechen paper e?
    • December 10 at 8:25am

    • Monir Hossain CapeTown
    • Monir Hossain CapeTown
    • 1 · December 10 at 6:07am

  9. More Posts

  10. Bangladesh News Update
  11. 4 hours ago

  12. ব্রেকিং::::

  13. সারাদেশে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা

  14. Like ·  · Share

  15. Bangladesh News Update
  16. 4 hours ago

  17. জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

  18. 4Like ·  · Share

  19. Bangladesh News Update
  20. 5 hours ago

  21. রোববার জামায়াতের হরতাল

  22. জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে আগামী রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিটিনে ফাঁসি কার্যকরের পর তাৎক্ষণিকভাবে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াত।

  23. শীর্ষ নিউজ

  24. 4Like ·  · Share

  25. Bangladesh News Update
  26. 5 hours ago

  27. কর্মীরা যেন আমার রক্তকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজে লাগায় : পরিবারের সদস্যদের কাদের মোল্লা

  28. 'আমার শাহাদাতের পর যেন ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা চরম ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে আমার রক্তকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজে লাগায়। কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে যেন জনশক্তি নিয়োজিত না হয়। যারা আমার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছে আমি তাদের শাহাদাত কবুলিয়াতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করি। আল্লাহ তাদেরকে সর্বোত্তম পুরস্কার দান করুন।'

  29. বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিবারের সদস্যরা আব্দুল কাদের মোল্লার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি কথাগুলো বলেন।

  30. তিনি আরো বলেন, 'আমি আগেও বলেছি, সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এ সরকার আমাকে হত্যা করতে চাচ্ছে। আমি মজলুম। আমার অপরাধ আমি ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি। শুধু এ কারণেই এ সরকার আমাকে হত্যা করছে। আমি আল্লাহ, রাসূল ও কোরআন ও সুন্নাহতে নিশ্বাসী। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমার এ মৃত্যু হবে শহীদি মৃত্যু। আর শহীদের স্থান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়। আল্লাহ আমাকে শাহাদাতের মৃত্যু দিলে এটা হবে আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ পাওয়া। এর জন্য আমি গর্বিত।

  31. 'আমি বিশ্বাস করি, জীবন-মৃত্যুর মালিক আল্লাহ। আমাকে ১০ তারিখ রাতেই সরকার হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ্ তায়ালা সেদিন আমার মৃত্যু নির্ধারণ করেননি। যেদিন আল্লাহর ফায়সালা হবে সেদিনই আমার মৃত্যু হবে। প্রত্যেক প্রাণীরই মৃত্যু আছে। আমাকেও মরতে হবে। শহীদি মৃত্যুর চাইতে বড় সৌভাগ্য আর কিছু নয়। আজীবন আমি সে মৃত্যু কামনা করেছি, আজও করছি।

  32. 'আমার অনুরোধ, আমার শাহাদাতের পর ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা যেন ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দেয়। তারা যেন কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক বা প্রতিহিংসাপরায়ণ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হয়। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কাছে এটাই আমার আহ্বান। আমি ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের উদ্দেশে বলছি, শাহাদাতের রক্তপিচ্ছিল পথ ধরে অবশ্যই ইসলামের বিজয় আসবে। আল্লাহ যাদেরকে সাহায্য করেন তাদেরকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। ওরা আব্দুল কাদের মোল্লাকে হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে চায়। আমি বিশ্বাস করি, আমার প্রতি ফোঁটা রক্ত ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে তীব্র থেকে তীব্রতর করবে এবং জালেম সরকারের পতন ডেকে আনবে। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যেন ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা আমার রক্তের বদলা নেয়।'

  33. তিনি তার স্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, 'আমি পরিবারের অভিভাবক ছিলাম। আমার পরে আল্লাহ আমার পরিবারের অভিভাবক হবেন। তুমি পরিবারকে দেখাশোনা করবে মাত্র। আল্লাহর কাছে আমি দোয়া করি, তোমার এই দায়িত্ব পালন শেষ হওয়ার পরই যেন আল্লাহতায়ালা তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসেন।'

  34. আব্দুল কাদের মোল্লা ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি সালাম জানান। তিনি আরো বলেন, 'খবরে দেখেছি ১০ বছরের শিশুদেরও হত্যা করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের রক্তে ভাসছে দেশ। এই রক্তের বদলা অবশ্যই আল্লাহ দেবেন। আমি মোটেই বিচলিত নই। আমি দেশবাসীর দোয়া চাই। আমার জীবনের বিনিময়ে যেন ইসলামী আন্দোলন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে আল্লাহ হেফাজত করেন। মহান আল্লাহর কাছে এটাই আমার কামনা।' বিজ্ঞপ্তি।

  35. http://www.dailynayadiganta.com/details.php?nayadiganta=MjY4OA%3D%3D&s=MTc%3D


184Like ·  · Share

*

কাদের মোল্লার ফাসি কার্যকর হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া -


জামাত-শিবির ঃ শহীদ কাদের মোল্লার রক্ত বৃথা যেতে দিবো না । নাস্তিক আওয়ামিলীগ সমূলে ধ্বংস হবে । একজন মহান আলেম এবং দেশপ্রেমিককে এইরুপ ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা করায় আল্লাহর গজব নাজিল হবে। হে আমার সাথি ভাইয়েরা মরলে শহীদ বাচলে গাজী বলে হুঙ্কার দিয়ে নাস্তিক সরকার কে ধ্বংস করার ডাক দিন । আজ রাতের আকাশে চাঁদের বুকে বিশেষ নজর রাখুন । হুজুরের মুখ ভেসে উঠবে এতে কোন সন্দেহ নাই।


সুশীল ঃ দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে কাদের মোল্লার ফাঁসি্র রায় কার্যকর করায় সরকার দেশকে সংঘাতের মুখে ঠেলে দিলো। এটা সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন ।


ছুপা ছাগু ঃ আজ অনেক শীত পড়েছে । এই ঠাণ্ডার ভিতর বেরুতে পারছি না।কুয়াশা অনেক। প্রকৃতি বিষণ্ণ । ( এরা সরাসরি কিছু বলে না , পাছে লেঞ্জা বের হয়ে যায় । এরা বাংলাদেশ জিতলে ফেসবুকে দেশপ্রেমের বুলি কপচানো স্ট্যাটাস দেয় কিন্তু বাংলাদশের নিরীহ মানুষ হত্যাকারির ফাসি হওয়ার পরে এদের স্ট্যাটাস টাইপ করা হাত অল্প শীতেই জমে যায়)


গোলাম মাওলা রনি ঃ কাদের আঙ্কেল এর ফাঁসি দেয়াটা মোটেও ঠিক হয় নাই। এই কাদের সেই কসাই কাদের না । আমি ছুটুকালে কসাই কাদেরের দোকান থেকে গরুর মাংস কিনে আনতাম । আমি তারে চিনি তার মুখে দাড়ি আছিলো না।


শহীদ পরিবার ঃ ৭১ এ যদি এই দেশের প্রতিটা পরিবার থেকে একজন মানুষ শহীদ হত তাহলে তারা স্বাধিনতার মর্ম বুঝতো । রাজাকারদের অন্তর থেকে ঘৃণা করতো। তাই যখন কেউ বলে ৪০ বছর পর কেনো এই বুড়োদের বিচার , কিংবা এরা নির্দোষ , কথাগুলো শুনলে ইচ্ছে করে বক্তার কণ্ঠনালিটা এক কোপে ছিড়ে ফেলি। ইহকালে কসাই কাদেরের শাস্তি না হয় শেষ হল এখন পরকালে আল্লাহর শাস্তির অপেক্ষায় । কঠিন শাস্তি চাই , কঠিন ।

Shahbag Square প্রজন্ম চত্বর shared MD Golam Maula Rony's status.

13 hours ago

Personally I am against any type of death sentence for any human.

But MD Golam Maula Rony seems to have sympathy towards Kader Molla & confused whether Kader Molla & war criminal butcher Kader was the same person!!!

অমানুষের পাশবিক নৃশংসতা এবং অশ্লীলতার ইতিবৃত্ত


এই শতাব্দীর সেরা পন্ডিত শ্রী নিরোদ চন্দ্র চোধুরী বহু বছর আগে লিখেছিলেন বাঙ্গালী জীবনে রমনী নামের এক অকাট্য প্রামান্য দলিল। নিরোদ বাবু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন যে- অবহমনে বাংলার গ্রাম গঞ্চে নারী পুরুষ কিভাবে অবাধ এবং নীতিহীন যৌনাচারে মেতে ওঠে এবং সমাজ সংসারকে ফাঁকি দিয়ে একের পর এক জারজ সন্তান পয়দা করে। প্রায় ষাঠ বছর হতে চললো - কিন্তু আজ অবাধ নিরোদ বাবুর বইকে চ্যালেঞ্চ জানিয়ে কোন বাঙ্গালী লেখক কোন বই রচনা করেননি।


দেশ বিদেশের সমাজ বিজ্ঞানীগণ এবং মনো বিজ্ঞানীগণ পিতা মাতার অবৈধ সন্তানদের কতগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট বর্নণা করেছেন। প্রতমত: তারা কথায় কথায় অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করে যাকে আমরা সোজা বাংলায় বলি- অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ। এরা খুবই অধৈয্য প্রকৃতির এবং সন্দেহ প্রবন হয়ে থাকে। কখনো কখনো তারা অতিমাত্রায় অত্যাচারী হয়ে ওঠে আবার একই ব্যক্তি প্রতিকুল পরিবেশে- নিজেকে ছোট করতে করতে পশুর পর্যায়ে নিয়ে যায়। তাদের বিবেক বলতে তেমন কিছু থাকে না। ফলে তাবৎ বিশ্বে অনাদীকাল থেকে পিতা মাতার অবৈধ সন্তানরা সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি পরিবার কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়ে আসছে।


আজ আমর হঠাৎ করেই এসব কথা মনে পড়লো একটি কারনে। গতকাল ফেইসবুকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত কাদের মোল্লার অন্তিম অনুরোধ রাখতে গিয়ে আমি একটি স্ট্যাটাস দেই। এরপর থেকে কিছু অমানুষের অশ্লীল বাক্যবানে ফেইসবুকের পাতা ভরে যেতে থাকে। ওদের পাশবিক অভিব্যক্তি কেবল তাদের পিতা মাতার কর্মকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।


পৃথিবীতে মানুষ আসার পর থেকেই এক মানুষ অন্য মানুষের অন্তিম ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখায়। মৃত্যু দন্ড প্রান্ত আসামীকে ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে তার শেষ ইচ্ছা পুরন করা হয়। পছন্দমতো খাবার পরিবেশন কিংবা নিকটতম আতœীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা স্বাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়। আসামী যদি মুসলমান হয় সে ক্ষেত্রে মৌলভী ডেকে দোয়া দরুদ পড়ানো হয়। কদের মোল্লার অন্তিম মুহূর্তের একটি অছিয়ত পালন করে মানুষ হিসেবে আমি নিজের কর্তব্যটুকু পালন করেছি মাত্র।


