Thursday, March 21, 2013

জয়পুর চন্ডীগড় একাকার হয়ে গেছে বাঙ্গালি সমাজবিজ্ঞানী ও সাবআলটার্ণ বুদ্ধিজীবীদের দৌলতে!সব শিয়ালের এক রা ! আম্বেদকরের Social Inclusion Doctrine ধবংস কর ! পলাশ বিশ্বাস

জয়পুর চন্ডীগড় একাকার হয়ে গেছে বাঙ্গালি 


সমাজবিজ্ঞানী ও সাবআলটার্ণ বুদ্ধিজীবীদের দৌলতে!সব 

শিয়ালের এক রা ! 

আম্বেদকরের Social Inclusion Doctrine ধবংস কর !

পলাশ বিশ্বাস

Himalayan Voice: Bamcef Unification

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS ON NEPALI SENTIMENT, GORKHALAND, KUMAON AND GARHWAL ETC.and BAMCEF UNIFICATION! Published on Mar 19, 2013 The Himalayan Voice Cambridge, Massachusetts United States of America



শরদিন্দুকে ধন্যবাদ এ ই লেখাটি লেখার জন্য!বাকী দেশে 

অন্য ভাষায় আম্বেডকর আন্দোলন নিয়ে যে খোলা বিতর্ক 

শুরু হয়েচে, সে সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়ার জন্য!

জয়পুর চন্ডীগড় একাকার হয়ে গেছে বাঙ্গালি 


সমাজবিজ্ঞানী ও সাবআলটার্ণ বুদ্ধিজীবীদের দৌলতে!



বাংলা দলিত আন্দোলন দখল করে বসে আছেন এরাঁ


দলিত সাহিত্যেও এঁদেরই জয়জয়কার!লোক সাহিত্য, 



লোক সঙ্গীতে ও এঁদেরই আধিপাত্য! বাঙ্গালি অর্থনীতি 


বিদ, বাঙ্গালি রাজনৈতিক নেতারা ও বিশেষকরে এই 


সাবআলটর্ণ সমাজবিজ্ঞানী সমুহ ভারতে বহুজনসমাজের 

আন্দোলন কে নসাত করতে আম্বেডকরের পিছনে 



লেগেছেন!আনন্দ তেলতুম্বড়ের বক্তব্যকে বিকৃত 

করেছেন!আনন্দ বক্তব্য জারি করে বলেছেন যে 


ব্রাহ্মণ্যতান্ত্রিক মানসিকতায়, হিন্দুত্বের এজন্ডায় 


বামপন্থীরা সবচেয়ে আক্রামক আম্বেডকরের বিরুদ্ধে!



আম্বেডকরকে সাম্রাজ্যবাদ পুঁজিবাদের সমর্থক বলেই 

ক্ষান্ত হননি!আম্বেডকররের লেখাকে ভারতে মুক্ত 



বাজারের পরিকাঠামো সাব্যাস্ত করছেন! খোলাখুলি 


সিপিএম, সিপিআই ও লিবারেশন কে সংশোধনবাদী 

গদ্দার বলে উদাত্ত আহ্বান করছেন আম্বেডকরকে 


বিসর্জন করতে!আম্বেডকরের সংবিধান রদ করতে


সংরক্ষণকে অপ্রাসঙ্গিক ও আম্বেডকর অনুযায়ীদের 

সংরক্ষণে মলাইদার হয়ে যাওয়া অর্দ্ধশিক্ষিত বলছেন!তবু 

বাংলার বহুজন সমাজে প্রতিক্রিয়া নেই!বাংলার 

বামপন্থীরা যারা মার্ক্স আম্বেডকর রবীন্দ্রকে নিয়ে ভোট 

দখলের রাজনীতি করছেন তাঁরা গাল খেয়ে হজম


 করছেন !উদ্দীপনের লেখার সঙ্গে লিন্ক দিয়ে দিলাম !পড়ে 

নিন!


সব শিয়ালের এক রা ! 

আম্বেদকরের Social Inclusion Doctrine ধবংস কর !
 
শরদিন্দু উদ্দীপন 


ভারতের কোন রাজনৈতিক দল জাতপাত চূর্ণ করে মানুষের মধ্যে চিরায়ত বিভেদের দেয়ালটিকে ভাঙতে চায়নি। বরং সযত্নে লালন করেছে। পালন করেছে। আলাদা আলাদা কক্ষের(সেল)আলাদা আলাদা তালা ঝুলিয়ে
(সংখ্যা লঘু,এসসি/এসটি,ওবিসি ইত্যাদি)বিভেদটিকে একটি চিরস্থায়ী বন্দবস্তে পরিণত করে ফেলেছে। আম্বেদকর  দর্শণ জাতপাত ভাঙ্গার কথা বলে। বহুজনের পারস্পরিক সহাবস্থানের ভিত্তিতে বিভেদের শেকড় সমূলে উৎপাটন করার কথা বলে। 
আম্বেদকর  দর্শণের এটাই সব থেকে বড় মূলধন। 

ভারতীয় বহুজন সমাজ জাতপাতের কারণেই বঞ্চনার স্বীকার । হিন্দু বর্ণ ব্যবস্থায় সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষকেই জাতের জাঁতাকলে সর্বহারা করা হয়েছে যুগ যুগ ধরে। 
জাতপাতকে ধর্মীয় মহিমা দিয়ে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ রাষ্ট্রীয় উৎপাদনের প্রায় সবটাই আত্মসাৎ করছে এটা অবশ্যই রাজনীতি।
যে রাজনীতির পেষা কলে ফেলে সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষকে শুধু সম্পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়নি,মর্যাদাহীন করে পশুসুলভ জীবন 
যাপন করতে বাধ্য করা হয়েছে। বঞ্চিতের আত্ম বিকাশের অন্তরায়,শোষণ যন্ত্রের এই জগদ্দল পাথরটাকে গুড়িয়ে দেওয়াই আম্বেদকরের মিশন । 

এই মিশন "Survival for the fittest"নয় । নয়  struggle for exhistance এর 
উন্মত্ত রণহুঙ্কার। বা প্রতিশোধ পরায়ণ ক্ষমতা দখলের দস্তাবেজ ।  যে লড়াইয়ের অন্য প্রান্তে অবস্থান করে শ্রেণী শ্ত্রু। যাকে রণনীতি বা রণকৌশলের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে পরাভূত করে প্রোলেতারিয়েতের শাসন কায়েম করতে হয় । এই আদিম হিংস্র মানবিকতার বৈদেশিক ব্যখ্যা আম্বেদকরবাদে জায়গা পায়নি। বরং পরম মিত্রতা বা ভাইচারাই চিরস্থায়ী ভাবে বৈরিতার অবসান ঘটাতে পারে, ভারতীয় দর্শনের এই অমর বাণী তিনি মেনে নিলেন।"NAHI BERENA BERANI SAMANTIDHA KUDACHANANG. ABERENA CHA SAMMANTI ESO DHAMMO SANATANO"।    
           
সমাজ বিবর্তনের ইতিহাসে বাবা সাহেব ডঃ বি আর আম্বেদ করের মতাদর্শ কালের এক অনিবার্য ভবিষ্যলিপি। এ মতাদর্শ শুধুমাত্র ভারতবর্ষে নয় বরং সমগ্র পৃথিবীর মঙ্গল বার্তা হিসেবে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। 
কলোম্বিয়া ইউনিভার্সিটির "ম্যান অব দি মিলেনিয়াম" খেতাব এবং অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির "১০০০ বছরের সেরা মনিষী" উপাধি লাভ এই দাবীকে আরো জোরালো করে তুলেছে। 
পৃথিবীর সর্বজনের কল্যাণে ক্রমপ্রকাশিত এই আলোক বর্তিকা যে মহামিলনের এক ক্ষেত্রে পরিণত হবে তার আভাস কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে দিকে দিকে। 

এতে প্রোমাদ গুনতে শুরু করেছে মনুবাদীরা। যাদের এক এবং অদ্বিতীয় এজেন্ডা বর্ণ ব্যবস্থা কায়েম রাখা। এবং আম্বেদকর নির্মিত ভারতীয় সংবিধান সম্পূর্ণ ধ্বংস করে মনুস্মৃতিকে সংবিধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। 
এ বিষয়ে ২০০৬ সালে বাবরি মসজিদ গুড়িয়ে দেবার পর যে গোপন এজেন্ডা তৈরি করা হয়েছিল তার একটি ধারা এখানে সংযোজিত করলামঃ
" Aj se lagbhag 2000 barsha purba biswa me baudhha dharma ke falte prabhutya ko rokne aaur use samapt karne ke lie hamare purbaja Aadi Snakarachariya bho Gita me ek bisesh Sloka yada yada hi dharmaswa samil kraya gaya. Jiska Arth hay ki jab jab hindu dharma ko koi hani krega may adi sankarachariya usi dharma ya us byakti ko nasht karne ke liye har yug me janm lunga. Aj phir bho samay aa gaya hay ki adharmi Ambedkar ke karan boudhha dharma puna astitya me ane laga hay……Aj hamara ek hi uddeshya hay ki Ambedkar, Ishai missionary ke bacho ko jinda jalaya tatha anushuchit jati, janajati, anna pichhrebarga ke Arakshan ko Supreme Court ke Jajo ki madadse Arakshan samapt krabaya. Ab hamara ek Ambedkar ke sanbidhan ko purnata nast karke desh me lokatantra ke sthan par Ram Rajjya ki sthapana, Bharat ko Hindu rashtra Ghoshit karne, Sanskrit ko rashtrabhasha banana, tatha Manusmriti ke adhar par sanbidhan ki nayi rachana karne ki Aur sanshad me Ambedkar ki murti ko nast karke uske sthan par Manu ki bishal pratima sthapit karna". (After demolishing the Babri Mosque, Hindu Dharnma Sanshad dwara Anumodita Gopaniya Dastabej, Agenda No. 19) 
সাম্প্রতি বিজেপির ঘোষিত প্রধান মন্ত্রী পদের দাবিদার গুজরাট গণহত্যার নায়ক মোদির ভাষণে এই জায়নবাদী যুদ্ধের দামামা আমরা শুনতে পেয়েছি। 

কিন্তু সব থেকে অবাক করে দিয়েছে বামপন্থীদের আগাম বার্তা। মনুবাদীদের সাথে একই সুরে সুর মিলিয়ে বাবা সাহেব ডঃ বি আর আম্বেদ করের বিরুদ্ধে যুদ্ধোন্মাদনা! এই যুদ্ধের মাষ্টার প্লান যে একই চৌখুপির আদলে তৈরি হয়েছে তা বোঝা যায় পরপর দুটি সম্মেলন থেকে। প্রথমটি সমাজবিজ্ঞানী আশিস নন্দীর জয়পুর কর্পোরেট বই মেলা এবং অপরটি চন্ডীগড়ে আয়োজিত কোলকাতার  বামপন্থি বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা পরিচালিত সেন্টার ফর সোস্যাল স্টাডিজ এর  জাতি বিমর্শ সম্মেলন। এই দুটি সম্মেলনের চরিত্রই এক। একই সুরে ভিন্ন গান। একটিতে মূলনিবাসী বহুজন সমাজকে ভ্রষ্টাচারের জন্য অপরাধী ঘোষণা। 
অন্যটিতে  মুলনিবাসী বহুজন সমাজের রাষ্ট্র ক্ষমতা অর্জনের ভাগিদারী সামাজিক শৈলীর নির্মাতা বাবা সাহেব ডঃ বিআর আম্বেডকরকে খারিজ করে দেওয়া ! 