যে সব তরুন বন্ধুরা ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই বলে দাবী তুলছেন তাদেরকে বলবো চলে যান ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার আমিরাবাদ গ্রামে । গ্রামের দীন দরিদ্র ঘনা মোল্লার ঘরে কাদের মোল্লা কতসালে জন্ম গ্রহন করেছিলো সেই তথ্য নিয়ে কাজ শুরু ক রুন। তারপর যান- বাইশ রশি শিব সুন্দরী একাডেমীতে সেখানে কাদের মোল্লা প্রথমে ম্যাট্রিক পর্যন্ত পড়েন এবং পরে একই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। নিজের দারিদ্রতার জন্য তিনি এলাকার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পীর ধলামিয়া সাহেবের বাড়ীতে লজিং থাকতেন। এই লজিং থাকার সময়কাল সম্পর্কে এলাকাবাসীর স্বাক্ষ্য নিন।


ধলামীয়া পীর সাহেবের পরিবার- ব্রিটিশ আমল থেকে এলাকার অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত এবং সম্মানিত পরিবার হিসেবে পরিচিত। পীর সাহেবের বড় ভাই আবুল হাসানাত ১৯৫৩ সালে পাকিস্তানের আইজি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু আইজি সাহেবকে পিতার মতো শ্রদ্ধা করতেন। পীর সাহেবের পরিবার মহান মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিলেন এবং তার মেয়ের জামাই গাফফার ইঞ্জিনিয়ার ফরিদপুর জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডো বাহিনীর প্রধান ছিলেন। এই গাফ্ফার ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী ছিলেন কাদের মোল্লার ছাত্রী।


ঢাকা প্রেসক্লাবে এসেও তার সর্ম্পকে খোঁজ নিতে পারেন। নির্মল সেনও সন্তোষ গুপ্তের মতো সাংবাদিকগণ যখন দেশের সংবাদিক সমাজকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তখন কাদের মোল্লা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি হিসেবে কিভাবে দুইবার নির্বাচিত হলেন? তার চাকরী জীবনে উদয়ন স্কুল কিংবা বিডিআর পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজে গিয়েও খোঁজ নিতে পারেন।


আমি যে তথ্য গুলো দিলাম- তা কিন্তু আমার নয়। প্রসিকিউসনে আসামী পক্ষ উত্থাপন করেছিল। সরকার নিয়োজিত প্রসিকিউসনগণ একটু চেষ্টা করলেই ঐ গুলোর সত্য মিথ্যা যাচাই বাছাই করতে পারতো। কিন্তু তা না করে কেবল ঘটনাস্থল মিরপুরকে কেন্দ্র করে- তথ্য উপাত্ত এবং স্বাক্ষী প্রমান হাজির করায় সংক্ষুব্দ পক্ষ তাদের আপত্তি উত্থাপন করার সূযোগ পাচ্ছে।


সার্বিক পরিস্থিতিতে এটা আপনার জন্য বিবেকের দায় হয়ে দাড়িয়েছে যে- আপনি সবকিছু শুনবেন না কি কিছু কিছু শুনবেন এবং বাকীগুলো শুনবেনই না।


আমি যখন স্টাটাসটি প্রথম লিখেছিলাম তখন ধরে নিয়েছিলাম রাত ১২ টা ১ মিনিটে তা কার্যকর হবে। অন্যদিকে আজ যখন লিখছি তখন খবর এল কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে গেছে। ধারনা করা যায় আজ রাতেই তার ফাঁসি কার্যকর হবে। এটা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা বা দায় দায়িত্ব নেই। আমার দায়িত্ব কেবল ততটুকুই যতটুকু আমি জানি এবং যতটুকু পর্যন্ত আমার ক্ষমতা কার্যকর। আল্লাহ পাক যাদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন তারাই ভাল জানবেন কিংবা বলবেন- দুনিয়া এবং আখিরাতে।

কাদের মোল্লার ফাঁসি, উল্লাসে মাতল ঢাকা

নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢাকা

১২ ডিসেম্বর

র কোনও আগাম ঘোষণা নয়। 'রাজাকার শিরোমণি' কাদের মোল্লাকে চুপচাপ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিল বাংলাদেশ

*

কাদের মোল্লা

সরকার। রাত ১০টা ১ মিনিটে ফাঁসি কার্যকর হতেই শাহবাগ চত্বরে জড়ো হওয়া হাজার হাজার মানুষ বিজয়োল্লাসে মেতে ওঠেন। 'জয় বাংলা' ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে রাজধানী ঢাকা। স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল রাস্তা পরিক্রমা করে। আতশবাজিতে মুছে যায় অন্ধকার। রাজশাহি, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল-সহ দেশের সব প্রান্তেই ফাঁসির খবর পাওয়া মাত্র মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। ফেটে পড়েন উল্লাসে। পাশাপাশি প্রতিশোধের হুমকি দিয়ে নাশকতায় মেতেছে জামাতে ইসলামি। রবিবার তারা হরতালও ডেকেছে।

জেল সূত্রের খবর, সন্ধ্যা সাতটাতেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ডেকে পাঠানো হয় ছয় জল্লাদকে। তাঁরা পাকা কলা চটকে ও গ্রিজ দিয়ে দড়িটিকে পিচ্ছিল করে টাঙিয়ে দেন ফাঁসিকাঠে। বালির ভারী বস্তা ঝুলিয়ে তা পরীক্ষাও করে নেওয়া হয়। রাত ন'টার কিছু পরে জেল গেটে গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত পায়ে ঢুকে যান জেলের সার্জন ও এক মৌলবি। এর পরে কাদের মোল্লাকে স্নান করিয়ে নমাজ পড়ানো হয়। মঙ্গলবার রাতেও এই পর্যন্ত কাজ এগিয়ে গিয়েছিল। তার পরে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ এসে পৌঁছনোয় ফাঁসি রদ হয়ে যায়।

এ বারে আর তার সুযোগ ছিল না। তাই প্রার্থনার পরে জেলের সার্জন কাদের মোল্লার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। একাত্তরে ঠান্ডা মাথায় যিনি কিশোর-বৃদ্ধ নির্বিশেষে অজস্র মুক্তিকামী মানুষকে নির্যাতন করে খুন করিয়েছেন, নিজের শেষ সময়ে সেই কাদের মোল্লা কিন্তু খুবই ভেঙে পড়েন। নিয়ম মাফিক একটি নির্জন কক্ষে প্রায় আধ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় বছর পঁয়ষট্টির এই জামাত নেতাকে। তার পরে পোশাক পাল্টে বিশেষ আলখাল্লা পরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। ফাঁসিকাঠে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করানোর পরে এক জল্লাদ তাঁর মুখ ঢেকে দেন কালো কাপড়ের মুখোশে। আর এক জল্লাদ দড়ি পরিয়ে দেন গলায়। ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র হাতল টেনে পায়ের নীচের পাটাতন খুলে দেন অন্য জল্লাদ। তার পরে সার্জন এসে দেহ পরীক্ষা করে জানান তিনি মৃত। এর পরে দড়ি থেকে খুলে নেওয়া হয় এই রাজাকার-প্রধানের দেহ। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর দেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয় ফরিদপুরে, তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করার জন্য।

*

ফাঁসির পর মশাল জ্বেলে উদযাপন শাহবাগ চত্বরে। ছবি: এপি।

সন্ধ্যা ছ'টায় কাদেরের পরিবারকে ফের যখন জেলে ডেকে পাঠানো হয়, তখনই পরিষ্কার হয়ে যায় সরকার আর কালক্ষেপে রাজি নয়। দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট রিভিউ পিটিশন খারিজ করে দেয়। তার পরে 'মিরপুরের কসাই' জামাতে ইসলামির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার ফাঁসি শুধু সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়ায়। মঙ্গলবার রাতেই তাঁর ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বিকেলেই তা ঘোষণা করে দেওয়ায়, কাদের মোল্লার আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ পান। ফাঁসির ঘণ্টা দেড়েক আগে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ জেলে এসে পৌঁছলে তা রদ হয়ে যায়।

এ দিকে, সাজানো বিচারে আওয়ামি লিগ সরকার তাদের নেতাকে খুন করেছেএই অভিযোগ করে ভয়াবহ প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে জামাতে ইসলামি। দেশের নানা জায়গায় গাড়ি ভাঙচুর, আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বোমাও ফাটানো শুরু হয়। কুষ্ঠিয়ায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর পৈতৃক বাড়িতে পর পর তিনটি পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতির বাড়িতেও হামলা করা হয়। রিভিউ পিটিশন খারিজ করা দুই বিচারপতির নামে ফেসববুকে 'মৃত্যু পরোয়ানা' জারি করে বলা হয়, সুযোগ পাওয়া মাত্র এই পরোয়ানা কার্যকর করা হবে। ফেনী ও লক্ষ্মীপুরে জামাত-শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পাঁচ জন প্রাণ হারিয়েছেন। কাদের মোল্লার ফাঁসির পরে নাশকতা আরও বাড়বে আশঙ্কা করে গোটা দেশেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ দিন বিকেলেই আইনরক্ষক বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক। তার পর তিনি জানান, পুলিশ ছাড়া বিজিবি ও আনসারদের সব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মোতায়েন করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনার রকিবুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, নির্বাচনের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরির জন্য সেনাবাহিনীকে তৈরি রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলেই মোতায়েন করা হবে। তিনি জানান, জানুয়ারির ৫ তারিখে নির্বাচন করার লক্ষ্যেই তাঁরা এগিয়ে চলেছেন।

এ দিকে নয়াদিল্লির খবর, কাদের মোল্লার ফাঁসির আগেই এ দিন বিএসএফের বিরাট বাহিনী বাংলাদেশ সীমান্তে মোতায়েন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কে সীমান্ত এলাকায় বাড়তি নজরদারির পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র। শরণার্থীদের ওপর গুলি না চালানোর জন্য বিএসএফ-কে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।


পুরনো খবর: মুন-কেরির ফোন এলেও সঙ্কট রয়ে গেল বাংলাদেশে


গভীর রাতে আটক এরশাদ

মধ্যরাতে বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হল বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাশাসক ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মহম্মদ এরশাদকে। বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)-এর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, অসুস্থতা অনুভব করায় অশীতিপর এই নেতাকে সেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির এক নেতা নাম প্রকাশ না-করার শর্তে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে র‌্যাবের একটি দল হঠাৎই ঢাকার বারিধারায় এরশাদের বাড়িতে আসে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তখন বাড়িতেই ছিলেন। তাঁকে দ্রুত তৈরি হতে বলা হয়। এর পরে এরশাদকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায় র‌্যাব। তিনটি আসনে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেও নির্বাচন থেকে সরে আসার কথা ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। মননোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন শুক্রবার।

http://www.anandabazar.com/13bdesh1.html


ফাঁসির মঞ্চেও স্বাভাবিক ছিলেন কাদের মোল্লা


ফাঁসির মঞ্চেও স্বাভাবিক ছিলেন জামায়াত নেতা কাদের মোল্লা। মঞ্চে উঠেও তিনি একটুও বিচলিত হননি। অন্য সময়ের মত সেখানেও দৃঢ় আত্মবিশ্বাসে অটল ছিলেন তিনি। ফাঁসি কার্যকরের পর তাকে ২০ মিনিট ধরে ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


ফাঁসি কার্যকরের পর সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী কারা ফটকে কিছু তথ্য জানিয়েছিলেন। তবে এরপর ডেপুটি জেলার নুর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, কারাবিধিতে প্রেস ব্রিফিংয়ের কোনো সুযোগ নেই। যে কারণে আপনাদেরকে বিস্তারিত জানাতে পারছি না।


http://www.sheershanews.com/2013/12/13/17018

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় ভারত

বুধবার, 04 ডিসেম্বর 2013 09:50

0 COMMENTS

বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  ঢাকা: সর্বোচ্চ সংখ্যক দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় ভারত। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং বুধবার একটি হোটেলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের এই অভিপ্রায়ের কথা জানান।


সুজাতা বলেন, ভারত চায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এটি যেন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। তবে কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে সে সম্পর্কে তিনি বলেন, বিষয়টি ঠিক করবে বাংলাদেশের জনগণ।


বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে এদের মানুষই কাজ করবে।


কত লাশ হলে খালেদার ক্ষুধা মিটবে প্রশ্ন হাসিনার

বুধবার, 04 ডিসেম্বর 2013 09:51

0 COMMENTS

বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৩

এম এ আহাদ  শাহীন : বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম জিয়াকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে বলে মনমশব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হাসিনা বলেন, খুনিদের বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে, তেমনি দেশে চলমান সংহিসতা, খুনের জন্য একদিন তারও (খালেদা) বিচার করা হবে।বুধবার বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের ওর্য়াকিং কমিটির জরুরি বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।খালেদা জিয়া সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে এসি রুমে বসে মুরগীর সুপ, রোস্ট খান। মানুষ হ্ত্যা দেখে উৎফুল্ল হন।মিথ্যায় খালেদার সঙ্গে কেউ পারবে না বলেও মšত্মব্য করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আর কত লাশ চান, কত লাশ হলে তার ক্ষুধা মিটবে এটাই আমার প্রশ্ন। জনগণের কষ্ট লাঘবের জন্য আমি তাকে ফোন করলাম উত্তরে তিনি কি বললেন এটা সবাই জানেন।




যারা মানুষ খুন করেছ, ফিসপ্লেট খুলছে তাদের হাতে নাতে ধরিয়ে দিতে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ হত্যার মাধ্যমে তারা মাধ্যমে তারা কি ধরণের রাজনীতি করছে। তারা ওসামা বিন লাদেনের মত গোপন জায়গা থেক ভিডিও টেপ এর মাধ্যমে মানুষ হত্যার নির্দেশ দিচ্ছে।সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, যারা সহিংসতা করছে তাদের ছবি প্রকাশ করুন। যারা দেশের মানুষের জন্য রাজনীতি করেন। তাদের জন্য এরা কলঙ্ক সৃষ্টি করছে।


একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড অবশেষে কার্যকর করা হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আজ বৃহস্পতিবার রাতে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের মধ্যে কাদের মোল্লার শাস্তিই প্রথম কার্যকর করা হলো।


আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হলে আওয়ামী লীগ ও সরকারকে প্রতি ফোঁটা রক্তের জবাব দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ফাঁসির রায় কার্যকরের নামে সরকার কাদের মোল্লাকে হত্যা করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এই 'ষড়যন্ত্রের' প্রতিবাদে 'ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ' প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিচার পরিচালিত হয়েছে সরকার নির্দেশিত ছকে। বিশ্ব সম্প্রদায় বিচারপ্রক্রিয়া ও রায় সম্পর্কে যেসব বক্তব্য রেখেছে, এ সরকার তা অগ্রাহ্য করে কাদের মোল্লাকে 'হত্যা করতে অস্থির' হয়ে পড়েছে। বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে দেশে-বিদেশে তীব্র সমালোচনা এবং ফাঁসি কার্যকর স্থগিত রাখতে বিশ্বসম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অনুরোধ উপেক্ষা করেই গতরাতে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।


বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের তৃতীয় দফায় ডাকা টানা অবরোধের ষষ্ঠ দিন আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাসে আগুন দেওয়া, ককটেলের বিস্ফোরণ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

সায়েদাবাদ: সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে সকালে একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা শাহজাদী সুলতানা জানান, ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে কে বা কারা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে থেমে থাকা একটি বাসে আগুন দেয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয় লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে।

দয়াগঞ্জ: সকাল নয়টার দিকে পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জ মোড়ে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, জামায়াত-শিবিরের একটি দল সকাল নয়টার দিকে দয়াগঞ্জ মোড়ে মিছিল বের করে। বাধা দিলে পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েকটি ককটেল ছোড়েন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। একপর্যায়ে শটগানের গুলি ছুড়ে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পুলিশের ওয়ারি বিভাগের উপকমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ এ তথ্য জানিয়েছেন।




একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় উল্লাস ও আনন্দ মিছিল করছে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ।

পুরো এলাকায় এখন আনন্দ বিরাজ করছে। মিছিলের স্লোগান, 'এই মাত্র খবর এল কাদের মোল্লার ফাঁসি হলো। জয় বাংলা। আমার সোনার বাংলায়, রাজাকারের ঠাঁই নাই।'

কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিক্রিয়ায় গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, 'শুধু কাদের মোল্লা নয়, আরও যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তাদেরও চূড়ান্ত রায় কার্যকর করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা যেন ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মাটিতে ঔদ্ধত্য প্রকাশ ও জাতীয় পতাকা নিয়ে ঘুরবে তা আমরা দেখতে চাই না।' তিনি বলেন, 'শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চে যাঁরা এসেছিলেন, প্রয়োজনে তাঁরা সবাই জীবন দিতে এসেছেন।'

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শাহবাগে জনসমাগম বাড়ছে।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়াকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন ১৪-দলীয় জোটের নেতারা। এ রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ইতিহাসের দায়মোচন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।

তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, 'কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের পর ইতিহাসের দায় মোচন শুরু হলো। আশা করি অন্যান্য রায় কার্যকর করে বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধের কলঙ্কমুক্ত হবে।'

আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, 'আজ ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় কে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং বিপক্ষের শক্তি, তা নির্ধারিত হয়েছে।'

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, 'এ রায় বাস্তবায়নের জন্য বাংলার দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছিল। আজ সেই অপেক্ষার অবসান হলো। এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে যে সন্দেহ ছিল, তারও অবসান হলো।'


অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সাবেক এপিএস আ শ ম রাশেদের বাসা নগরের রায়নগর এলাকায়। বাসার সামনে তাঁদের বিপণিবিতান। সেখানেই একটি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ব্যাংকে ভাঙচুর চালায় ও পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেন ছাত্রশিবিরের একদল কর্মী। এরপরে তাঁরা রাশেদের বাসায় আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এ সময় পিস্তল দিয়ে গুলি করে হামলা ঠেকান অর্থমন্ত্রীর সাবেক এপিএস আ শ ম রাশেদ। এতে দুজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে শিবির দাবি করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সিলেটে আজ সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছিল ছাত্রশিবির। নগরের রায়নগর এলাকায় হরতালের পিকেটিংয়ে তত্পর ছিল শিবিরের একদল কর্মী। বেলা দেড়টার দিকে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের কার্যকারিতার বিরুদ্ধে রিভিউ আপিল খারিজের পর তাঁরা সহিংস হয়ে ওঠেন। শিবিরের কর্মীরা আ শ ম রাশেদের বাসার সামনে বিপণিবিতানে বেসিক ব্যাংকের শাখায় পেট্রলবোমা ছুড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর পিকেটাররা তাঁর বাসার দিকে এগোতে থাকেন। এ সময় বাসায় থাকা রাশেদ ও তাঁর বড় ভাই ইরফান আহমদ দুটি পিস্তল নিয়ে বাসার উঠোনে দাঁড়িয়ে হামলাকারীদের উদ্দেশে গুলি ছোড়েন। তখন হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও কামরুল ও সায়েম নামের শিবিরের দুজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আ শ ম রাশেদ জানান, হরতালের পিকেটিংয়ে থাকা শিবিরের ক্যাডাররা সশস্ত্র অবস্থায় তাঁদের মালিকানাধীন বিপণিবিতানের বেসিক ব্যাংকের শাখায় পেট্রলবোমা ছোড়ে ও ভাঙচুর চালায়। পরে বিপণিবিতানের পেছনে তাঁদের বাসার দিকে অগ্রসর হলে তাঁরা দুই ভাই লাইসেন্স করা পিস্তল থেকে গুলি করে হামলা ঠেকান। তাঁদের ছোড়া গুলিতে শিবিরের দুই কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর তিনি পরে শুনেছেন বলে জানান।

গুলি করা প্রসঙ্গে রাশেদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, 'অতর্কিতে হামলা হওয়ায় আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়েছি। নতুবা হামলাকারীরা ব্যাংক লুটপাট করে বাসায়ও আগুন দিত।'

হামলা ঠেকাতে গুলি করা প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ আয়ুব প্রথম আলো ডটকমকে জানান, এ বিষয়ে পুলিশকে কেউ অবহিত করেনি, তবে লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা জানিয়ে অতিরিক্ত উপকমিশনার বলেন, 'ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা গুলিবর্ষণের আলামত পাইনি। সেখান থেকে শুধু পেট্রলবোমার কিছু আলামত ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে রেললাইনের পাথর ব্যবহার করায় সেগুলোর কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।' হামলাকারী সম্পর্কে তিনি বলেন, 'উচ্চ আদালতের একটি আদেশের পরপরই নগরের ওই এলাকা ছাড়াও আরেকটি ব্যাংকে একই কায়দায় পেট্রলবোমা হামলা হয়েছে। তাই আমরা হামলাকারীরা ওই পক্ষ হবে ধারণা করে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।'

মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ছাত্রশিবিরের মহানগর শাখার সভাপতি আনোয়ারুল ওয়াদুদ ফোন ধরেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর শাখার এক নেতা শিবিরের দুজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ওই দুজনকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। প্রথম আলো ডটকমের কাছে শিবিরের ওই নেতা দাবি করেন, 'হরতালে পিকেটিং করার সময় এপিএসের বাসা থেকে গুলি করা হয়। এতে সায়েম ও কামরুল গুলিবিদ্ধ হন। তবে ব্যাংকে হামলার কথা জানালেও কারও বাসায় হামলার কথা তিনি অস্বীকার করেন।

এরশাদ আটক?