জয়পুর সাহিত্য সম্মলনের মতই চণ্ডীগড় সম্মেলনও বহুজনবিরোধী মঞ্চে পরিণত হয় এবং সেখানে আম্বেডকরকে ভারতীয় আর্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অপ্রাসঙ্গিক হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং তাঁকে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের সমর্থক সাব্যস্ত করার প্রবল চেষ্টা হয়!

অর্থাৎ মূলনিবাসী বহুজনের স্বাধিকার, আত্তবিকাশ, আত্তমর্যাদা,স্বশক্তিকরন ও সক্ষমতা আর্জনের বিপক্ষে মাক্সবাদী-গান্ধীবাদী-মনুবাদীরা সব এক। একই সঙ্গে এটাও পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, বিভিন্ন মতাদর্শের বিচিত্র রঙা সাইনবোর্ডের আড়ালে লুকিয়ে থাকলেও আসলে ওরা এক। ওরা বুঝতে পেরেছে যে, বাবা সাহেবের Social inclusive doctrine ৮৫% মূলনিবাসী বহুজন সমাজকে কেন্দ্রীভূত করে তুলবে। এবং এই ভাগিদারী সামাজিক শৈলী মুলনিবাসী বহুজনদের রাষ্ট্র ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে নিয়ে আসবে। 
এবং শ্রেণি-সংগ্রামহীন, হিংসাশ্রয়ী রক্তরঞ্জিত যুদ্ধ ছাড়াই সংঘটিত হবে এক নিঃশব্দ রাষ্ট্র বিপ্লব। সর্বজনের কল্যাণে সর্বজনের রাষ্ট্রীয় উত্থান। আত্তউপলব্ধি ও আত্তিকরণের এমন নিঃশব্দ সামাজিক নির্মাণ সাধিত হলে একই সঙ্গে চতুর্বর্ণের ঘৃণার পাহাড় এবং শোষক-শোষিতের আজন্ম লড়াইয়ের মিথ্যে ধাপ্পা আস্তাকুড়ে জায়গা নেবে। 

এটাই ওদের ভয়। তাই সব শিয়ালের এক রা ! একই সঙ্গে (মাক্সবাদ +মনুবাদ+গান্ধীবাদ)আক্রমণ শানাও। ত্রিশূল আর কাস্তেতে শান দাও। রামধুন জপ করো।   মাওবাদীদের আমদানি করো। মোদির সাথে গলা মিলিয়ে বল ভারত নির্মাণের জন্য যুদ্ধ চাই। মহাপ্রলয় ছাড়া মহা নির্মাণ হয়না।

না, এ আশঙ্কা একেবারে অনৈতিহাসিক নয়। বরং বাবাসাহেব এমনটাই ভবিষ্যবানী করেছিলেন। মাক্সবাদকে সমাজ পরিবর্তনের একটি অনবদ্য পন্থা হিসেবে স্বীকার করলেও ভারতীয় মাক্সবাদীদের প্রতি তার কোন বিশ্বাস ছিলনা। বরং তিনি বলেছিলেন যে, এরা সবুজ ঘাসের আড়ালে লুকিয়ে থাকে দুমুখো বিষধর সাপ। সুজোগ পেলেই ছোবল মারবে। মনুবাদীদের বংশধরেরাই মাক্সবাদীদের ডিক্লাসড লিডার। তাই মার্ক্সবাদের নামে এরা মনুবাদকেই কায়েম করবে। 
এই বিষয়টি আরো পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন মান্যবর কাশীরাম জি। তার অমোঘ ঘোষণা ছিল, মূলনিবাসীরা রাজনৈতিক উত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা অর্জনের দিকে এগিয়ে গেলে সব মনুবাদী শক্তি এক হয়ে যাবে। 
কারণ সব রসুনের গোড়া এক জায়গায়। যার নাম মনুবাদ। বহিরাগত শোষকদের Divine প্রভুত্বের জীয়ন কাঠি।   

Reply of Abhinav Sinha on Dr. Teltumbde


डॉ. आनंद तेलतुंबड़े के स्पष्टीकरण "तथाकथित मार्क्सवादियों का रूढ़िवादी और ब्राह्मणवादी रवैया" पर हमें 'मुक्तिकामी छात्रों-युवाओं का आह्वानके संपादक अभिनव सिन्‍हाका एक मेल सत्यम वर्मा जी की मार्फत मिला है। जो यथावत् यहाँ दिया जा रहा है-

"I am surprised to see the "clarification" of Mr. Anand Teltumbde! He has not even mentioned that he had withdrawn most of his allegations against us (for example, our being "casteist", etc), after our critique of his statement in the Seminar. In fact, Mr. Teltumbde, in his second statement, said that he agreed on most of the issues raised in the critique put forward by me and that he never said that he agrees with the views of Ambedkar and John Dewey! We are going to post the video of the entire debate between me and Mr. Anand Teltumbde, so that everybody could see how he revoked his charges and statements. 

Secondly, about his statement regarding the 'grand failure of Ambedkar's experiments'. This was an unfortunate case of Hindi journalismThis statement made by Mr. Teltumbde in the course of his speech was highlighted out of context and then it went viral on the internet. However, he definitely said this, though in a different context. I would urge Mr. Teltumbde to comment on the video of the entire debate. We'll post it by tonight. 

And I will also ask various "yellow" journalists, who are talking about "Communist giroh", etc and other crap, to listen carefully to what Mr. Teltumbde said in the seminar and what answers did he get, and stop wagging their tails in front of Deweyan Pragamatism of Ambedkar. There is no meeting point,philosophically speaking, between Ambedkarism and Marxism, as intellectuals like Mr. Teltumbde and surrenderist "left"-wing opportunists are trying to demonstrate.

- Abhinav Sinha, (Editor, 'Muktikami Chhatron-Yuvaon ka Aahwan')"

बहस में सन्दर्भ के लिये इन्हें भी पढ़ें 

तथाकथित मार्क्सवादियों का रूढ़िवादी और ब्राह्मणवादी रवैया

हाँडॉ. अम्‍बेडकर के पास दलित मुक्ति की कोई परियोजना नहीं थी

अगर लोकतन्त्र और धर्मनिरपेक्षता में आस्था हैं तो अंबेडकर हर मायने में प्रासंगिक हैं

हिन्दू राष्ट्र का संकट माथे पर है और वामपंथी अंबेडकर की एक बार फिर हत्या करना चाहते हैं!

तथाकथित मार्क्सवादियों का रूढ़िवादी और ब्राह्मणवादी रवैया


इस बहस के बीच हमें एक ई-समूह की मार्फत डॉ. आनंद तेलतुंबड़े का मेल प्राप्त हुआ है। जो इस प्रकार है -

Dr. Anand Teltumbde

"I protest the distorted reporting of my statements in the conference, which was scathingly critical of the orthodox and brahmanic attitude of the so called Marxists there who trashed the entire anti-caste movement and were unashamedly disrespectful of Babasaheb Ambedkar. I had accused them of being casteist and likened them to the hindutva-brahmanist, the worst possible attribution to their tribe, doing further harm to Indian revolution and had stated among other things that the contribution of Ambedkar to democratization of the country was greater than all the communists togetherPlease do not spread canard in my name."

बहस में सन्दर्भ के लिये इन्हें भी पढ़ें 

हाँडॉ. अम्‍बेडकर के पास दलित मुक्ति की कोई परियोजना नहीं थी

अगर लोकतन्त्र और धर्मनिरपेक्षता में आस्था हैं तो अंबेडकर हर मायने में प्रासंगिक हैं

हिन्दू राष्ट्र का संकट माथे पर है और वामपंथी अंबेडकर की एक बार फिर हत्या करना चाहते हैं!


भारतीय कम्युनिस्ट आन्दोलन के अंतर्विरोधों से कन्नी काटकर हम अंबेडकर पर बहस नहीं कर सकते।


हस्तक्षेप पर प्रकाशित 'मुक्तिकामी छात्रों-युवाओं का आह्वानके संपादक अभिनव सिन्‍हा के पलाश विश्वास जी के आलेख के प्रत्युत्तर में प्रकाशित आलेख के जवाब में पलाश जी का यह पत्र प्राप्त हुआ है। पूरा आलेख पढ़ें तभी बहस का पूरा पक्ष सामने आयेगा। हम अरविन्द स्मृति संगोष्‍ठी में प्रस्‍तुत आलेख भी सिलसिलेवार यहाँ देंगे। इस बहस में आपको भी कुछ कहना है तो स्वागत है। आप हमें Amalendu.upadhyay@gmail.com पर मेल कर सकते हैं।

-    सम्पादकहस्तक्षेप

पलाश विश्वास। लेखक वरिष्ठ पत्रकार, सामाजिक कार्यकर्ता एवं आंदोलनकर्मी हैं। आजीवन संघर्षरत रहना और दुर्बलतम की आवाज बनना ही पलाश विश्वास का परिचय है। हिंदी में पत्रकारिता करते हैं, अंग्रेजी के पॉपुलर ब्लॉगर हैं। "अमेरिका से सावधान "उपन्यास के लेखक। अमर उजाला समेत कई अखबारों से होते हुए अब जनसत्ता कोलकाता में ठिकाना।

आदरणीय अभिनवकुमार जी, हस्तक्षेप संपादक, कॉरपोरेट मीडिया व सोशल मीडिया के साथी, संशोधनवादी वामपन्थी व क्रान्तिकारी मुक्तिकामी साथी और अंबेडकर के नाम राजनीति करने वाले तमाम लोग, अंबेडकर के अनुय़ायी बहिष्कृत समुदायों का मूक समाज और भारतवासियों !

अभिनवकुमार जी के लम्बे आलेख में विद्वता कूट-कूटकर भरी पड़ी है। दूसरी ओर, हम उच्चकोटि के अकादमिक अध्ययन के अवसरों से वंचित रहे हैं। हम न अर्थशास्त्री हैं और न समाजविज्ञानी। विद्वतजन तो हैं ही नहीं। तथाकथित बड़ा पत्रकार भी नहीं।क्योंकि पत्रकारों और मीडिया का इस वक्त कोई सामाजिक सरोकार है ही नहीं। होता, तो आज राष्ट्रीय संकट इस लाइलाज दौर में न होता। मैं विभाजनपीड़ित पुनर्वासित परिवार का भारतीय नागरिकता से बेदखल व देशनिकाला के लिये नियतिबद्ध शरणार्थी समाज की संतान हूँ। मेरे पिता आजीवन अपने समाज और बाकी देश के बहुजनों के जीवन मरण के संघर्ष में जुड़े रहे हैं। हम इस विरासत की वजह से अपने लोगों की जान बचाने के लिये आत्मरक्षा की गरज से देश भर में पीड़ितों का संयुक्त मोर्चा बनाने के प्रयास में बचपन से लगे हैं। सिलसिलेवार अध्ययन और सब कुछ सही-सही जान लेने का दावा हम नहीं करते। इसलिए बचकानी और नादानी से लिखने-पढ़ने का अभियोग का हम खंडन नहीं करना चाहते। हम तो एक मामूली सामाजिक कार्यकर्ता हैं जो संयोग से पेशेवर पत्रकार है।

चंडीगढ़ के आलेख सार्वजनिक हों तो इससे अच्छी कोई बात नहीं होगी। अगर अंबेडकर को खारिज करके ही मुक्तिमार्ग निकलता है, तो ऐसे मुक्तिमार्ग पर चलने को हम भी तैयार हैं बशर्ते कि उस मुक्तिमार्ग की दशा और दिशा स्पष्ट करें पढ़े लिखे विद्वतजन, जिनका दुर्भाग्य से भारतीय सिद्धान्तों, अवधारणाओं के उत्तरआधुनिक पाठ और विमर्श के सुरक्षित आलाप के अलावा वधस्थल भारतवर्ष के कठोर सामाजिक राजनीतिक और आर्थिक यथार्थ से, जमीनी हकीकत से कोई लेना देना नहीं है और न उन्हें अपने स्वजनों की जान बचाने की जद्दोजहद से होकर गुजरना होता है।

अभिनव जी और उनके समविचारी लोगों की आस्था न भारतीय संविधान में है और न लोकतंत्र और धर्मनिरपेक्षता के मौजूदा ढाँचे में। वे राजनीति में निष्णात वामपंथियों को संशोधनवादी बता रहे हैं और अंबेडरकरवादी जमात का मलाईदार अवसर प्राप्त तबका या सत्ता में भागेदारी हासिल करने के लिए आपस में लड़-कट मरने वाले राजनेता। यह भारी विडम्बना है। वे अराजनीति की बात करते हैं। क्रान्ति की और मुक्ति की बात करते हैं। तो संसदीय राजनीति से इस विमर्श का क्या मतलब?