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বারিধারার বাসা থেকে আটক করা হয় বলে জাতীয় পার্টি সূত্র দাবি করেছে। তবে র‌্যাব-১ বলেছে, অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাবেক রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে গেছেন। এ সময় এরশাদের গাড়ির সামনে-পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কমপক্ষে ২০টি গাড়ি ছিল। তবে র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কিসমত হায়াত প্রথম আলো ডটকমকে জানান, সাবেক এই রাষ্ট্রপতি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যাওয়ার পথে নিরাপত্তার স্বার্থে র‌্যাবের সদস্যরা তাঁর সঙ্গে গেছেন।

এদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিষয়ে কয়েক দিন ধরেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের সঙ্গে সরকারের মতবিরোধ চলছিল।

প্রথমে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তুতি নিলেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাটকীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন এরশাদ। এ নিয়ে প্রথমে কাজী জাফর আহমেদের সঙ্গে এরশাদের বিরোধ তৈরি হলে পাল্টা জাতীয় পার্টি গঠনের ঘোষণা দেন কাজী জাফর। নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণার পর রওশন এরশাদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদসহ অন্যদের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয় এরশাদের। আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে কাউকে লাঙ্গল প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার অনুরোধ জানান এরশাদ।

অন্যদিকে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে দেখা করেন রওশন এরশাদ।


ফাঁসিতেও প্রতিক্রিয়া নেই বিএনপির

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথম ফাঁসির পরও তাত্ক্ষণিকভাবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। দলের বর্তমান মুখপাত্র সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।

দপ্তরের দায়িত্বে থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেপ্তারের পর থেকে কার্যত অজ্ঞাত স্থান থেকে ভিডিও বার্তা আর বিবৃতি দিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরছিলেন বিএনপির মুখপাত্র। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে বিএনপির কোনো বিবৃতিও পাওয়া যায়নি।

মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় বিএনপির রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি আজ রাতে কার্যকর করা হয়।

একই ধরনের অপরাধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীরও ফাঁসির আদেশ রয়েছে। ওই আদেশের পর বিএনপি গত ২ অক্টোবর প্রথমবারের মতো এ বিচারের রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। তবে জামায়াতের নেতাদের রায় নিয়ে এখন পর্যন্ত বিএনপির কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রত্যেক রায়ের পর দলটি চুপ ছিল, কখনো বলেছিল পরে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের রায়ের পর সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন আসামির প্রধান আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আইনজীবী মওদুদ আহমদ, রফিকুল ইসলাম মিয়া, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ প্রথম আলো ডটকমকে বলেছিলেন, 'এ রায়ের বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত কোনো মন্তব্য নেই। দলের বক্তব্য পরে জানানো হবে।' তবে সে প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত জানায়নি বিএনপি।

রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াত

জামায়াতের নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে আগামী রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। আজ বৃহস্পতিবার রাতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর এক বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

অন্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শুক্রবার দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলায় গায়েবানা জানাজা, শনিবার কাদের মোল্লার জন্য দোয়া অনুষ্ঠান এবং সোমবার ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভা।

কাদের মোল্লার ফাঁসিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতিতে এর নিন্দা জানান মকবুল আহমাদ।


সেনাবাহিনী সতর্ক, প্রয়োজনে মোতায়েন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মোতায়েনের জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। খবর ইউএনবির।

সিইসি বলেন, 'সেনাবাহিনীকে ইতিমধ্যে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের মোতায়েন করা হবে।' এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শিগগিরই তাঁরা বৈঠক করবেন বলেও জানান তিনি।

গত ২৫ নভেম্বর কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন জোট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি চালিয়ে গেলেও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোট নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করার জন্যও সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে তারা।

অন্যদিকে মহাজোটের অংশীদার এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা জটিলতা। প্রথমে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রস্তুতি নিলেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নাটকীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন এরশাদ। এ নিয়ে প্রথমে কাজী জাফর আহমেদের সঙ্গে এরশাদের বিরোধ তৈরি হলে পাল্টা জাতীয় পার্টি গঠনের ঘোষণা দেন কাজী জাফর। নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণার পর রওশন এরশাদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদসহ অন্যদের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয় এরশাদের। অবশ্য আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে কাউকে লাঙ্গল প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার অনুরোধ জানান এরশাদ।


বিজয়ের বার্তা নিয়ে আসছে লাল-সবুজের পতাকা। ছবিটি শাহবাগ এলাকা থেকে গত বুধবার তোলা প্রথম আলো

বাড়ির ছাদে, বারান্দায়, গাড়িতে, রিকশায়; এমনকি সাইকেলের সামনে দুলছে লাল-সবুজের পতাকা। ষোলোই ডিসেম্বর বিজয় দিবস সামনে রেখে রাজধানীতে চলছে জাতীয় পতাকা বিক্রির ধুম।


ডিসেম্বরের শুরু থেকে পতাকা বিক্রির উৎসব শুরু হয়েছে। চলবে বিজয় দিবস পর্যন্ত। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পতাকা বিক্রি করছেন একশ্রেণীর মৌসুমি বিক্রেতা। এমন একজন মো. সোহেল, বয়স ১৭। বছরের অন্য সময় রেস্তোরাঁয় কাজ করলেও এ সময়টা পতাকা বিক্রি করে। কারণ জানাল, 'এইডা বিজয়ের মাস, হগলে পতাকা কেনে তাই ব্যবসা ভালা হয়। আর পতাকা বেচনের কামডাও সোজা।'


গত মঙ্গলবার বিকেলে আজিজ সুপার মার্কেট থেকে যাত্রী নিয়ে কারওয়ান বাজারে এলেন রিকশাচালক রফিক আলী। রিকশার সামনে বেলের পাশে বাঁধা ছোট্ট একটি জাতীয় পতাকা। ১০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। রফিক বললেন, 'হারা দিন কত মাইনসে ভাড়া নিয়ে যে রকম ব্যবহার করে আমাগো লগে, সব ভুইলা যাই যহন এই পতাকার দিকে চাই।'


বঙ্গবাজারে একটি কারখানায় একের পর এক পতাকা বানিয়ে যাচ্ছিলেন কিরণ হোসেন। মোট আটজন কারিগর কাজ করেন ওই কারখানায়। যত বেশি সংখ্যায় বানানো যাবে, তত বেশি টাকা—মালিকের সঙ্গে এটাই কারিগরদের চুক্তি।

কিরণ জানালেন, ডিসেম্বর মাসে বেশি কাজ হয়, দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেও শেষ করা যায় না। প্রতিটি পতাকার জন্য কমপক্ষে তিন থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত মজুরি মেলে।


বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের সামনে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাইসা আজিম দুটি পতাকা বেছে নিল। একটি নিজের জন্য, অপরটি বড় বোনের জন্য। রাইসা বলল, 'পতাকার জন্য যুদ্ধ দেখিনি, কিন্তু গল্প শুনেছি, আর বইতে পড়েছি।'

স্বজনদের সাক্ষাৎ

আজ সন্ধ্যায় আবদুল কাদের মোল্লার সঙ্গে আবার দেখা করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করতে পরিবারের সদস্যরা আজ সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে যান। সন্ধ্যা সাতটার পরে তাঁরা বের হয়ে আসেন।

এদিকে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে কারা চিকিত্সক শামসুল আলম কারাগারের ভেতর ঢোকেন। রাতে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন), দুই জন ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন, একজন মাওলানা, একজন ইমাম কারাগারের ভেতরে যান।

কারাগারের সামনে পুলিশ-র্যাবের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছিল। এ ছাড়াও আশপাশের ভবনের ওপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। কারা চিকিত্সক শামসুল আলম সন্ধ্যা সাতটার দিকে কারাগারের ভেতর ঢোকেন।

ফাঁসি কার্যকর করেন ছয় জল্লাদ

জল্লাদ শাজাহান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি দল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করেন বলে জানা গেছে। দলের বাকি সদস্যরা হলেন ফারুক, হামিদ, সারোয়ার, তানভির ও জনি। কাউকে ফাঁসি দিলে সেই জল্লাদ এক মাসের সাজা মওকুফ পান।

এর আগে শাজাহান ভূঁইয়া আলোচিত সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইকে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের ফাঁসি দিয়েছিলেন।

কাদের মোল্লার বিচার শুরু

২০১০ সালের ১৩ জুলাই অন্য একটি মামলায় কাদের মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তদন্ত শুরু হয় ওই বছরের ২১ জুলাই। গত বছরের ২৮ মে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ৩ জুলাই থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন ট্রাইব্যুনাল-২।

কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। ক্ষুব্ধ মানুষ সেদিন বিকেল থেকে জড়ো হতে থাকে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে। প্রতিবাদী এই মানুষগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে গড়ে তোলে গণজাগরণ মঞ্চ।

এরপর সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিটি) আইন সংশোধন করতে বাধ্য হয়েছিল। ১৭ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) সংশোধন বিল, ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাস হয়। সংশোধনের ফলে আসামিপক্ষের মতো রাষ্ট্রপক্ষও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সমান সুযোগ পায়। আগে আইনে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল করার সুযোগ ছিল না।

আইন সংশোধনের পর গত ৩ মার্চ কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদণ্ড) চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আর সাজা থেকে অব্যাহতি চেয়ে পরদিন ৪ মার্চ আপিল করেন কাদের মোল্লা। ১ এপ্রিল থেকে আপিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষ হওয়ার ৫৫ দিনের মাথায় ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় ৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। এরপর রায়ের অনুলিপি সুপ্রিম কোর্ট থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।

গত ৮ ডিসেম্বর বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ থেকে কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।

১০ ডিসেম্বর বিকেলে হঠাত্ করেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁর স্ত্রী সানোয়ার জাহানের কাছে চিঠি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী রাত আটটার দিকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দুটো মাইক্রোবাসে করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে ফিরে যান। রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু ও আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানান, ১০ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হবে। ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতিও ছিল কারা কর্তৃপক্ষের। তবে ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিতের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বাসায় হাজির হন কাদের মোল্লার আইনজীবীরা। তবে ঘোষিত সময়ের দেড় ঘণ্টা আগে তাঁর ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি। তিনি ১১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।

শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেন। ফলে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে তখন জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যায় কাদের মোল্লার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করার অনুমতি দেয়।  

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ছয় অভিযোগ

প্রথম অভিযোগ (পল্লব হত্যা): কাদের মোল্লার নির্দেশে আকতার গুন্ডা একাত্তরের ৫ এপ্রিল মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যা করেন। রায়ে বলা হয়,  সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পাওয়া গেছে, একাত্তরে নবাবপুর থেকে পল্লবকে ধরে আনার মতো দুষ্কর্মে আসামির 'সহযোগিতা' ছিল। পল্লব মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, এ জন্য তিনি আসামির শিকারে পরিণত হন। এ হত্যাকাণ্ড ছিল দেশের বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে পদ্ধতিগত আক্রমণের অংশ।

দ্বিতীয় অভিযোগ (কবি মেহেরুননিসা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা): এ অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ২৭ মার্চ কাদের মোল্লা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে মিরপুরের বাসায় গিয়ে হত্যা করেন। রায়ে এ বিষয়ে বলা হয়, সহযোগীদের নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে কাদের মোল্লা এ হত্যাকাণ্ডে 'নৈতিক সমর্থন' ও 'উত্সাহ' জুগিয়েছেন, যা দুষ্কর্মে 'সহযোগিতার' মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

তৃতীয় অভিযোগ (সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেব হত্যা): একাত্তরের ২৯ মার্চ সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে মিরপুরের জল্লাদখানা পাম্প হাউসে নিয়ে কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা জবাই করে হত্যা করেন। প্রাপ্ত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়, খন্দকার আবু তালেব হত্যাকাণ্ডে কাদের মোল্লা মূল অপরাধীদের নৈতিক সমর্থন ও উত্সাহ জুগিয়েছেন, যা মানবতাবিরোধী অপরাধে সহযোগিতার মধ্যে পড়ে।