उन्होंने बेहद अच्छा काम किया कि संशोधनवादी वामपंथ को किनारे लगा दिया। पर ऐतिहासिक सच तो यह है कि 1964 साल तक भारतीय़ कम्युनिस्ट आन्दोलन, अंबेडकर के जीवनकाल में एक था। मेरे पिता भी अविभाजित कम्युनिस्ट पार्टी के किसान नेता थे, जिन्होंने ढिमरी ब्लॉक किसान विद्रोह का नेतृत्व किया। भारतीय कम्युनिस्ट आन्दोलन के अंतर्विरोधों को कन्नी काटकर हम अंबेडकर पर बहस नहीं कर सकते

दूसरी बात यह कि भारतीय यथार्थ को सम्बोधित करते हुये अंबेडकर ही नहींबल्कि गांधी और लोहिया ने जाति व्यवस्था के विमर्श को अपना प्रस्थान बिन्दु बनाया हैसंशोधनवादी और क्रान्तिकारी वामपंथियों ने ऐसा नहीं किया। वे वर्ग संघर्षपूंजीवाद और साम्राज्यवाद का राग अलापते रहे। चंडीगढ़ आयोजन में अंबेडकर के व्यक्तित्व-कृतित्व की रचनात्मक आलोचना के बजाय उन्हें अकादमिक तौर पर खारिज करने की ठंडे दिमाग की हत्यारी मानसिकता को सर्जिकल प्रिसिजन के साथ समाजविज्ञानी आशीष नंदी और अर्थशास्त्री अमर्त्य सेन से बेहतर तरीके से अंजाम दिया गया।

इस मुक्तिकामी क्रान्ति का नतीजा देश भर का आदिवासी समाज भुगत रहा है। गुरिल्ला कार्रवाई के बाद भारतीय राष्ट्र की सैन्य शक्ति के सामने दमन के लिये निहत्था अकेला पड़ा या बिहार में निजी सेनाओं के आखेट के शिकार बहुजनों का सामाजिक यथार्थ एकदम गैर अकादमिक भोगा हुआ य़थार्थ है। क्रान्ति जंगल तक सीमाबद्ध है या फिर विश्वविद्यालयों के वातानुकूलित अध्ययनकक्षों में। क्या कॉरपोरेट साम्राज्यवाद और वंशवादी नस्ली हिन्दुत्व के एजंडे का विरोध प्रतिरोध का रास्ता इस तरह हासिल होगा?

हम अपने सामर्थ्य और सीमाबद्ध अध्ययन के मुताबिक मूक समाज के अपढ़ लोगों की तरह ही इसका जवाब देंगे। सिलसिलेवार देंगे। पर इससे पहले हमारा आग्रह है कि जो अंबेडकर के घोषित अनुयायी हैं और जो अंबेडकर के नाम पर अकामिक व राजनीतिक दुकान चला रहे हैंवे इस बहस में अपना पक्ष जरुर रखें। हस्तक्षेप की ओर से ऐतिहासिक पहल हुआ है।

हम खासकर आभारी हैं कि अभिनव जी ने मेरा उल्लेख इतनी दफा किया है कि तज़िन्दगी मेरा इतना उल्लेख कभी नहीं हुआ। मेरे उपन्यास अमेरिका से सावधान पर महाश्वेता देवी के अलावा किसी ने लिखा नहीं। कहानियों और कविताओं  की तो चर्चा भी नहीं हुयी। बतौर पत्रकार मैं काली सूची में हूँ। मजे कि बात अपने पूँजीवाद, साम्राज्यवाद, मुक्तबाजार के विरोध में अपनाये तेवर की वजह से।

पर यह मामला निजी नहीं है। सवालों से बचने की गुंजाइश नहीं है। बेहतर हो कि हम सब मिलकर एक लोकतान्त्रिक विमर्श के जरिये आगे का रास्ता निकालेंपानी सर से ऊपर है और वक्त कम है। तूफान में फँसे शुतुरमुर्ग की तरह रेत में गर्दन घुसेड़े अपनी खाल बचाने के बजाय बाकी लोग भी अपने दड़बे से बाहर निकलकर इस खुली बहस में शिरकत करें तो इसका सार्थक नतीजा निकलेगा। हमें यकीन है कि कम से कम वैकल्पिक मीडिया के लोग इस बहस को यथोचित तवज्जो देंगे। हम चाहते हैं कि अभिनव कुमार के प्रश्नों का जवाब पहले विद्वतजन जो अकादमिक रुप से अधिकृत हैं और जिनमें नादानी और अपढ़ होने का दुर्गुण न हों, संशोधनवादी वामपन्थी, मलाईदार व राजनेता अंबेडकर अनुयायी पहले दें, तभी बहस का दायरा बढ़ेगा। फिर हम अपना जवाब भी अवश्व देंगे।

पलाश विश्वास

 बहस में सन्दर्भ के लिये इन्हें भी पढ़ें –

  • तथाकथित मार्क्सवादियों का रूढ़िवादी और ब्राह्मणवादी रवैया
  • अम्‍बेडकरवादी उपचार से दलितों को न तो कुछ मिला है, और न ही मिले
  • हाँडॉ. अम्‍बेडकर के पास दलित मुक्ति की कोई परियोजना नहीं थी
  • अगर लोकतन्त्र और धर्मनिरपेक्षता में आस्था हैं तो अंबेडकर हर मायने में प्रासंगिक हैं
  • हिन्दू राष्ट्र का संकट माथे पर है और वामपंथी अंबेडकर की एक बार फिर हत्या करना चाहते हैं!
  • ভীমরাও রামজি আম্বেডকর

    উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
    ডঃ ভীমরাও রামজি আম্বেডকর
    এপ্রিল ১৪১৮৯১ – ডিসেম্বর ৬১৯৫৬ (৬৫)
    Ambedkar speech at Yeola.gif
    নাসিকের ঈওলায় এক র‍্যালীতে ভাষণরত আম্বেদকর, ১৩ই অক্টোবর ১৯৩৫ সাল।
    ডাক নাম:বাবা, বাবা সাহেব, বোধিসত্ত্ব, ভীমা, মুখ্যনায়ক, আধুনিক বুদ্ধ
    জন্মস্থান:মোহ (Mhow), কেন্দ্রীয় প্রদেশ, (এখনমধ্যপ্রদেশ), ব্রিটিশ ইন্ডিয়া
    মৃত্যুস্থান:দিল্লিইন্ডিয়া
    জীবনকাল:এপ্রিল ১৪১৮৯১ – ডিসেম্বর ৬১৯৫৬(৬৫)
    জাতীয়তা:ভারতীয়
    উপাধি:ভারতের আইন-মন্ত্রী,
    চেয়ারম্যান অব দ্যা কন্‌স্টিটিউশন ড্রাফটিং কমিটি।
    আন্দোলন:দলিত বৌদ্ধ আন্দোলন
    প্রধান সংগঠন:সমথ সৈনিক দল,
    তফসীল সম্প্রদায়,
    স্বনির্ভর শ্রমিক দল (ইন্ডিপেন্ডেন্ট লেবার পার্টি(ভারত)),
    পূর্বেকার অস্পৃশ্য জাতি সিডিউল কাস্টেস ফেডারেশন,
    Republican Party of India,
    বুডিস্ট সোসাইটি অব ইন্ডিয়া (ভারতীয় বৌদ্ধ সংঘ)।
    রাজনৈতিক দল:প্রজাতান্ত্রিক দল (ভারত)
    পুরষ্কার:ভারতরত্ন (১৯৯০ সাল)
    ধর্ম:বৌদ্ধধর্ম
    দাম্পত্য সঙ্গী:রামাবাই (বিয়ে ১৯০৬ সাল) ও সভিতা (১৯৪৮ সাল)
    শিক্ষা: এম.এ.(M. A.);
    পি.এইচ.ডি.(PhD.);
    ডি.এস.সি.(D.Sc.);
    এল.এল.ডি.(L.L.D.);
    ডি.লিট.(D.Lit.),
    ব্যরিস্টার(আইন) (Barrister(Law))
    শিক্ষাক্ষেত্র:(ইউনিভার্সিটি অব মুম্বাই),
    (কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি),
    লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়


    ডক্টর ভীমরাও রামজি আম্বেডকর (মারাঠিडॉ.भीमराव रामजी आंबेडकर) (১৪ই এপ্রিল১৮৯১ - ৬ই ডিসেম্বর ১৯৫৬) ছিলেন একজন ভারতীয় ব্যবহারশাস্ত্রজ্ঞ (জ্যুরিস্ট), রাজনৈতিক নেতা, বৌদ্ধ আন্দোলনকারী, দার্শনিক, চিন্তাবিদ, নৃতত্ত্ববিদ (Anthropologist), ঐতিহাসিক, বাগ্মী, বিশিষ্ট লেখক, অর্থনীতিবিদ, পণ্ডিত, সম্পাদক, রাষ্ট্রবিপ্লবী ও বৌদ্ধ পুনর্জাগরণবাদী। তিনি বাবাসাহেব নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি ভারতের সংবিধানের[১]খসড়া কার্যনির্বাহক সমিতির সভাপতিও ছিলেন। তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদী এবং ভারতের দলিত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। ইনি ভারতের সংবিধানের মুখ্য স্থাপক।

    পরিচ্ছেদসমূহ

      [আড়ালে রাখো

    [সম্পাদনা]পরিচিতি

    ভীমরাও রামজি আম্বেদকর ভারতের গরীব "মহর"(Mahar) পরিবারে (তখন অস্পৃশ্য জাতিহিসেবে গণ্য হত) জন্ম গ্রহণ করেন। আম্বেদকর সারাটা জীবন সামাজিক বৈষম্যতার (Social Discrimination), "চতুর্বর্ণ পদ্ধতি"-হিন্দু সমাজের চারটি বর্ন এবং ভারতবর্ষের অস্পৃশ্য (Untouchables or Untouchables community) প্রথার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গেলেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং হাজারো শত (Hundreds of Thousands) অস্পৃশ্যদের থেরবাদী বৌদ্ধ ধর্ম (Theravada Buddhism) স্ফুলিঙ্গের মতো রূপান্তরিত করে সম্মানিত হয়েছিলেন। আম্বেদকরকে ১৯৯০ সালে মরণোত্তর (Posthumous) "ভারত রত্ন" - ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় উপাধি'তে ভূষিত করা হয়। বহু সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে, ভারতের মহাবিদ্যালয় শিক্ষা অর্জনে আম্বেদকর প্রথম "সমাজচ্যুত ব্যক্তি" (Outcast) হিসেবে পরিণত হয়েছিলেন। অবশেষে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং লন্ডন অর্থনীতি বিশ্ববিদ্যালয় (লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্স) থেকে আইনে ডিগ্রি (বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ উপাধি) লাভ করার পর,আম্বেদকর বিদ্বান ব্যক্তি (Scholar) হিসেবে সুনাম অর্জন করেন এবং কিছু বছর তিনি আইন চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন, পরে তিনি ভারতের অস্পৃশ্যদের সামাজিক অধিকার ও সামাজিক স্বাধীনতার উপর ওকালতির সময় সমসাময়িক সংবাদপত্র প্রকাশ করেছিলেন। কিছু ভারতীয় বৌদ্ধালম্বীদের দ্বারা তিনি "বোধিসত্ত্ব" (গৌতম বুদ্ধের পূর্ব জন্ম) উপাধিতে সম্মানিত করেন, যদিও তিনি নিজেকে "বোধিসত্ত্ব" হিসেবে কখনো দাবি করেন নি।[২]

    [সম্পাদনা]প্রথম জীবন এবং শিক্ষা

    ভীমরাও রামজী শাকপাল যুবক থাকাকালীন[৩]

    'মোহ' (Mhow) অঞ্চলের (বর্তমান মধ্য প্রদেশ) এবং কেন্দ্রীয় সামরিক সেনানিবাসে ব্রিটিশ কর্তৃক স্থাপিত শহরে আম্বেদকর জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[৪]তিনি ছিলেন রামজী মালোজী শাকপাল (Ramji Maloji Sakpal) এবং ভীমাবাইের (Bhimabai) ১৪তম সর্বকনিষ্ঠ পুত্র।[৫]তাঁর পরিবার ছিলেন মারাঠী অধ্যূষিত বর্তমান কালের "মহারাষ্ট্র"-এর রত্নগিরি জেলার "আম্বোভাদ" (Ambavade) শহরে। তাঁরা হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিভুক্ত ছিলো (মহর জাতি), যারা (অস্পৃশ্য জাতি)হিসেবে এবং প্রচণ্ড রকম আর্থ-সামাজিক বিভেদ সাপেক্ষে পরিগণিত হত। আম্বেদকরের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ব্রিটিশ ইস্ট – ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনা এবং তাঁর পিতা "রামজী শাকপাল" মোহ সেনানিবাসের ভারতীয় সেনা নিবেদিত ছিলেন, তিনি সেকালে গতবাধা শিক্ষাপদ্ধতি থেকে মারাঠী এবং ইংরেজীতে ডিগ্রি লাভ করেছিলেন এবং সেইসাথে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা লাভে কঠোর পরিশ্রমে সন্তানদের উদ্বুদ্ধ করেন। কবির পান্থের মতে, রামজী শাকপাল তাঁর সন্তানদের হিন্দু সংষ্কৃতি পড়তে উদ্বুদ্ধ করতেন। সামরিক বাহিনীতে তিনি তাঁর জায়গা উপশালা ব্যবহার করতেন তাঁর সন্তানদের সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াশুনার কাজে, যখন তাঁরা তাদের জাতি বৈষম্যতার সম্মুখীন হত। যদিও আম্বেদকর বিদ্যালয়ে যেতেন সাথে একই অস্পৃশ্য জাতির অন্যরাও, তাদের আলাদা করে দেয়া হত এবং শিক্ষকগণ দ্বারা অমনযোগী ও অসহায়ক ছিলেন। তাদের শিক্ষাকক্ষের ভেতরে বসার অনুমতি ছিলো না, এমনকি তাদের যদি তৃষ্ণা পেতো উচ্চশ্রেণীর কোনো একজন এমন উচ্চতা হতে সেই পানি ঢেলে পান করাতো, যেহেতু তাদের (নিন্মশ্রেণীদের) কোনো অনুমতি ছিলো না, পানি স্পর্শ করার বা যেটি তা ধারণ করে। এই কাজটি সাধারণত আম্বেদকরের জন্য করতো বিদ্যালয়ের চাপসারী (Peon) এবং যদি পিওন না থাকত বা না আসত তখন সারাদিন পানি ছাড়াই কাটাতে হতো, আম্বেদকরের এই আবস্থাকে বলেছিলেন যেন - "পিওন নাই,পানি নাই"(নো পিওন, নো ওয়াটার)।[৬]

    রামজী শাকপালের ১৮৯৪ সালে অবসর নেন ও দুই বছর পরে তাঁর পরিবার "সতর"-এ (Satara) চলে আসে। জায়গা বদলের অল্পদিনের পরে, শিশু আম্বেদকরের মাতা মারা যান। তাঁরা (সন্তানরা) মাসীর সান্নিধ্যে কষ্টের পরিবেশে লালিত হন। শুধুমাত্র তিন ছেলে বালারাম, আনান্দ্রা ও ভীমরাও এবং দুই মেয়ে মঞ্জুলা ও তুলাসা'দের মধ্যে আম্বেদকরই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সামর্থ হন এবং মহাবিদ্যালয়ের স্নাতক লাভে সক্ষম হন। ভীমরাও শাকপাল আম্বেদকরের কূলনামটি (বর্ণনামূলক অতিরিক্ত নাম) এসেছে তাঁর "রত্নগিরি" নিজগ্রাম আম্বভাদ(Ambavade) থেকে।[৭] তাঁর ব্রাহ্মণ শিক্ষক মহাদেব আম্বেদকর, যিনি তাঁর (আম্বেদকরের) প্রতি অত্যন্ত স্নেহ পরায়ণ ছিলেন,প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালিকায় তিনি নিজ গ্রাম আম্বোভাদকর (Ambavadekar) থেকে পরিবর্তন করে আম্বেদকর রাখেন।[৭]

    [সম্পাদনা]উচ্চতর শিক্ষা

    আম্বেদকর ১৯০৩ সালে (মাত্র ১২ বছর বয়সে) বিয়ে করেন এবং পরিবারসহ তিনি মুম্বাইয়ে (তারপর বোম্বে) চলে আসেন, যেখানে আম্বেদকরই হয়ে উঠেন এলফিন্‌স্টোন রাস্তার পাশের সরকারি বিদ্যালয়ের প্রথম অস্পৃশ্য (নিম্ম শ্রেণীর লোক হিসেবে) ছাত্র।[৮] যদিও তিনি তাঁর শিক্ষাদীক্ষায় সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন তথাপি আম্বেদকর যে স্বতন্ত্রতা ও বৈষম্যতার সম্মুখীন হয়েছিলেন তাতে তিনি ক্রমবর্ধমানভাবে বিরক্ত ছিলেন। ১৯০৭ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রথম অস্পৃশ্য হিসেবে ভারতের বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। এই সাফল্য তাঁর সম্প্রদায়ে গুণকীর্তনের উদ্দীপনা যোগায়, একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের পরে তিনি তাঁর শিক্ষক কৃষ্ণজী অর্জুন বেলুস্কর (অন্য নাম দাদা কেলুষ্কর), যিনি ছিলেন মারাঠী জাতির একজন বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র, তাঁর পরামর্শে "গৌতম বুদ্ধের জীবনী"র উপর তিনি একটি জীবনচরিত প্রকাশ করেন। অবশ্য আম্বেদকরের বিয়ে যথারীতি হিন্দু রীতিতেই ৯ বৎসরের দাপোলির মেয়ে "রামাবাই"এর সাথে হয়।.[৮] ১৯০৮ সালে তিনি এলিফিন্‌স্টোন কলেজে ভর্তি হন এবং সেখানে থাকাকালীন তিনি বারোদা'র রাজা "গয়াকওয়াদ সায়াজী রাও ৩য়" (Maharaja Sayajirao Gaekwad III, ruler of Baroda, Sahyaji Rao III) কর্তৃক মাসিক ২৫ রুপির বৃত্তি অর্জন করেন। ১৯১২ সালে, তিনি বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক বিজ্ঞানে ডিগ্রি লাভ করেন। বারোদা সরকারী রাজ্যে চাকরি গ্রহণ করেন। সেই বছরেই তাঁর প্রথম সন্তান, ইশান্ত, জন্ম গ্রহণ করেন। আম্বেদকর তাঁর নব্য পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে আসেন, কিছুসময় পরে অবশ্য তাঁর অসুস্থ পিতাকে দেখতে মুম্বাই চলে আসেন। তাঁর বাবা ২রা ফেব্রুয়ারি, ১৯১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর ছাত্র হিসেবে তিনি ১৯১৩ সালে তিন বছর মেয়াদী মাসিক সাড়ে এগার ব্রিটিশ পাউন্ডের বৃত্তি গ্রহণ করেন। নিউইয়র্কে তিনি তাঁর পারসী বন্ধু "নাভাল ভাতেনা"র সাথে লিভিংস্টোন হলে বসবাস করেন। তিনি প্রত্যহ "লো" লাইব্রেরিতে দৈনিক চার ঘন্টা পড়াশুনা করতেন। জুন, ১৯১৩ সালে তিনি এম. এ. পরীক্ষায়, প্রধানত অর্থনীতি উত্তীর্ণ হন, এছাড়াও তিনি অন্য বিষয় গুলোতে সমাজবিজ্ঞানইতিহাসদর্শনশাস্ত্র এবং নৃতত্ত্ব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি গবেষণা লব্ধ প্রবন্ধ "প্রাচীন ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য" (Ancient Indian Commerce) প্রকাশ করেন। ১৯১৬ সালে তিনি অন্য আরেকটি এম. এ. গবেষণা প্রবন্ধ "ভারতের জাতীয় কারাগারের লভ্যাংশ – একটি ঐতিহাসিক ও বিশ্লেষণিক গবেষণা" (National Dividend of India-A Historic and Analytical Study)। ৯ই মে, নৃতত্ত্ববিদ প্রফেসর আলেকজান্ডার গোল্ডেনউইজার কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারের আগে তিনি"ভারত জাতিঃ তাদের পদ্ধতি, উৎপত্তি এবং উন্নয়ন" বিষয়ক পত্র পাঠ করেন। ১৯১৬ সালের অক্টোবর মাসে তিনি ভর্তি হন "গ্রেস ইন্‌ন ফর ল"(Gray's Inn for Law) এবং লন্ডনের অর্থনীতি ও রাজনৈতিক অর্থনীতি বিজ্ঞান (London School of Economics and Political Science for Economics) যেখানে তিনি ডক্টরাল থেসিসের কাজ শুরু করেন। ১৯১৭ সালে জুন মাসে বারোদা বৃত্তির শেষান্তে তিনি ভারত|ইন্ডিয়া যেতে বাধ্য হন, অপরদিকে তাঁর গবেষনামূলক প্রবন্ধ জমা দেয়ার জন্য ৪ বছরের মধ্যে জমা দেয়া ও ফিরে আসার অনুমতি পান। তিনি তাঁর অতি মূল্যবান এবং অধিক পছন্দের গ্রন্থপুঞ্জিগুলো কুলের জাহাজযোগে (স্টিমার) পাঠানোর সময় একটি জার্মান ডুবোজাহাজ দ্বারা নিমজ্জিত হয়ে যায়।