চতুর্থ অভিযোগ (ঘাটারচর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ড): একাত্তরের ২৫ নভেম্বর সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কাদের মোল্লা ও ৬০-৭০ জন রাজাকার কেরানীগঞ্জ থানার ভাওয়াল খানবাড়ি ও ঘাটারচর (শহীদনগর) এলাকায় শতাধিক নিরস্ত্র গ্রামবাসী ও দুজন নিরস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেন। এ বিষয়ে রায়ে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষের সপ্তম সাক্ষী আবদুল মজিদ পালোয়ান ও অষ্টম সাক্ষী নূরজাহান বেগম যে আসামিকে চিনতেন, তা প্রাপ্ত সাক্ষ্যে ট্রাইব্যুনাল বিশ্বাস করতে পারেননি। ফলে এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয় না যে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাকিস্তানি সহযোগীদের সঙ্গে রাইফেল হাতে কাদের মোল্লা নিজে উপস্থিত ছিলেন। হত্যাকাণ্ড যে ঘটেছিল, তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই, কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আসামির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে।

পঞ্চম অভিযোগ (আলুব্দীতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ): একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাদের একটি হেলিকপ্টার মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামের পশ্চিম দিকে নামে। কাদের মোল্লা অর্ধশত অবাঙালি, রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনাসদস্য নিয়ে গ্রামের পূর্ব দিক থেকে ঢোকেন এবং এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। ওই ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি মারা যান। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে, হত্যাকাণ্ডের সময় কাদের মোল্লাকে রাইফেল হাতে সশরীরে উপস্থিত দেখা গেছে। কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ যখন অনেক ব্যক্তি ঘটায়, তখন ওই ব্যক্তিদের প্রত্যেকে ওই অপরাধ এককভাবে সংঘটনের জন্য সমানভাবে দায়ী।

ষষ্ঠ অভিযোগ (হযরত আলী, তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা ও ধর্ষণ): একাত্তরের ২৬ মার্চ মিরপুরের ১২ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর কালাপানি লেনের হযরত আলী, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও দুই বছরের ছেলেকে হত্যা এবং তাঁর ১১ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের সঙ্গে কাদের মোল্লা সংশ্লিষ্ট ছিলেন। হযরতের আরেক মেয়ে ওই ঘটনা লুকিয়ে থেকে দেখেছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে তৃতীয় সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন হযরতের পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য লুকিয়ে থাকা ওই মেয়ে। রায়ে বলা হয়, প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণে অপরাধের ঘটনাস্থলে কাদের মোল্লার উপস্থিতি অপরাধের সঙ্গে তাঁর সংযুক্ততা প্রমাণ করে। আইনগতভাবে ধরে নেওয়া যায়, অপরাধ সংঘটনে আসামি নৈতিক সমর্থন ও সাহায্য করেছেন।

ট্রাইব্যুনাল ও আপিল বিভাগে সাজা

ট্রাইব্যুনাল-২-এর রায় অনুসারে, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে চতুর্থ অভিযোগ ছাড়া বাকি পাঁচটি অভিযোগে অপরাধ প্রমাণিত হয়। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধে সংশ্লিষ্টতা বা সহযোগিতার জন্য, পঞ্চম অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে হত্যা এবং ষষ্ঠ অভিযোগে হত্যা ও ধর্ষণের অপরাধে কাদের মোল্লাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ট্রাইব্যুনাল পঞ্চম ও ষষ্ঠ অভিযোগের জন্য কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অভিযোগের জন্য ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেন।

আপিল বিভাগের রায়ে কাদের মোল্লাকে দোষী সাব্যস্ত করার ব্যাপারে পাঁচ বিচারপতি একমত হলেও মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা ভিন্নমত দেন। আপিল বিভাগের আদেশে বলা হয়, ষষ্ঠ অভিযোগে (সপরিবারে হযরত আলী লস্কর হত্যা ও ধর্ষণ) সংখ্যাগরিষ্ঠ (৪:১) মতামতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। চতুর্থ অভিযোগ (ঘাটারচর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ড) থেকে ট্রাইব্যুনাল আসামিকে খালাস দিয়েছেন, রায়ের এ অংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে বাতিল করা হলো। এ অভিযোগে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো। প্রথম (পল্লব হত্যাকাণ্ড), দ্বিতীয় (সপরিবারে কবি মেহেরুননিসা হত্যা), তৃতীয় (সাংবাদিক আবু তালেব হত্যাকাণ্ড) ও পঞ্চম অভিযোগে (আলুব্দী হত্যাযজ্ঞ) ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ড সংখ্যাগরিষ্ঠ (৪: ১) মতামতে বহাল রাখা হলো।

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন 'বোথ দ্য রিভিউ পিটিশনস আর ডিসমিসড' (দুটি পুনর্বিবেচনার আবেদনই খারিজ করা হলো) বলে ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করেন।



কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর

DW.DE


জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির কার্যকর করা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত দশটা এক মিনিটে রায় কার্যকর করা হয়৷ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং এএফপি নিশ্চিত করেছে এই তথ্য৷

এর আগে কারা মহাপরিদর্শক মঈনুদ্দিন খন্দকার জানিয়েছেন মঙ্গলবার রাতে যেখান থেকেমৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত হয়েছে সেখান থেকেই আবার শুরু হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়া৷

কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন খারিজের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষ, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং আসামি পক্ষের কাছে পৌঁছে গেছে বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যেই৷ আর মন্ত্রণালয়ে বিকেলে জরুরি বৈঠকের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন কাদের মোল্লার আর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ নেই৷ তিনি আগেই প্রাণভিক্ষা চাইতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন৷ আর এই ক্ষেত্রে জেল কোড অনুসরণের কোনো প্রয়োজন নেই৷

কারা মহাপরিদর্শক মঈনুদ্দিন খন্দকার জানিয়েছেন মঙ্গলবার রাতে ফাঁসি কার্যকর করতে যে পর্যন্ত আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল তারপর থেকেই কাজ শুরু করছেন তারা৷ ঐ রাতে স্থগিত আদেশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত যেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে তা আর নতুন করে করা হবে না৷ আর ফাঁসি কার্যকর করার পরবর্তী প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন কারা কর্মকর্তারা৷ কারাগার এবং আশপাশ এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু৷

স্থগিত হয়েছে যেখানে সেখান থেকেই শুরু হচ্ছে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রক্রিয়া

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাদের মোল্লার স্ত্রী, সন্তান এবং আত্মীয়-স্বজন কারাগারে কাদের মোল্লার সঙ্গে শেষ দেখা করেছেন৷ আর জামায়াতে ইসলামী এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়া হলে তাঁর প্রতি ফোটা রক্তের জবাব দেয়ার হুংকার দিয়েছে৷

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর দেয়া রায়ে আপিল বিভাগকাদের মোল্লার আবেদন খারিজ করে দেন৷ এর ফলে একাত্তরে মু্ক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরে সব বাধা অপসারিত হয়৷ তবে কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন আদেশের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পরই জেল কোড মেনে দণ্ড কার্যকর করা যাবে৷

আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন দেশের মানুষের চূড়ান্ত বিজয় হয়েছে৷ তিনি বলেন, ''আমরা যুদ্ধে নেমেছি৷ এ যুদ্ধে আমাদের বিজয় হবেই৷''

গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার সব প্রস্তুতি নিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ৷ কাদের মোল্লা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর ঐ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তার আগেই মঙ্গলবার রাতে কাদের মোল্লার আইনজীবীরা অ্যাটর্নি জেনারেলকে না জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছে ফাঁসি কার্যকর স্থগিতের আবেদন জানান৷ চেম্বার জজ তাদের আবেদন গ্রহণ করে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ফাঁসির দণ্ড কার্যকর স্থগিত করেন৷ বুধবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হলে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসি স্থগিতের আদেশ দেন আদালত৷ আর বৃহস্পতিবার কাদের মোল্লার আবেদন খারিজ হলে ফাঁসির পথে সব বাধা সরে যায়৷ প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে বিচারপতি এস কে সিনহা, আবদুল ওয়াহাব মিয়া, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং এই এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন৷

শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা এখনো সেখানে অবস্থান করছেন

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কাদের মোল্লাকে গত ৫ই ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল৷ আর আইন সংশোধন করে আপিল করা হলে ১৭ সেপ্টেম্বর ফাঁসির দণ্ড দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ৷ গত ৫ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়৷ ৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে৷

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের পর সারাদেশে জামায়াত-শিবির সহিংসতা শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷ ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবিরের চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে বুধবার গভীর রাতে৷ আর কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল শেষবারের মতো তার বাবার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ চেয়েছেন৷

অন্যদিকে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা এখনো সেখানে অবস্থান করছেন৷ আপিল বিভাগের আদেশের খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ জাতীয় পতাকা এবং মিছিল নিয়ে সেখানে জড়ো হচ্ছেন৷ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেছেন কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অবস্থান করবেন৷ আর নিরাপত্তার জন্য ঢাকাসহ সারাদেশে র‌্যাব-পুলিশ ছাড়াও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে৷


মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

সর্বশেষ আপডেট বৃহষ্পতিবার, 12 ডিসেম্বর, 2013 16:22 GMT 22:22 বাংলাদেশ সময়

বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

বহু নাটকীয়তা শেষে বৃহস্পতিবার রাত দশটার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

সম্পর্কিত বিষয়

দেশটির স্বাধীনতার প্রায় চার দশক পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কারো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো।

এর আগে এই ট্রাইব্যুনালে আরো অনেকেরই সাজা হয়েছে।

কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকার শাহবাগে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা আনন্দ প্রকাশ করতে শুরু করে।

মি. মোল্লাসহ যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে তারা বিক্ষোভ করে আসছিলো।

আর ফাঁসির প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী আগামী রোববার, ১৫ই ডিসেম্বর, সারাদেশে হরতাল ডেকেছে।

রাত ১০টা ১ মিনিট

কারাগারের একজন কর্মকর্তা জানান যে, রাত দশটা এক মিনিটে মি. মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে জেলগেটের সামনে নিরাপত্তা

সেসময় জেলগেটের বাইরে সাংবাদিকদের ভিড়ের মধ্য দিয়ে দুটো অ্যাম্বুলন্সেকে ভেতরে ঢুকতে দেখা যায়।

কারাগারের সামনে থেকে বিবিসির সংবাদদাতা কাদির কল্লোল বলছেন, জেলের চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেওয়ার পর দু'জন ম্যাজিস্ট্রেট কাদের মোল্লার সাথে দেখা করে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে চান কীনা সেবিষয়ে জানতে চান।

কিন্তু এবিষয়ে মি. মোল্লা তাদের কি বলেছেন জানতে চাইলে কারা কর্তৃপক্ষ কিছু বলতে রাজি হয়নি।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর কাদের মোল্লার পরিবারের সদস্যরা আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় আবারও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে তার সাথে দ্বিতীয়বারের মতো দেখা করেছেন।