    Ambedkar Barrister.jpg

    ভারতের মূখ্য পন্ডিত (leading Indian Scholar) হিসেবে আম্বেদকরকে সাউথবোরো কমিটিতে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো, ১৯১৯ সালে যেটি ছিলো ভারতের সরকারি আইন, ১৯১৯ এর প্রস্তুতিমূলক (কমিটি)। এটি শুনতেই, আম্বেদকর পৃথক নির্বাচকমন্ডলী এবং অন্ত্যজদের জন্য বাসস্থান সংরক্ষণ (তাঁর অনেকদিনের লুকায়িত মনের ভাব) এবং অন্য সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য যুক্তি প্রদর্শন করেন। ১৯২০ সালে, তিনি মুম্বাইয়ের একটি সাপ্তাহিক "মূখ্যনায়ক – মৌনদের নেতা" [Mooknayak (Leader of the Silent)] প্রকাশ করেন, কোলহপুরের মহারাজা, শাহু ১ম (Shahu I) (১৮৮৪-১৯২২ সাল) আম্বেদকর এই পত্রিকাটিতে হিন্দু মৌলবাদী (Arthodox) রাজনীতিবিদদের কঠোর সমালোচনা করেন এবং ভারতের রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের বিতৃষ্ণা উপলব্ধি করত জাতি বৈষম্যতার (Caste Discrimination) প্রতি যুদ্ধ করেছিলেন। কোলহপুরে তাঁর বক্তব্য অস্পৃশ্য সম্প্রদায়ের বৈঠকে আঞ্চলিক রাজ্যের রাজা শাহু ৪র্থ'কে মোহিত করেন, যিনি আম্বেদকরকে "ভবিষ্যতের জাতীয় নেতা" বলে গণ্য করেন এবং পরবর্তীতে গোঁড়াবাদী সম্প্রদায় সবাইকে অবাক করে দিয়ে আম্বেদকরের সাথে নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন। নিজের জমানো কিছু অর্থের সাথে কলহপুরের মহারাজা ও তাঁর বন্ধু নাভাল বাহেনার কাছ থেকে লোনকৃত কিছু অর্থ দিয়ে জুলাই মাসে তিনি শিক্ষক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করে লন্ডনে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি "লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্স" ও "গ্রে ইন্‌ন" আইনি সম্প্রদায়ে (Bar) পড়ার জন্য ফিরে আসেন। দরিদ্র জীবনযাপন শুরু করেন ও ব্রিটিশ যাদুঘরে নিয়মিত অধ্যয়ন করেন। ১৯২২ সালে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আরো একবার আম্বেদকর সকলের চাহিদাপূরণে সক্ষম হনঃ তিনি এম এস সি (অর্থনীতি) জন্য গবেষণা লব্ধ প্রবন্ধ সম্পূর্ণ করেন লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্সে ও তাঁকে আইনি সম্প্রদায়ে ডাকা হয় এবং তাঁর পিএইচডি প্রবন্ধটি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দেন। আম্বেদকর সফল আইনী চর্চা দ্বার করেন। আইনী চর্চার শুরুর দিকে, আম্বেদকর কিছু ব্রাহ্মণ কর্তৃক তিন অ-ব্রাহ্মণ নেতা কে বি বাগদে, কেশাভরাও জেদহে এবং দিনকোরাও জাভালকরের বিরুদ্ধে আনীত মকদ্দমায় জড়িয়ে পরেন। তাঁরা এই মর্মে মকদ্দমা চালান যে, ক্ষুদ্র পুস্তিকাতে লিখিত ব্রাহ্মণরা ভারত ধ্বংস করেছিলো। অভিযুক্ত পক্ষে ছিলেন পুনার বিখ্যাত উকিল এল বি বোপাটকর, আম্বেদকর তাঁর মামলা যুক্তিপূর্ণ তথ্য দক্ষতার সহিত স্থাপন করে বাকপটু প্রতিরক্ষার মাধ্যমে ১৯২৬ সালের অক্টোবর মাসে বিজয়ী হন। তাঁর সেই বিজয় গুণকীর্তন অনেক বিস্তার লাভ করেন। সামাজিকভাবেও বৈক্তিকভাবে।

    [সম্পাদনা]লক্ষ্যসমূহ

    যখন বোম্বে হাইকোর্টে চর্চারত অবস্থায় আম্বেদকর আস্পৃশ্যদের শিক্ষিত করে তুলতে অবিবেচকের মত দৌড়েছিলেন। এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে তাঁর প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক চেষ্টা ছিলো "বহিষ্কৃত হাতিকারিণী সাবা"। এই প্রাতিষ্ঠানটি শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং গৃহহীন ও অন্ত্যজ জাতির (Outcast) উন্নতির জন্য। ১৯২৭ সালে আম্বেদকর অস্পৃশ্যতা'র বিরুদ্ধে সক্রিয় আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি গণ আন্দোলন শুরু করেন এবং সুপেয় পানির উৎস দানে সংগ্রাম চালিয়ে যান (উল্লেখ্য সে সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে নিন্ম বর্ণের প্রবেশের অধিকার ছিলো না)। মহদে সত্যগ্রহ নামের অস্পৃশ্যদের (অন্ত্যজ জাতির) জন্য সংগ্রাম করে সুপেয় পানি পানের অধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। তাঁকে ১৯২৫ সালে বোম্বে প্রেসিডেন্সি কমিটিতে নিয়োগ করা হয়েছিলো যাতে করে তিনি সকল ইউরোপীয় সীমন কমিশনের সাথে কাজ করতে পারেন। সমগ্র ভারতজুড়ে স্ফুলিঙ্গের আকারে ব্যাপক আন্দোলন ছড়িয়ে পরে এবং যখন এই তালিকাটি অধিকাংশ ভারতীয় কর্তৃক ত্যাগ করা হয়েছিলো, আম্বেদকর নিজে ভবিষ্যৎ সাংবিধানিক সুপারিশের জন্য একটি পৃথক সুপারিশ নামা লিখিত দেন।

    [সম্পাদনা]পূনে চুক্তি

    আম্বেদকরের প্রসিদ্ধ এবং অস্পৃশ্য সম্প্রদায়ের জনপ্রিয় সমর্থনের কারণে, তাঁকে ১৯৩২ সালে লন্ডনে দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে (Second Round Table Conference) আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মহাত্মা গান্ধী অস্পৃশ্যদের জন্য গঠিত পৃথক নির্বাচকমন্ডলীর প্রচণ্ডভাবে বিরোধিতা করেন, যদিও তিনি অন্য সকল সংখ্যা লঘুদের যেমন মুসলমানদের ও শিখদের পৃথক নির্বাচকমন্ডলী (Separate Electorate) বিনা দ্বিধায় মেনে নেন এই বলে যে, তিনি অস্পৃশ্য সম্প্রদায়ের গঠনকৃত নির্বাচকমন্ডলী হিন্দু সমাজকে ভবিষ্যতে বিভক্ত এবং উচ্চশ্রেণীর ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। ১৯৩২ সালে যখন ব্রিটিশরা আম্বেদকরের সাথে একমত হন এবং পৃথক নির্বাচকমন্ডলীদের ঘোষণা করেন, তখন মহাত্মা গান্ধী পূনের এরোদা কেন্দ্রীয় কারাগারে (Yerwada central jail) শুধুমাত্র অন্ত্যজ সম্প্রদায়ের পৃথক নির্বাচকমন্ডলীর প্রতি উপবাস শুরু করেন। গান্ধীর এই উপবাস (fast) ভারতজুড়ে বেসামরিকদের মাঝে প্রবল বিক্ষোভের উদ্দীপনা জোগায় এবং ধর্মীয় গোঁড়াবাদী নেতারা (Orthodox Politicians), কংগ্রেস নেতারা কর্মীদের মধ্যে মদন মোহন মালোভি ও পালঙ্কর বালো ও তাঁর সমর্থকরা আম্বেদকরের সহিত এরাভাদে (Yeravada) যৌথ বৈঠক করেন। গান্ধীবাদীদের প্রবল চাপের মুখে (Massive coercion) এবং সাম্প্রদায়িক প্রতিশোধ (Communal reprisal) ও অস্পৃশ্য সম্প্রদায়কে নির্মূলীকরণের আশংকায় আম্বেদকরপৃথক নির্বাচকমন্ডলী বাতিল করতে সম্মত হন। এই চুক্তির পরে গান্ধী উপবাস পরিত্যাগ করেন, ইতিহাসে এটি পূনে চুক্তি নামে পরিচিত। চুক্তির ফলশ্রুতিতে, আম্বেদকর পৃথক নির্বাচকমন্ডলী গঠনের দাবি ছেড়ে দেন যা আম্বেদকর গান্ধীর সাথে বৈঠকের আগে ব্রিটিশ সাম্প্রদায়িক কর্তৃক শর্ত সাপেক্ষে মঞ্জুর করে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হন। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন অস্পৃশ্যদের জন্য সংরক্ষিত হয়। এই চুক্তিতে যাকে বলা হয় অস্পৃশ্য সম্প্রদায়(Depressed Class)।

    [সম্পাদনা]রাজনৈতিক অবদান

    আম্বেদকর ১৯৩৫ সালে মুম্বাইয়ের সরকারী আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান, সেখানে দু'বছর অধিষ্ঠিত ছিলেন। মুম্বাইয়ে বসবাসের বাসনায় তাঁর তদারকিতে নিজের একটি ঘর মেরামত করেন এবং সেখানে তিনি ৫০,০০০ হাজারেরও বেশী বই সমৃদ্ধ একটি ব্যক্তিগত পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন।.[৯] তাঁর প্রথম স্ত্রী রামাবাই দীর্ঘ অসুস্থতার পরে একই বছর মৃত্যুবরণ করেন। অসুস্থ অবস্থায় তাঁর স্ত্রী রামাবাইয়ের পান্দরপুর তীর্থে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন কিন্তু আম্বেদকর তাঁকে যেতে দিতে অস্বীকৃতি জানান এই বলে যে, তিনি তাঁকে বরং একটি নতুন পান্দরপুর বানিয়ে দিবেন হিন্দু পান্দরপুরের পরিবর্তে - যেটা কিনা তাদের অস্পৃশ্য বলে গণ্য করে। ১৩ই অক্টোবর নাসিকের কাছে ঈওলার বৈঠকে বক্তব্যে আম্বেদকর তাঁর ভিন্ন ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার অভিপ্রায় ঘোষণা করেন এবং তাঁর অনুগতদেরও হিন্দু ধর্ম ত্যাগে প্রণোদিত করেন।[৯] সমগ্র ভারতের বহুসংখ্যক জন সভায় তিনি তাঁর আহবানটি পুনর্ব্যক্ত করেন। ১৯৩৬ সালে আম্বেদকর স্বনির্ভর শ্রমিক দল (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ল্যাবর পার্টি) প্রতিষ্ঠা করেন, যেটি ১৯৩৭ সালের কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়ন পরিষদ বা বিধানসভার (Central Legislative Assembly) নির্বাচনে ১৫ আসন লাভ করেন। নিউইওর্কে লিখিত গবেষণালব্ধ উপাত্তের ভিত্তিতে একই বছর তিনি তাঁর বই দ্য এন্‌নিহিলেশন অব কাস্ট প্রকাশ করেন। ব্যাপক জনপ্রিয় সাফল্যে অর্জনের পর, আম্বেদকর গোঁড়াবাদী ধর্মীয় নেতাদের এবং নিন্ম সাধারণের জন্য অস্পৃশ্য, বর্ণ প্রথার তীব্র সমালোচনা করেন। আম্বেদকর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা সমিতির এবং রাজপ্রতিনিধির নির্বাহী সভায় শ্রম মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেন। কংগ্রেস ও গান্ধী অস্পৃশ্যদের প্রতি যা করেছিল, আম্বেদকর কপটতার সহিত তীব্রভাবে গান্ধী ও কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন।[১০] তাঁর কাজের মধ্যে "কারা শুভ্র ছিল?"তে (Who were Shudras?) বর্ণনা করতে চেষ্টা করেন শুভ্র বর্ণ গঠিত হয় অর্থাৎ পুরোহিত তন্ত্রের হিন্দু বর্ণ প্রথার (Hierarchy of Hindu Caste System) নিন্ম বর্ন গঠনের উপর আলোকপাত করেন। তিনি এও উল্লেখ করেন শুভ্র কীভাবে অস্পৃশ্য হতে আলাদা। তিনি তাঁর রাজনৈতিক দল বদলে তদারকি করেন সারা ভারতের সিডিউল কাস্টেস ফেডারেশনে, যদিও তা ১৯৪৬-এ ভারতের সংবিধান পরিষদের নির্বাচনে ভালো করে নি। পরিশিষ্ট লিখতে গিয়ে ১৯৪৮ সালে আম্বেদকর হিন্দুবাদকে কর্কশ ভাষায় সমালোচনা করেন তাঁর "দ্য আন্‌টাচেব্যলসঃ এ থিসিস অন দ্য অরিজিনস অব আন্‌টাচেব্যলিটি" তে এভাবেঃ

    The Hindu Civilisation.... is a diabolical contrivance to suppress and enslave humanity. Its proper name would be infamy. What else can be said of a civilisation which has produced a mass of people.... who are treated as an entity beyond human intercourse and whose mere touch is enough to cause pollution?

    "হিন্দু সভ্যতা.... হচ্ছে মানবতাকে দমন এবং পরাভূত করতে একটি পৈশাচিক কৌশল। এর প্রকৃত নাম হবে সামাজিক কুখ্যাতি। কাকে সভ্যতা বলে ডাকা যায়, যার একগাদা মানুষ...., যাদের সত্ত্বা মানব সম্পর্কের নিচে গণ্য হয় ও শুধু যাদের ছোঁয়া দূষণের জন্য যথেষ্ট?"[১০]

    [সম্পাদনা]পাকিস্তান বা ভারতের সীমানা

    ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে, তিনি বহুসংখ্যক বই, ক্ষুদ্র পুস্তিকা প্রকাশ করেন যেমন থটস্‌ অন পাকিস্তান, যেখানে তিনি মুসলিম লীগ কর্তৃক দাবিকৃত আলাদা পাকিস্তান রাষ্ট্র কিন্তু যদি মুসলমানরা চায় তাদের সুবিধাজনক স্বীকৃতি।[১১]
    উপরের বইটিতে আম্বেদকর একটি উপাধ্যায়ে লিখেছিলেন যদি মুসলমানেরা সত্যিই ও নিয়ত পাকিস্তান চায়, তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, যদি তারা পাকিস্তানের বশ্যতা স্বীকার করে তবে তাদের অবশ্যই সে অধিকার দেয়া হবে। ভারতের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে সেনা বাহিনীতে নিয়োজিত মুসলমানদের বিশ্বাস করা যায় কিনা তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। মুসলমানরা যদি ভারত আক্রমণ করে অথবা মুসলমান বিদ্রোহ হয়, তবে ভারতীয় মুসলিম সেনারা কার পক্ষ নেবে? ভারতের সুরক্ষাজনিত কারণে, মুসলমানরা যেভাবে চায় সেভাবে পাকিস্তানকে মেনে নেয়া উচিত। আম্বেদকরের মতে, হিন্দুদের ধারণা যে, যদিও হিন্দু ও মুসলমান দুটি ভিন্ন জাতি তাঁরা একটি রাষ্ট্রে একত্রে সহ-অবস্থান করতে পারে, যা কিনা একটি বিকৃত পরিকল্পনা, কোনো সুস্থ ব্যক্তি এতে সম্মত নয়।[১১]
    আম্বেদকর দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলাম চর্চারও সমালোচক ছিলেন। ভারত বিভক্তির সমর্থন করে, তিনি মুসলিম সমাজে বাল্য বিবাহ চর্চার, সাথে নারীদের ভুল পথে পরিচালিত করার নিন্দা জানান।

    No words can adequately express the great and many evils of polygamy and concubinage, and especially as a source of misery to a Muslim woman. Take the caste system. Everybody infers that Islam must be free from slavery and caste.[While slavery existed], much of its support was derived from Islam and Islamic countries. While the prescriptions by the Prophet regarding the just and humane treatment of slaves contained in the Koran are praiseworthy, there is nothing whatever in Islam that lends support to the abolition of this curse. But if slavery has gone, caste among Musalmans [Muslims] has remained.
    "কোনো শব্দই বহুবিবাহপ্রথা ও অবিবাহিত সহবাসের (Concubinage) ক্ষতি প্রকাশে পর্যাপ্ত নয়, বিশেষত মুসলিম নারীদের সীমাহীন দুর্ভাগ্যের কারণ। বর্নপ্রথা বিবেচনায় নিয়ে সকলকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, ইসলাম সমস্ত কৃতদাসত্ব ও বর্ন প্রথা মুক্ত। [কৃতদাসত্ব যখন ছিলো] ইসলাম ও ইসলামিক দেশগুলোর সমর্থন পাওয়া যায়। নবী কর্তৃক এই ব্যাপারে যখন দাসদের প্রতি মানুষের আচরণ নির্দেশিত হয় প্রশংসিত কোরানে, এই রকম কোনো কিছুই নেই যে ইসলামে যা এই অভিশাপ থেকে উত্তোলনের অনুমোদন দেয়। কিন্তু যদি ক্রীতদাসত্ব চলে যায়, শ্রেণী প্রথা মুসলিমে রয়ে যাবে।"[১১]

    তিনি লিখেছিলেন যে, মুসলিম বিশ্ব হচ্ছে "হিন্দু সমাজের চেয়েও অনেকাংশে সামাজিক দুর্ভোগে ভরা" সমালোচনা করে তিনি বলেন, মুসলমানরা তাদের সাম্প্রদায়িক প্রথাকে (Sectarian Caste System) ভার্তৃত্বএর শুতিমধুরতা (Euphemisms) দিয়ে মোড়কিত করেছে।[১১]তিনি আরো বলেন, মুসলমানদের মধ্যে আযরাল শ্রেণীর (Azral Class) প্রতি বৈষম্যতা, যারা "পদানত" (Degraded) হিসেবে স্বীকৃত, এর সাথে মুসলিম সমাজে পীড়াদায়ক পুরদাহ প্রথার মাধ্যমে নারীদের উৎপীড়নেরও (Oppression) সমালোচনা করেন। তিনি দৃঢ় কন্ঠে অভিযোগ করেন যে, পুরদাহ প্রথা হিন্দুদের চর্চা হলেও মুসলমানরা ধর্মের মাধ্যমে তা অনুমোদন করে নেন। তাঁর মতে, ইসলামের প্রতি তাদের ধর্মোম্মত্ততা (fanaticism) এতটাই উপরে উঠে যে, আক্ষরিক অর্থে ইসলামের বাণী তাদের সমাজকে করেছে খুব দৃঢ় এবং অপরিবর্তনীয়। তিনি আরো লিখেন যে, অন্য দেশের মুসলমানদের মতো যেমন তুরষ্কের-এর মতো ভারতীয় মুসলমানরাও নিজেদের সমাজকে পুনর্গঠনে ব্যর্থ হয়েছে।[১১]

    [সম্পাদনা]ভারতের সংবিধান খসড়ায় অবদান

    চিত্র:AmbedkarDesk.jpg
    "আম্বেদকর নিজস্ব পাঠাগারে পাঠ্যরত" (একটি শিল্পকলা) পুনেরআম্বেদকর জাদুঘরে

    ১৫ই অগাস্ট ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার দিন, নব্য গঠিত কংগ্রেস শাসিত সরকার আম্বেদকরকে জাতির প্রথম আইন মন্ত্রী পদ পদার্পণ করেন, যা তিনি সানন্দে গ্রহণ করেছিলেন। ২৯ই অগাস্ট, আম্বেদকরকেসংবিধান খসড়া সমিতির সভাপতি করা হয়, যা ভারতের নতুন মুক্ত সংবিধান রচনায় বিধানসভা কর্তৃক আরোপিত হয়। আম্বেদকর তাঁর সহপাঠীদের ও সমকালীন পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। এই কাজে আম্বেদকর প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মে সঙ্ঘের-চর্চা নিয়ে বৌদ্ধ ধর্মীয় গ্রন্থে অধিক পড়াশোনাই অনেক সহায়ক হিসেবে কাজ করেছিলো। ব্যালটের দ্বারা ভোট প্রদান, তর্ক-বিতর্কের ও অগ্রবর্তী নীতিমালা, করণীয় বিষয়সূচী, সভা-সমিতি ও ব্যবসায় সংক্রান্ত প্রস্তাবনা সমূহের ব্যবহার ইত্যাদি সংঘ চর্চা দ্বারা সমন্বয় সাধিত হয়। সংঘ চর্চা প্রাচীন ভারতের কিছু রাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক উপজাতিগোষ্ঠী যেমন শাক্যবংশ (Shakyas) ও লিচ্ছবিররা (Lichchavis) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। অতঃপর আম্বেদকর যদিও তাঁর সাংবিধানিক অবয়ব তৈরিতে পশ্চিমা প্রণালীর ব্যবহার করেন, বস্তুত এর অনুপ্রেরণা ছিলো ভারতীয়, বাস্তবিকপক্ষে উপজাতীয়।
    গ্রানভিলে অস্টিন আম্বেদকর কর্তৃক প্রণীত ভারতীয় সংবিধান খসড়াকে বর্ণনা দেন এভাবে "একনিষ্ঠ ও সর্বোত্তম সামাজিক নথি পত্র।"... 'অধিকাংশ ভারতের সাংবিধানিক শর্ত সরাসরি সামাজিক বিপ্লবের সমর্থনে উপনীত হয়েছে অথবা প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিপ্লবকে পরিপুষ্ট করার চেষ্টা। ' আম্বেদকর কর্তৃক লিখিত ভারতের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা ও সুরক্ষা সর্বাধিক সাধারণ জনসাধারণের প্রতি প্রদান করা হয়েছে যেমন ধর্মীয় স্বাধীনতা, অস্পৃশ্যতা বিলোপ এবং সব ধরনের বৈষম্য বিধিবহির্ভূত করেন। আম্বেদকর নারীদের অধিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকারের জন্য যুক্তি প্রদর্শন করেন। তিনি এতে বিধানসভার সমর্থন অর্জন করে সিডিউল কাস্টেসভুক্ত নারী সদস্যদের বা সিডিউল উপজাতীয়দের জন্য বেসরকারি খাতে বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় কর্মক্ষেত্রে চাকরির বিধান প্রদান করে নির্দিষ্ট আসনের ব্যবস্থা করেন, যা একটি সম্মতিসূচক পদক্ষেপ। ভারতের আইন প্রণেতারা আশা করেন এর মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক বিভাজন দূর হবে ও ভারতীয় অস্পৃশ্যরা সুযোগ-সুবিধা পাবে, যা ছিলো বস্তুত দৃষ্টিগোচরহীন যেমনটি যখন দরকার ঠিক তখনের মতো।
    ১৯৪৯ সালের ২৬ই নভেম্বর গণ-পরিষদ কর্তৃক সংবিধানটি গৃহীত হয়। আম্বেদকর ১৯৫১ সালে হিন্দু কোড বিল খসড়াটি সংসদের আস্তাবলে (stalling in parliament) রাখার কারণে মন্ত্রী পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন, যা পৈতৃক সম্পত্তি, বিবাহ ও অর্থনীতি আইনের আওতায় লিঙ্গ সমতাকে ব্যাখ্যা করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নেহেরু, মন্ত্রীসভা ও অনেক কংগ্রেস নেতারা ইহাকে সমর্থন জানালেও বেশিরভাগ সাংসদ এর সমালোচনা করেন। আম্বেদকরস্বাধীনভাবে ১৯৫২'র নির্বাচনে লোকসভার হয়ে সাংসদে নিন্মপদে (lower house of parliament) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, কিন্তু হেরে যান। তাঁকে পরে রাজ্যসভার উচ্চ পদস্থ সাংসদ পদে সমাসীন করা হয় ১৯৫২ সালের মার্চ মাসে এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সদস্যপদে বহাল ছিলেন।