মি. মোল্লার একজন মেয়ে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তারা নিজের উদ্যোগে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে তার পিতার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।

তিনি জানান, মি. মোল্লা প্রাণভিক্ষার বিষয়ে তার আইনজীবীদের সাথে কথা বলতে চেয়েছেন।

জামায়াতের প্রতিবাদ

কাদের মোল্লার মৃতদেহ জেল থেকে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার পর দলটির পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদে আগামী রোববার সারাদেশে হরতালের ডাক দেওয়া হয়।

দলটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান অগ্রাহ্য করে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে আব্দুল কাদের মোল্লাকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করেছে।'

দলটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, 'এর সাথে যারা জড়িত তাদের করুণ পরিণতি দেশবাসী অতিশ্রীঘ্রই প্রত্যক্ষ করবে।'

পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনসহ পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এই আদেশের পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আইনগত আর কোন বাধা থাকল না। এখন যেকোন সময় এটি কার্যকর করা যেতে পারে। আইসিটি আইন অনুযায়ী এই সাজা বাস্তবায়নে জেলকোড প্রযোজ্য হবে না বলেও তিনি জানান।

তবে মি. মোল্লার আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার আগে সাজাটি কার্যকর করা হবে না বলেই তারা আশা করেন। কারণ সেখানে আদালতের পর্যবেক্ষণ থাকবে বলে আশা করছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সুযোগ মি.মোল্লা নাকচ করেননি বলেই তিনি দাবি করেন।

মঙ্গলবারের স্থগিতাদেশ

এর আগে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার মধ্যরাত বারোটার পর কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে সব প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ।

মি. মোল্লার পরিবারের সদস্যরা আজ আবারও কারাগারে গিয়ে তার সাথে দেখা করেছেন

আবদুল কাদের মোল্লার পরিবারের সদস্যরা জেলে মঙ্গলবার রাতে তার সাথে দেখাও করেন।

পরে মি. মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বিবিসি বাংলাকে জানান, তারা চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সাথে দেখা করে রায় পুনর্বিবেচনা অর্থাৎ রিভিউ-এর আবেদন জমা দেবার পর বিচারপতি হোসেন বুধবার সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর করা স্থগিত করেন।

সেই সাথে আবেদনটি গ্রহণ করা হবে কিনা, সেটি শুনানির জন্যে বুধবার সকালে সময় নির্ধারণ করা হয়।

বুধবার দুই দফায় শুনানির পর বৃহস্পতিবার সকালে শুনানির জন্যে সময় নির্ধারণ করেন প্রধান বিচারপতিসহ পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ।

অপরাধ

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আবদুল কাদের মোল্লাকে ১৯৭১ সালে সংঘটিত হত্যা এবং ধর্ষণের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বে গড়ে উঠা আন্দোলনের চাপে পরবর্তীতে সরকার আইন সংশোধনের মাধ্যমে এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ পরে আবদুল কাদের মোল্লাকে একই অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেন।

http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2013/12/131212_mrk_bangladesh_qader_mollah_war_crime_excecution.shtml

লক্ষীপুরে র‍্যাবের সাথে সংঘর্ষে চারজন নিহত

সায়েদুল ইসলাম

বিবিসি বাংলা, ঢাকা

সর্বশেষ আপডেট বৃহষ্পতিবার, 12 ডিসেম্বর, 2013 12:41 GMT 18:41 বাংলাদেশ সময়

বাংলাদেশে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে আজ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা লক্ষীপুরে কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবউদ্দিন সাবুর বাড়িতে পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব সকালে অভিযান চালালে ১৮ দলীয় জোটের সমর্থকদের সাথে এই সংঘর্ষ শুরু হয় এবং একসময় তা পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে।

সম্পর্কিত বিষয়

স্থানীয় সংবাদদাতারা বলছেন, দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলেছে।

পুলিশ বলছে, এসময় র‍্যাবের সদস্যদের সাথে বিরোধী জোটের কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে।

এদের তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন আর একজনকে জনতা র‍্যাব সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

অবরুদ্ধ র‍্যাব

সংবাদদাতা বলছেন, সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিরোধী জোটের কর্মী ও সমর্থকরা র‍্যাবের সদস্যদের ঘিরে ফেলে।

তাদেরকে উদ্ধার করতে রাজধানী ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে র‍্যাবের আরো কিছু সদস্য পাঠানো হয় লক্ষীপুরে।

এসময় র‍্যাব বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়।

পুলিশ বলছে, বিক্ষোভকারীরা র‍্যাবকে লক্ষ্য করে পাল্টা হাতবোমা ছুঁড়েছে।

সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন কুড়িজনেরও বেশি।

বিএনপির জেলা পর্যায়ের ওই নেতাকেও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে সংবাদদাতারা জানিয়েছেন।

এর প্রতিবাদে বিরোধী জোট আগামী শনিবার লক্ষীপুর জেলায় হরতাল ডেকেছে।

অবরোধের শেষ দিন

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকে তৃতীয় দফার মতো সপ্তাহব্যাপী অবরোধের শেষদিন চলছে।

সবশেষ এই অবরোধ আগামীকাল শুক্রবার সকালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে মানবতা বিরোধী অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আবদুল কাদের মোল্লার রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেয়ার পরপরই দেশের বেশকটি স্থানে সংঘর্ষ শুরু হয়।

অন্যান্য স্থানে সহিংসতা

ফেনী শহরে ও মহাসড়কে রাস্তা গাছ ফেলে আটকে দেয়া হয়। চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, টাঙ্গাইলে কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে।

রাজশাহীতে পুলিশের গাড়ির উপর হামলা করা হয়েছে।

চট্টগ্রামে সহিংসতা

সিলেটে আগে থেকেই হরতাল চলছিল, আদালতের সিদ্ধান্ত আসার পর সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়।

অনেক স্থানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস আর রাবার বুলেট ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে।

গতকাল ফেনীতে কাভার্ড ভ্যানে ঢিলের আঘাতে আহত একজন আজ হাসপাতালে মারা গেছেন। এছাড়া বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকটি জেলা শহরে।

পাবনা, সাতক্ষীরা, চাপাইনবাবগঞ্জে গাছ ফেলে আজও মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়েছে।

মেহেরপুরে ফাইবার অপটিক কেটে ফেলায় জেলাটিতে টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলা যায়।

ঢাকায় আজও একটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে আর ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মিরপুর আর যাত্রাবাড়ীতে ঝটিকা মিছিলের চেষ্টা করলেও পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।

http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2013/12/131212_mrk_bangladesh_blockade_violence.shtml

ফাঁসি কার্যকরে বাধা নেই, জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা শুরু

DW.DE


সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় রিভিউয়ের আবেদন বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিয়েছেন৷ এর ফলে এখন আর ফাঁসির দণ্ড কার্যকরে কোনো বাধা নেই৷

মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ফাঁসি কার্যকর করার কথা থাকলেও কাদের মোল্লার আইনজীবীর আবেদনে তা স্থগিত করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ৷

আপিল বিভাগে কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার বুধবারের মুলতুবি শুনানি শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পর৷ শুনানি শেষে দুপুর ১২টার পর দেয়া রায়ে আপিল বিভাগ কাদের মোল্লার আবেদন খারিজ করে দেন৷ এর ফলে একাত্তরে মু্ক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরে আর কোনো বাধা রইলো না৷ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন ফাঁসির দণ্ড কার্যকর বাধাগ্রস্ত করতে সব ধরণের অপচেষ্টার অবসান ঘটলো৷ এখন আর কোনো বাধা নেই৷

জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে (ফাইল ছবি)

তবে ফাঁসি কার্যকর কখন হবে তা এখনো জানা যায়নি৷ আদেশের পর আইন মন্ত্রণালয় এবং কারা কর্তৃপক্ষ জরুরি বৈঠকে বসেছেন৷ আর কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন আদেশের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পরই জেল কোড মেনে দণ্ড কার্যকর করা যাবে৷

এদিকে আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন দেশের মানুষের চূড়ান্ত বিজয় হয়েছে৷ তিনি বলেন, ''আমরা যুদ্ধে নেমেছি৷ এ যুদ্ধে আমাদের বিজয় হবেই৷''

গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার সব প্রস্তুতি নিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ৷ কাদের মোল্লা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর ঐ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তার আগেই মঙ্গলবার রাতে কাদের মোল্লার আইনজীবীরা অ্যাটর্নি জেনারেলকে না জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছে ফাঁসি কার্যকর স্থগিতের আবেদন জানান৷ চেম্বার জজ তাদের আবেদন গ্রহণ করে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ফাঁসির দণ্ড কার্যকর স্থগিত করেন৷ বুধবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হলে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসি স্থগিতের আদেশ দেন আদালত৷

  • অবশেষে 'মিরপুরের কসাই' কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ

  • ট্রাইব্যুনাল গঠন, বিচার প্রক্রিয়া শুরু

  • ট্রাইব্যুনাল গঠন করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১০ সালে৷ এ বছর প্রথম রায়ে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ বিভিন্ন অভিযাগে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয় 'বাচ্চু রাজাকার' নামে পরিচিত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য আবুল কালাম আযাদকে৷

123456789

আর বৃহস্পতিবার কাদের মোল্লার আবেদন খারিজ হলে ফাঁসির পথে সব বাধা সরে যায়৷ প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে বিচারপতি এস কে সিনহা, আবদুল ওয়াহাব মিয়া, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং এই এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন৷

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগে কাদের মোল্লাকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল৷ আর আইন সংশোধন করে আপিল করা হলে ১৭ সেপ্টেম্বর ফাঁসির দণ্ড দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ৷ গত ৫ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিতহয়৷ ৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে৷

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের পর সারাদেশে জামায়াত-শিবির সহিংসতা শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷ ট্রাইব্যুনাল-১ এর প্রধান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবিরের চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে বুধবার গভীর রাতে৷ আর কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল শেষবারের মতো তার বাবার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ চেয়েছেন৷

অন্যদিকে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা এখনো সেখানে অবস্থান করছেন৷ আপিল বিভাগের আদেশের খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ জাতীয় পতাকা এবং মিছিল নিয়ে সেখানে জড়ো হচ্ছেন৷ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেছেন কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অবস্থান করবেন৷ আর নিরাপত্তার জন্য ঢাকাসহ সারাদেশে র‌্যাব-পুলিশ ছাড়াও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে৷

ঝুলছে কাদের মোল্লার ফাঁসি, সারাদেশে সহিংসতা

DW.DE


কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশনের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি বৃহস্পতিবারও চলবে৷ শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা যাবে না৷ অন্যদিকে এই দণ্ড রদের দাবিতে জামায়াত-শিবির ব্যাপক সহিংসতা চালাচ্ছে৷

কাদের মোল্লার 'বিজয়চিহ্ন'

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার মঙ্গলবার মধ্যরাতে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করার কয়েক ঘণ্টা আগে তা স্থগিত করে দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ৷ কাদের মোল্লার আইনজীবীদের আবেদনে তিনি এই স্থগিতাদেশ দেন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত৷ তবে তার আগেই বুধবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়৷ কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক রিভিউ আবেদন করার কথা বলে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিতের আবেদন জানান৷ আর বলেন, শুনানির প্রস্তুতির জন্য তার দুই দিন সময় লাগবে৷