    [সম্পাদনা]বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ

    নৃতত্ত্বের ছাত্র হিসেবে আম্বেদকর আবিষ্কার করেন মহরেরা আসলে প্রাচীন ভারতীয় বৌদ্ধ। বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তাদেরকে গ্রামের বাইরে সমাজচ্যুতদের ন্যায় থাকতে বাধ্য করা হলো, অবশেষে তারাই অস্পৃশ্যতে পরিণত হয়েছিলো। তিনি এই ব্যাপারে তাঁর পান্ডিত্যপূর্ণ বই "কারা শুভ্র ছিল?" তে বর্ণনা দেন।

    দীক্ষা ভূমি, একটি স্তূপ যেখানে আম্বেদকর তাঁর অন্য অনুসারীদের সাথে বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হন


    আম্বেদকর তাঁর সারাজীবনে বৌদ্ধ ধর্ম অধ্যয়ন করেন, ১৯৫০ এর সময়ে তিনি এই ধর্মে তাঁর সম্পূর্ণ মনোযোগ দেন এবং শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ করেন (তারপর শিলং) বৌদ্ধ পন্ডিতদের ও ভিক্ষুদের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে। যখন তিনি পুনের কাছাকাছি একটি নতুন বৌদ্ধ মন্দির অর্পণ করেন, তখন আম্বেদকর ঘোষণা দেন যে, তিনি বৌদ্ধ ধর্মের উপর একটি বই লিখেছেন, যত শীঘ্রই তিনি বইটি শেষ করবেন, তিনি সাদামাটাভাবে এই ধর্মে গ্রহণ করবেন।[১২]আম্বেদকর ১৯৫৪ সালে দু'বার বার্মা সফর করেন, দ্বিতীয়বার অবশ্য রেঙ্গুনের বিশ্ব ৩য় বৌদ্ধ শিক্ষাবৃত্তি সম্মেলনে যোগদান করতে যান। ১৯৫৫ সালে তিনি ভারতীয় বৌদ্ধ মহাসভা (দ্য বুড্ডিস্ট সোসাইটি অব ইন্ডিয়া) গঠন করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি তাঁর সর্বশেষ বই "বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম" (The Buddha and His Dhamma)-এর কাজ শেষ করেন, যেটি তাঁর মরণোত্তর ছাপানো হয়।
    সভার পরে শ্রীলঙ্কার এক ভিক্ষু হামমালা সাদ্ধ্যতিষ্য,[১৩]আম্বেদকর তাঁর নিজের ও অনুসারীদের জন্যনাগপুরে ১৪ই অক্টোবর ১৯৫৬ সালে একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ঐতিহ্যবাহী প্রথায় বৌদ্ধ ভিক্ষুর কাছ থেকে ত্রিশরণ (Three Refuges) ও পঞ্চশীল (Five Precepts) গ্রহণের মাধ্যমে তিনি তাঁর ধর্মান্তরিতের কাজ সম্পন্ন করেন। তারপর তিনি তাঁর সহযোগীদের (সংখ্যায় ৫ লাখের মতো) যারা তাঁর পাশে ছিলেন, সবাইকে তিনি ধর্মান্তরিত করান।[১২] তারপর তিনি নেপালের কাঠমুন্ডুতে ৪র্থ বিশ্ব বৌদ্ধ সম্মেলনে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তিনি "বুদ্ধ ও কার্ল মার্ক্স" এবং "বিপ্লব ও বিপ্লব-বিরোধী প্রাচীন ভারত" সম্পর্কিত রচনা প্রকাশ করেন যা তাঁর বই বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম বুঝতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে, যা তিনি শেষ করে যেতে পারেন নি।

    [সম্পাদনা]মৃত্যু

    পুনের আম্বেদকর জাদুঘরে একটি আবক্ষ-প্রস্তর মূর্তি

    ১৯৪৮ সাল থেকে আম্বেদকর ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। শারীরিক অবনতির জন্য ১৯৫৪ সালে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত তিনি শয্যাগত ছিলেন ও তাঁর দৃষ্টিশক্তি হারান।[১২] রাজনৈতিক কারণে তিনি ক্রমবর্ধমানভাবে অনেক তিক্তবিরক্ত হয়ে উঠেন, যা তাঁর স্বাস্থ্যের কাল হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৫৫ সালের পুরোটা জুড়ে তিনি প্রচন্ডভাবে কাজ করার ফলে তাঁর শারীরিক অবস্থার অধিকতর অবনতি হয়। টানা তিন দিন "বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম" বইটির সর্বশেষ পান্ডুলিপি তৈরির পর বলা হয় যে, তিনি ৬ই ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে তাঁর নিজ বাড়ি দিল্লীতে ঘুমন্ত অবস্থায় চির নিদ্রায় শায়িত হন।

    ৭ই ডিসেম্বর তাঁর জন্য বৌদ্ধ ধর্মীয় আদলে দাদার চৌপাট্টি সমুদ্র সৈকতে একটি শাবদাহ নির্মাণ করেন। হাজারো শত অনুসারী, কর্মীবৃন্দ ও শুভানুধ্যায়ী ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হন। ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে একটি ধর্মান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যারা শাবদাহ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা একই স্থানে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

    আম্বেদকর তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী সভিতা আম্বেদকর (বিবাহ পূর্ব নামঃ সার্দা কবির), তাঁর স্বামীর সাথে তিনিওবৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন এবং ২০০২ সালে বৌদ্ধালম্বী হিসেবেই মারা যান। উনার পুত্র ইশান্ত (অন্য নাম ভাইয়াসাহেব আম্বেদকর) ও তাঁর পুত্রবধূ মীরা তাই আম্বেদকর। আম্বেদকরের নাতি প্রকাশ যিনিইন্ডিয়ান বুড্ডিস্ট অ্যাসোসিয়েশান এর জাতীয় সভাপতি। পূর্ব নাম বালাসাহেব ঈশান্ত আম্বেদকর, ভারতীয় "বাহুযান মহাসঙ্ঘ"এর নেতৃত্ব দেন এবং উভয় ভারতীয় লোকসভায় নিয়োজিত।

    আম্বেদকরের ব্যক্তিগত মন্তব্য খাতায় ও কাগজে বহু অসমাপ্ত মুদ্রলিখন (টাইপস্ক্রিপ্টস) ও হাতে লেখা খসড়া পাওয়া যায়, পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তা প্রকাশিত হয়েছিলো। যার মধ্যে ছিলো "ওয়েটিং ফর অ্যা ভিসা", যার সম্ভাব্য লিখিত সময় ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৬ এর মাঝামাঝি এবং একটি আত্মজীবনচরিত (Autobiographical work) ও "অস্পৃশ্য বা ভারতের গেটো শিশুরা" যেটি ১৯৫১'র আদমশুমারহিসেবে বিবেচিত।[১২]

    আম্বেদকরের জন্য তাঁর দিল্লীসভা ২৬ আলীপুর রাস্তায় একটি স্মারক স্থাপিত হয়। তাঁর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করেআম্বেদকর জয়ন্তী বা ভীম জয়ন্তী হিসেবে পালিত হয়। তাঁকে মরণোত্তর ১৯৯০ সালে ভারতের সর্বোচ্চ উপাধি "ভারত রত্ন" দেয়া হয়েছিল। তাঁর সম্মানে বহু সরকারি প্রতিষ্টানের নামকরণ করা হয় যেমন হায়দ্রাবাদের ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর ওপেন ইউনিভার্সিটিআন্দ্র প্রদেশের শ্রীকাকুলাম ডঃ বিআর আম্বেদকর ইউনিভার্সিটি, মুজাফ্‌ফরপুরের বি আর আম্বেদকর বিহার ইউনিভার্সিটি এবং জালান্দরের বি আর আম্বেদকর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ও নাগপুরের ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরশোনগাঁও বিমানবন্দর। ভারতের সংসদ ভবনে আম্বেদকরের একটি বিশাল প্রতিকৃতি প্রদর্শিত আছে।

    নাগপুরে তাঁর জন্ম (১৪ই এপ্রিল) ও মৃত্যুবার্ষিকীতে (৬ই ডিসেম্বর) ও ধর্মচক্র প্রবর্তন দিন (১৪ই অক্টোবর), মুম্বাইয়ে কমপক্ষে ৫লাখ অনুসারীরা তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হন। হাজারো বইয়ের দোকান বসে, বিক্রি হয় এই দিন। তাঁর অনুসারীদের প্রতি বার্তা ছিলঃ "শিক্ষিত হও!!! আন্দোলন কর!!! সংগঠিত হও!!!"

    [সম্পাদনা]রচনাবলী ও বক্তব্যসমূহ

    শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মহারাষ্ট্র সরকার (বোম্বে) আম্বেদকরের সংকলিত রচনাবলী ও বক্তব্যসমূহ বিভিন্ন বই আকারে প্রকাশ করেন।[১৪]

    ভলিউম নম্বর.বর্ণনা
    ভলি. ১. ভারত জাতিঃ তাদের পদ্ধতি, উৎপত্তি এবং উন্নয়ন এবং ১১টি অন্যান্য প্রবন্ধ
    ভলি. ২. ডঃ আম্বেদকর বোম্বে বিধানসভায়, সীমন কমিশনের সাথে এবং গোল টেবিল বৈঠকে, ১৯২৭-১৯৩৯
    ভলি. ৩. হিন্দু দর্শনশাস্ত্র; ভারত এবং সাম্যবাদের পূর্বসর্তাবলী; রাষ্ট্রবিপ্লব ও বিপ্লব বিরোধী; বুদ্ধ বা কার্ল মার্ক্স
    ভলি. ৪.হিন্দুদের প্রহেলিকা[১৫]
    ভলি. ৫.অস্পৃশ্য ও অস্পৃশ্যতার উপর প্রবন্ধ
    ভলি. ৬.ব্রিটিশ ভারতে আঞ্চলিক অর্থনীতির বিবর্তন
    ভলি. ৭. কারা শুভ্র ছিলো? ; অস্পৃশ্য সম্প্রদায়
    ভলি. ৮.পাকিস্তান বা ভারতের সীমানা
    ভলি. ৯.কংগ্রেস ও গান্ধী অস্পৃশ্যদের প্রতি যা করেছিলো; জনাব গান্ধী এবং অস্পৃশ্যদের দাসত্ব মোচন
    ভলি. ১০.ডঃ আম্বেদকর রাষ্ট্র প্রধান কার্যনির্বাহক সমিতির সদস্য হিসেবে, ১৯৪২-১৯৪৬
    ভলি. ১১.বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম
    ভলি. ১২.অপ্রকাশিত লেখা; প্রাচীন ভারতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য; আইনের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসমূহ; ওয়েটিং ফর অ্যা ভিসা ; অন্যান্য টীকাসমূহ, ইত্যাদি।
    ভলি. ১৩.ভারতের মুখ্য সংবিধান স্থপতি হিসেবে
    ভলি. ১৪.(২ খন্ডে) ডঃ আম্বেদকর এবং হিন্দু কোড বিল
    ভলি. ১৫. ডঃ আম্বেদকর স্বাধীন ভারতের প্রথম আইন মন্ত্রী হিসেবে এবং সংসদের বিরোধী সদস্য হিসেবে (১৯৪৭-১৯৫৬)
    ভলি. ১৬. ডঃ আম্বেদকরের পালি ব্যাকরণ
    ভলি. ১৭(১ম অংশ) ডঃ বি. আর. আম্বেদকর এবং তাঁর Egalitarian রাষ্ট্র বিপ্লব – মানবাধীকার যুদ্ধ। Events starting from March 1927 to 17 November 1956 in the chronological order
    (২য় অংশ) ডঃ বি. আর. আম্বেদকর এবং তাঁর Egalitarian রাষ্ট্র বিপ্লব – সামাজিক-রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কর্মকান্ড। Events starting from November 1929 to 8 May 1956 in the chronological order
    (Part III) ডঃ বি. আর. আম্বেদকর এবং তাঁর Egalitarian রাষ্ট্র বিপ্লব – বক্তব্যসমূহ. Events starting from 1 January to 20 November 1956 in the chronological order
    ভলি. ১৮(৩ খন্ডে) ডঃ বি. আর. আম্বেদকরের রচনাবলী এবং বক্তব্যসমূহ (মারাঠী)
    ভলি. ১৯ডঃ বি. আর. আম্বেদকরের রচনাবলী এবং বক্তব্যসমূহ (মারাঠী)
    ভলি. ২০ ডঃ বি. আর. আম্বেদকরের রচনাবলী এবং বক্তব্যসমূহ (মারাঠী)
    ভলি. ২১ডঃ বি. আর. আম্বেদকরের ছবিগুচ্ছ এবং চিঠি পত্র