  • অবশেষে 'মিরপুরের কসাই' কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ

  • ট্রাইব্যুনাল গঠন, বিচার প্রক্রিয়া শুরু

  • ট্রাইব্যুনাল গঠন করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১০ সালে৷ এ বছর প্রথম রায়ে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ বিভিন্ন অভিযাগে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয় 'বাচ্চু রাজাকার' নামে পরিচিত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য আবুল কালাম আযাদকে৷

123456789

তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ''এই মামলায় রিভিউ আবেদনের কোন সুযোগ নেই৷'' তিনি অভিযোগ করেন, ''অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে না জানিয়েই একতরফাভাবে মঙ্গলবার রাতে আসামি পক্ষ চেম্বার জজের কাছে গিয়ে স্থগিতাদেশ আনেন৷'' আদালত এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দুপুর পর্যন্ত শুনানি অব্যাহত রাখেন৷ আসামি পক্ষের সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে দুপরে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত রিভিউয়ের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি মুলতুবি করেন৷ আশা করা যায় বৃহস্পতিবার শুনানি শেষ হবে৷

শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ৷ প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে বিচারপতি এস কে সিনহা, আবদুল ওয়াহাব মিয়া, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং এই এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই শুনানি করছে৷

এদিকে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বুধবার চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান নাভি পিল্লাই ৷ তিনি বলেছেন, ''আন্তর্জাতিক বিচারের মানদণ্ড অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়া যায় না৷'' ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যও কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে৷ তারা অবশ্য দণ্ড হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে৷

অন্যদিকে কাদের মোল্লার ফাঁসি বাতিলের দাবিতে জামায়াত-শিবিরের সহিংসতায় মঙ্গলবার রাত থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে পাঁচ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ আগুন দেয়া হয়েছে আপিল বিভাগে কাদের মোল্লার মামলার পাঁচ বিচারপতির একজন এস কে সিনহার মৌলভীবাজারের গ্রামের বাড়িতে৷ তবে ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না৷

শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা আবারও অবস্থান নিয়েছেন

রাজশাহী, সিলেট, বগুড়া, চট্টগ্রাম, নাটোর, গাইবন্ধা, কুষ্টিয়া ও খুলনায় ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে৷ এসব এলাকায় পুলিশ ও পুলিশের গাড়ির ওপরে হামলা, সড়ক অবরোধ, যানবাহনে আগুন এবং ককটেল ফাটানো হয়েছে৷ ঢাকায়ও পুলিশের গাড়িতে হামলা হয়েছে৷ জামায়াতে ইসলামী এক বিবৃতিতে বলেছে, ''কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হলে পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর৷'' এর ফলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হবে বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে৷

অন্যদিকে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা আবারও অবস্থান নিয়েছেন৷ তাঁরা বলেছেন,কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন৷ গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, ''রাতের আধারে ফাঁসির দণ্ড কার্যকারিতা স্থগিতের ঘটনা তারা স্বাভাবিক মনে করছেন না৷ তাই দণ্ড কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না৷''

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে কাদের মোল্লাকে গত ১৭ই সেপ্টেম্বর ফাঁসির দণ্ড দেয় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ৷ গত ৫ই ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়৷ ৭ই ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে৷

'কাদের মোল্লার ফাঁসি ষড়যন্ত্র: রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ'

DW.DE


কাদের মোল্লার ফাঁসি স্থগিতের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ব্লগে অনেকেই অনেক মন্তব্য করেছেন৷ তাদের কয়েকজনের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হলো ডয়চে ভেলের ব্লগওয়াচে৷

সামহয়্যারইন ব্লগে রেজা ঘটক লিখেছেন, কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে৷ তিনি বেশ কিছু প্রশ্ন রেখেছেন৷ প্রথম প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন কি প্রধান বিচারপতির অনুমতি ছাড়াই জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিত করতে পারেন? যদি পারেন, সেখানে সরকার পক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না কেন? শুধুমাত্র আসামি পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কি চেম্বার আদালত বসতে পারে?

তিনি আরো লিখেছেন, এখন বিষয়টি যদি চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ব্যাখ্যা না করেন, তাহলে এই স্থগিত আদেশ নিয়ে ফুল বেঞ্চে আবার হয়তো উভয় পক্ষের বিতর্ক করতে হবে৷ সেই বিতর্কের শেষে আবার হয়তো কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের উপর রিভিউ আদেশ আসবে৷ সেই রিভিউ করতে আরো সময় লাগবে?

রেজা ঘটক লিখেছেন, কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার নাভি পিল্লাই৷ এর আগে সোমবার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের স্বাধীন দুই বিশেষজ্ঞ গাব্রিয়েলা নাউল ও ক্রিস্টফ হেইন্স এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন৷

তিনি কতগুলোপ্রশ্ন রেখেছেন, ''জাতিসংঘ মানবাধিকারের নামে এখন যে কাজটি করতে এতো বেশি তৎপর, ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করার সময়, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির সময়, সারা বাংলাদেশে হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নি-সংযোগের সময় এই জাতিসংঘ তখন কোথায় লুকিয়ে ছিল? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ন্যুরেমবের্গ আদালতে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময়তো এতো সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি? টোকিও আদালতেতো যুদ্ধাপরাধীদের ওতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়নি? কম্বোডিয়া, বসনিয়া, এমনকি ইরাকে স্বয়ং সাদ্দাম হোসেনের বিচারেতো এতো সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি? তাহলে স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে কেন বাংলাদেশে এতো সুযোগ সুবিধা দিয়ে বিচার করতে হবে?''

তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশে কোনো স্বাধীনতা বিরোধী পরাজিত অপশক্তির উপস্থিতি আর দেখতে চাই না৷ কাদের মোল্লার ফাঁসি হবে৷ বাংলার মাটিতেই হবে সেই ফাঁসি৷

আমারব্লগে আল্লামা আব্দুল কাদের লিখেছেন, ''বাঙালি জাতির জেগে ওঠার সর্বশেষ সুযোগ৷'' তিনি লিখেছেন, কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা যাবে কি যাবে না, সেটার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ৷ এর ওপরই নির্ধারিত হবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে সামনের দিকে এগোবে, নাকি আফগানিস্তান, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশের মতো ইসলামি চেতনা ধারণ করে সময়ের পেছন দিকে চলবে৷

জামায়াতে ইসলামী শুধু মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতাই করেনি, তারা তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে এক জোট হয়ে এদেশের লাখ-লাখ মানুষকে হত্যা করতে বা লাখ-লাখ মা বোনকে ধর্ষণ করতে সাহায্য করেছে৷ ৪২ বছরেও তারা তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, ভুল স্বীকারও করে নি৷

তিনি লিখেছেন, তারা দেশ-বিদেশের আর্থিক ও নৈতিক সমর্থনে দেশের মানুষের মধ্যে ধর্মকে ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারে উদ্যত হয়েছে৷ দেশের একটা উল্লেখযোগ্য অংশকেই তারা তাদের পক্ষে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে৷

একই ব্লগে তৈফুর ভুইয়া নিলয় লিখেছেন, যে দাবিতে সারা বাংলা আজ অবিভক্ত এবং এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে সেই রাজাকারদের বিচার নিয়ে হচ্ছে প্রহসন৷

তিনি লিখেছেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম ছিল স্বার্থপর৷ এরা নিজেরা এতদিন রাজাকারদের বিচার চায়নি বরং এদের বৃহৎ একটা অংশ বিএনপি আর জামাতকে সাপোর্ট করে এসেছে৷ ''এ দেশে রাষ্ট্রপ্রধানের পরিবারের খুনিদের বিচার সম্ভব হলেও সমস্ত বাঙালি জাতির খুনিদের বিচার নিয়ে হয় প্রহসন লীলা৷ এ দেশে রাজাকারদের সাপোর্ট না করলে নাস্তিক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রিকারী দালালদের সাপোর্ট না করলে রাজাকার, আর মুক্তমনে জনতার কাতারে এসে জনতার দাবি নিয়ে কথা বললেই চাইনিজ বাম, ইত্যাদি নানান রকম উপাধি দিয়ে দেয়া হয়৷ অথচ যে দাবিতে সারা বাংলা আজ অবিভক্ত এবং এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে সেই রাজাকারদের বিচার নিয়ে হয় প্রহসন৷''

সামহয়্যার ইন ব্লগে রাজীব নূর লিখেছেন, ''আজকের তারিখটা খুব সুন্দর ১১/১২/১৩৷ আজ কি কোনো বিশেষ দিন? দেশের অবস্থা ভালো না, হরতাল অবরোধ চলছে৷ জাতিসংঘ থেকে তারানকো এসেও হরতাল-অবরোধ বন্ধ করতে পারলেন না৷....আজ কসাই কাদেরের ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল না! কিন্তু হলো না৷ কাদের মোল্লার বউ এর ভি চিহ্ন এর মানে কি? ফাঁসির দেড় ঘণ্টা আগে রায় কার্যকর না করার বিচারিক নির্দেশ বেশ রহস্যময়৷ এত সহজে কসাই কাদের পার পেলে চলবে? সত্যিই বিচিত্র এ দেশ ! সেলুকাস! কাদের মোল্লার মতো নরপশু যেন বাংলাদেশে আর জন্মগ্রহণ না করে৷''

একই ব্লগে শাহ আজিজ প্রশ্ন তুলেছেন, এই ফাঁসি কি আর হবে??

তিনি লিখেছেন, ''ফাঁসির দেড় ঘণ্টা আগে রায় কার্যকর না করার বিচারিক নির্দেশ বেশ রহস্যময়৷ আমি এই ধরনের ঘটনা সিনেমাতে দেখেছি৷ সাধারণত দেখা যায় ফাঁসির পূর্ব মুহূর্তে তা স্থগিত হলে সেই ফাঁসি আর কার্যকর হয় না৷ এটা আবার রিভিউ হবে এবং আসামির উকিলরা এর ভিতরের অসঙ্গতি তুলে ইঞ্জাংসন চাইবেন৷''

খান ইখতিয়ারের প্রশ্ন, মানবাধিকারের জাতিসংঘীয় সংজ্ঞা কি আলাদা? তিনি লিখেছেন, ''মিরপুরের কসাইখ্যাত কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার কথা শুনে জাতিসংঘের তথাকথিত মানবাধিকারের সোল এজেন্টদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে৷ ফাঁসি কার্যকর না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে, চিঠি পাঠিয়েছে, আবার মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে৷ জানতে বড়ই ইচ্ছে করছে এদের কাছে মানবাধিকারের সংজ্ঞাটা কি? মানবাধিকার কি শুধুই তাদের আজ্ঞাবহদের পৈত্রিক সম্পত্তি?''

তাঁর আরও প্রশ্ন, ''তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল যখন পাক হায়েনাদের সহযোগী হয়ে এসব নরপশুরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলা মায়ের আপামর জনতার উপর? তাদের মানবাধিকার কোথায় থাকে যখন এখনো এসব নরপশুর দোসরদের তাণ্ডবে জীবন্ত দগ্ধ হয় নিরপরাধ মানুষ? নাকি শুধুমাত্র বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য তোমাদের মানবাধিকার উথলে উঠে?''

সংকলন : অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা : জাহিদুল হক

বাংলাদেশে ফের সেনাদের মদতে একটি শক্তির অভ্যুত্থানের আশংকা আনন্দবাজারের

বুধবার, 04 ডিসেম্বর 2013 08:51

0 COMMENTS

বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৩

ডেস্ক : 'ভোটে নেই এরশাদও, আজ যাচ্ছেন সুজাতা'- শিরোনামের একটি খবরে ভারতের বাংলা ভাষার প্রভাবশালী পত্রিকা আনন্দবাজার বাংলাদেশে ফের সেনাদের মদতে একটি শক্তির অভ্যুত্থানের আশংকা প্রকাশ করেছে।

রিপোর্টে তারা উল্লেখ করেছে, ' জাতীয় পার্টির নেতা হুসেইন মহম্মদ এরশাদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট আরও জটিল হল। এ দিকে বিএনপি ও তাদের শরিক জামাতে ইসলামি নির্বাচন বয়কট করে অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন হিংসাত্মক ঘটনায় মঙ্গলবারও দেশের নানা জায়গায় অন্তত ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতেই কাল ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া ও এরশাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ভারতের বিদেশসচিব সুজাতা সিংহ। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, অচলাবস্থা নিরসনে আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য খালেদা ও এরশাদের কাছে আর্জি জানাতে পারেন সুজাতা।

পাঁচ বছর আওয়ামি লিগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের শরিক থাকার পরে আসন্ন নির্বাচনে একলা লড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন এরশাদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গড়েছেন, তাতেও এরশাদের দলের ৫ জন পূর্ণমন্ত্রী ও ২ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন। আজ (গতকাল) সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এই প্রাক্তন সেনাপ্রধান তথা স্বৈরশাসক হঠাৎই জানিয়ে দেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করার পরিস্থিতি না থাকায় তাঁর দল লড়বে না। জাতীয় পার্টির যে শ'খানেক প্রার্থী ইতিমধ্যেই মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন, তাঁদের তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় বিএনপি-র কর্মীরা অনেক জায়গায় মিস্টি বিলি করলেও দলের নেতারা জানিয়েছেন, বারে বারে অবস্থান পাল্টানো এরশাদকে তাঁরা বিশেষ ভরসা করছেন না। তাঁর দল নির্বাচনে অংশ না নিলেও অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভায় থাকবে বলে জানিয়েছেন এরশাদ। তবে এরশাদের ঘোষণাকে 'প্রথমিক ভাবে স্বাগত' জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি-র মুখপাত্র সালাউদ্দিন আহমেদ।

আওয়ামি লিগ অবশ্য এরশাদের ঘোষণাকে হালকা করেই দেখেছে। দলের নেতা যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ওদায়েদুল কাদের বলেন, "উনি এ বেলা যা বলেন, ও বেলা তার উল্টো বলেন। এ বারেও তার অন্যথা হবে না।" ২০০৮-এর নির্বাচনে মহাজোটের শরিক হিসেবে ৪৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২৭টি আসন জিতেছিল এরশাদের জাতীয় পার্টি। বিএনপি জিতেছিল ২৯টি। মহাজোট সূত্রের খবর, এ বার আওয়ামি লিগের কাছে ৬০ থেকে ৬৫টি আসন দাবি করে না-পাওয়াতেই প্রথমে 'একলা চলো' ও পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেছেন এরশাদ। আওয়ামি লিগ নেতা তোফায়েল আহমেদও আজ ইঙ্গিত দিয়েছেন, আসন নিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে মিটমাট হয়ে যাবে।

বাংলাদেশের এই হিংসা ও অস্থিতিশীলতা ভারতের পক্ষে দুশ্চিন্তার। ইতিমধ্যেই বরিশাল, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, কুষ্ঠিয়া ইত্যাদি অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের ওপর পরিকল্পিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। দিল্লির আশঙ্কা, নিরাপত্তার অভাবে বাংলাদেশে থেকে বহু মানুষ, বিশেষত সংখ্যালঘুদের একটা অংশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে আসতে চাইবেন। গা-ঢাকা দিতে দুষ্কৃতীরাও অনুপ্রবেশ করতে পারে। ২০০৬-এ এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশে সেনাদের মদতে একটি শক্তি অভ্যুত্থান করে ক্ষমতা দখল করেছিল। এ বারও সেই আশঙ্কা থেকেই যায়। এই পরিস্থিতিতে ঢাকা সফরে এসে বিদেশমন্ত্রী আবুল হোসেন মাহমুদ আলি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া খালেদা জিয়া ও এরশাদের মতো বিরোধী নেতা-নেত্রীদের সঙ্গেও দেখা করে নয়াদিল্লির অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন ভারতের নতুন বিদেশসচিব সুজাতা সিংহ। দু'দিনের সফর সেরে বৃহস্পতিবার দিল্লি ফিরে বাংলাদেশের আশু পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের কাছে একটি রিপোর্টও তাঁর দেওয়ার কথা। তার পরে শুক্রবারই ঢাকা এসে সঙ্কট নিরসনের চেষ্টা চালাবেন রাষ্ট্রপুঞ্জের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্ডেজ তারানকো। এর আগে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে দু'দুটি চিঠি পাঠিয়ে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন।

'তফসিল স্থগিত করুন, সুযোগ এখনো আছে' - খালেদা জিয়া

মঙ্গলবার, 03 ডিসেম্বর 2013 06:01

0 COMMENTS

মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৩

বাপ্‌স নিউজ :  বস্টন বাংলা নিউজ : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল স্থগিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানিয়ে ইসি'র উদ্দেশে তিনি বলেছেন, প্রহসনের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়ে বিশেষ দলের ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহূত না হয়ে তফসিল স্থগিত করে দেশকে বাঁচান। একইসঙ্গে সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, উত্পীড়ন, নির্মুলের পথ ছেড়ে সমঝোতার পথে আসার সুযোগ এখনো আছে। প্রহসনের নির্বাচনে অপরাপর দল ও জনগণকে জড়িত না হওয়ার জন্যও অনুরোধ জানান তিনি।


বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি রাত ৮টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। এতে খালেদা জিয়া বলেন, আমি গত পাঁচ বছরে উত্পীড়িত ও ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয় না। ইনশাল্লাহ, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত ও অতি নিকটবর্তী।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমার আহ্বান, আপনারা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন। জনগণের প্রতিপক্ষে অবস্থান নেবেন না।


খালেদা জিয়া বলেন, আমি সরকারকে বলব, যেভাবেই হোক আপনারা ক্ষমতার মসনদে আঁকড়ে রয়েছেন। দমননীতি ছেড়ে এখন সমঝোতার পথে আসুন। চক্রান্ত ও অন্তর্ঘাতের পথ পরিহার করে শান্তি ফিরিয়ে আনুন।


চলমান সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে খালেদা জিয়া বলেন, গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংসের উদ্দেশে ধ্বংসাত্মক তত্পরতার প্যাটার্নের সঙ্গে আগেকার আওয়ামী সন্ত্রাস হুবহু মিলে যাওয়ায় সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, নৃশংস এসব প্রাণসংহার ও ধ্বংসযজ্ঞের মূল হোতা আওয়ামী সন্ত্রাসীরাই।


তিনি বলেন, বিভিন্ন বন্ধুদেশ ও জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় দেশের চলমান পরিস্থিতিতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। দেশবাসী প্রচণ্ড আতঙ্কিত। কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে এহেন ঘৃণ্য কার্যকলাপ ও অনিশ্চিত পরিস্থিতি চলতে পারে না। অথচ সরকার সম্পূর্ণ নির্বিকার। তারা পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং এ নিয়ে সংকীর্ণ রাজনীতি ও প্রচার চালিয়ে ফায়দা হাসিলের অপতত্পরতায় লিপ্ত রয়েছে।


সরকারের 'দমননীতির' সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সরকার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় থেকে বিরোধী দলকে তাড়া করে ফিরছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ছত্রছায়ায় দলীয় সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র অবস্থায় রাজপথে নামিয়ে আমাদের অফিস অবরুদ্ধ করে রেখে বিরোধী দলকে মাঠে নামার আহ্বান জানাচ্ছেন। আর দাবি করছেন, দেশে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের পরিবেশ রয়েছে, এটা কেউ মেনে নেবে না।


বিবৃতিতে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের কথা তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, নাশকতার ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার বা শনাক্ত না করে সঙ্গে সঙ্গে বিনা তথ্য প্রমাণে বিরোধী দলের নেতাদের হুকুমের আসামি করে যেভাবে মামলা হচ্ছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে, মামলা দায়ের, নেতাদের গ্রেপ্তার, আন্দোলন দমন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জনমতকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে সুপরিকল্পিতভাবে এসব নৃশংস তত্পরতা চালানো হচ্ছে।


গণমাধ্যমের ওপর সরকারের 'হস্তক্ষেপের' কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন ও সরকারের সমালোচনার দায়ে অনেকগুলো প্রাইভেট টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্র রেখে রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম ও শাসকদলের সমর্থনপুষ্ট কিছু গণমাধ্যমকে দিয়েও আজ বিরোধী দলের বিরুদ্ধে একতরফা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভিন্নমত দমনের মাধ্যমে দেশে ভারসাম্যহীন এক অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।


বিবৃতির প্রথমে যাত্রীবাহী যানবাহনে বোমার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, 'এসব বর্বর হামলা ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা নিরাপত্তা বাহিনীর সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানের ভেতরে এসব নারকীয় হামলার ঘটনায় দেশবাসীর মতো আমিও প্রবলভাবে বিস্মিত। এমন বীভত্স ঘটনা ঘটিয়ে অপরাধীরা নিরাপদে পার পেয়ে যাওয়া এবং এ পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে একজনও গ্রেপ্তার না হওয়ার রহস্য কারো কাছে বোধগম্য নয়। পরিকল্পিত নাশকতায় যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সহানুভূতি ও সমবেদনা।


বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, আমি বিরোধী দলের নেতা। অথচ গুলশানে আমার স্বাভাবিক কার্যক্রম পর্যন্ত পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য তত্পরতার কারণে চলতে পারছে না। আমার বিশেষ সহকারীকে আটক রাখা হয়েছে। অন্যরাও স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে পারছে না।


বিবৃতিতে নয়াপল্টনের কার্যালয়ে ভোররাতে পুলিশি অভিযানের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে এ ধরনের কর্মকাণ্ড একাত্তরের হানাদার বাহিনীর আক্রমণের কথা মনে করিয়ে দেয়। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেপ্তার ও সালাহউদ্দিন আহমেদের বাড়িতে পুলিশি তল্লাশির সমালোচনা করে দলের চেয়ারপারসন বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদ আত্মগোপনে থেকে দলের বক্তব্য নানা রকম ঘুরপথে প্রচারের জন্য এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছেন।




No comments:

Post a Comment