    [সম্পাদনা]সমালোচনা ও উইল

    আম্বেদকরের উইল একটি সামাজিক রাজনৈতিক সংস্কারক হিসেবে আধুনিক ভারতে এর প্রভাব লক্ষণীয় ছিলো। স্বাধীনতাত্তোর ভারতে তাঁর সামাজিক রাজনৈতিক চিন্তাধারা সমগ্র রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সম্মান অর্জন করে। তাঁর যুগান্তকারী পদক্ষেপ অনেক জীবনাকাশে প্রভাব ফেলে এবং আজকের ভারতকে যেভাবে পরিচালিত করে আর্থ-সামাজিক বিচক্ষণভাবে, শিক্ষা ও স্বীকৃতি সূচক আর্থ-সামাজিক ও নৈতিক অভিপ্রায়। তাঁর পাণ্ডিত্য ভাবধারা তাঁকে স্বাধীন ভারতের প্রথম আইন-মন্ত্রী হতে ও সংবিধান খসড়া কমিটির সভাপতি হওয়ার নেতৃত্ব দেয়। তিনি একাগ্রভাবে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও ধর্মীয় গোঁড়াবাদী সাম্প্রদায়িক তথাকথিত হিন্দু সমাজকে সমানভাবে সমালোচনা করেন। তাঁর হিন্দু নিন্দা ও বর্ণ প্রথার স্থাপনা, তাঁকে বিতর্কিত করে তুলে, যদিও তাঁর বৌদ্ধ ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টি ভারতে বৌদ্ধ দর্শন ও বিদেশে পূনর্জাগরণের সৃস্টি করে।

    আম্বেদকরের রাজনৈতিক মতাদর্শ দলিত রাজনৈতিক দল গঠিত হয়, প্রচারণা এবং কর্মীদের ভারতজুড়ে সক্রিয় ছিল, বিশেষত মহারাষ্ট্র। আম্বেদকরের রাজনৈতিক মতাদর্শ দলিত রাজনৈতিক দল গঠিত হয়, প্রচারণা এবং কর্মীদের ভারতজুড়ে সক্রিয় ছিল, বিশেষত মহারাষ্ট্র। তাঁর অনুপ্রেরণায় দলিত বৌদ্ধ আন্দোলন ভারতের অনেকাংশে বৌদ্ধ দর্শনের পুনর্যৌবন দান করে। ১৯৫৬ সালের নাগপুরের অনুষ্ঠানের সাথে তাল মিলিয়ে দলিত কর্মীরা বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ ধর্মান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন।

    কিছু পণ্ডিত, সাথে কিছু ক্ষতিগ্রস্থ অন্ত্যজদের মতে, ব্রিটিশরা তাদের প্রতি নিরপেক্ষ ছিল, ব্রিটিশ নীতিমালা অব্যাহত থাকার দরুণ অনেক কুসংস্কার দূর করা সম্ভব হয়েছিলো। এই ধরনের সহমত ব্যক্ত করেন জ্যোতিরাও ফুলে সহ অনেক সামাজিক কর্মীরা। বর্তমানে ভারতে আম্বেদকর কর্তৃক প্রদত্ত সংরক্ষিত প্রাতিষ্ঠানিক আসনগুলো ছিল সেকেলে ও অযাচিত। অবশ্য এই ধরনের বক্তব্যকে দলিত সংঘ দ্বারা সবসময় অস্বীকৃত হয়। তাঁরা একে ভারতের হিন্দু সমাজ কর্তৃক অস্পৃশ্যদের উপর ও দলিত বিরোধী বক্তব্য বলে মনে করেন এবং বর্ণদের জন্য ভারতে সংরক্ষিত আসন ঔপনিবেশিক সময়োত্তর দলিতদের উচ্চ মার্গে তোলে।

    ১৯৯০ দশকের শেষ দিকে, হাঙ্গেরী-রোমানীরা তাদের নিজস্ব অবস্থার সাথে ভারতের দলিতদের অবস্থার তুলনা করেন। আম্বেদকরের পদক্ষেপের জন্যই তাঁরা বৌদ্ধ ধর্মে ধরমান্তরিত হতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলো।.[১৬]

    [সম্পাদনা]গ্রামীণ সংস্কৃতি

    আম্বেদকর নামটি উৎপীড়িত ও দীর্ঘমেয়াদী শোষণের প্রতীক হয়ে উঠে। "জয় ভীম" নামটি সমগ্র ভারতে বৌদ্ধদের কাছে প্রশংসিত হয়ে উঠে।[১৭] তাঁর জীবনী ও দর্শনের উপর কতিপয় চলচ্চিত্র, নাটক এবং সাহিত্য বিষয়ক লেখা তৈরি হয়। ২০০০ সালে, জব্বার প্যাটেল পরিচালিত তাঁর জীবনী নির্ভর ইংরেজী চলচ্চিত্র (পরে হিন্দি ও অন্য ভারতীয় ভাষায় অনুদিত) "ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর"[১৮] ভারতীয় নামের তারকা অভিনেতা মম্মত্ত এই চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি স্পন্সর করেন ইন্ডিয়াস ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এবং মিনিষ্ট্রি অব সোস্যাল জ্যাস্টিস। ছবিটি বহু বিতর্কের অবতারণার মধ্য দিয়ে মুক্তিলাভ করে। আম্বেদকর চরিত্রের জন্য মম্মত্ত সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে লাভ করেন। ডেভিড ব্লান্ডেল,ইউসিএলএ নৃতত্ত্বের অধ্যাপক এবং মানবজাতিতত্ত্ববিদ এরাইজিং লাইট নামের একটি ধারাবাহিক ঘটনাবহুল চিত্র ভারতের সামাজিক সমৃদ্ধির জন্য নির্মাণ করেন। এরাইজিং লাইট হচ্ছে আম্বেদকরের জীবনী ও ভারতের উন্নতির উপর একটি চলচ্চিত্র। রাজেশ কুমার লিখিত অরভিন্দ গর পরিচালিতনাটক "আম্বেদকর ও গান্ধী" ইতিহাসের দুই ব্যক্তিত্ব মহাত্মা গান্ধী ও ভীমরাও আম্বেদকরকে তুলে ধরা হয়।[১৯]
    আম্বেদকর যখন ছোট ছিলেন আম্বেদকরের বাবা রামজী চাইতেন যেন ভীমরাও যেন সংস্কৃত ভাষা শেখেন এবং সেই জন্য তাঁকে মুম্বাইয়েরএলিফিনস্টোন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করান। দলিত ছিলেন বিধায় তিনি তা পাঠে অস্বীকৃতি জানান। এইটা জেনে পুনের ৮৪ বছর বয়ষ্ক বৈদিক পন্ডিত প্রভাকর জোশি "ডঃ বি আর আম্বেদকর"এর উপর ২০০৪ সালে একটি জীবনী লেখেন। জোশি এর জন্য মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক মহাকবি কালিদাসপুরস্কার লাভ করেন। কিছু শিক্ষক ছাত্র ভীমরাও-এর প্রতি যে অবিচার করেছিলেন গ্লুকোমার সাথে যুদ্ধ করতে করতে প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ বয়বৃদ্ধ জোশি১৫৭৭ শ্লোকের "ভীমায়ন" রচনা করেন।[২০]
    লখনৌতে বিএসপি নেতা মায়াবতী ডঃ বি আর আম্বেদকর সামাজিক পরিবর্তন স্থল নির্মাণ করেন। আম্বেদকরের জীবনী ও উদ্ধৃতি দিয়ে চৈত্যটি নির্মাণ করা হয়। গ্রেট ব্রিটেন হোটেল (সরাইখানা), ৪৪৭ চার্চ স্ট্রিট, ভিক্টোরিয়াঅস্ট্রেলিয়ার সামনে, ডঃ আম্বেদকরের প্রতিকৃতি শোভা পায়।[২১]

    [সম্পাদনা]তথ্যসূত্র

    Example.of.complex.text.rendering.svg This article contains Indic text.
    Without rendering support, you may seequestion marks, boxes or other symbolsinstead of Indic characters; or irregular vowel positioning and a lack of conjuncts.
    ভীমরাও রামজি আম্বেডকর সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে হলে উইকিপিডিয়ার সহপ্রকল্পগুলোতে অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন:

    Wiktionary-logo-en.svg সংজ্ঞা, উইকিঅভিধান হতে
    Wikibooks-logo.svg পাঠ্যবই, উইকিবই হতে
    Wikiquote-logo.svg উক্তি, উইকিউক্তি হতে
    Wikisource-logo.svg রচনা সংকলন, উইকিউৎস হতে
    Commons-logo.svg ছবি ও অন্যান্য মিডিয়া, কমন্স হতে
    Wikivoyage-logo.svg ভ্রমণ নির্দেশিকা, উইকিভয়েজ হতে
    Wikinews-logo.png সংবাদ, উইকিসংবাদ হতে

    1.  "Some Facts of Constituent Assembly"। Parliament of India। National Informatics Centre. Retrieved 20011-04-14। "On 29 August, 1947, the Constituent Assembly set up a Drafting Committee under the Chairmanship of Dr. B.R. Ambedkar to prepare a Draft Constitution for India"
    2.  Michael (1999), p. 65, notes that "The concept of Ambedkar as a Bodhisattva or enlightened being who brings liberation to all backward classes is widespread among Buddhists." He also notes how Ambedkar's pictures are enshrined side-to-side in Buddhist Vihars and households in Indian Buddhist homes.
    3.  Frances Pritchett। "youth"। Columbia.edu. Retrieved 2010-07-17
    4.  Jaffrelot, Christophe (2005).Ambedkar and Untouchability: Fighting the Indian Caste System. New York: Columbia University Press. p. 2. আইএসবিএন 0-231-13602-1.
    5.  Pritchett, Frances। "In the 1890s" (PHP). Retrieved 2006-08-02
    6.  Frances Pritchett। "Waiting for a Visa, by Dr. B. R. Ambedkar"। Columbia.edu. Retrieved 2010-07-17
    7. ↑ ৭.০ ৭.১ "Bhim, Eklavya"www.outlookindia.com. Retrieved 2010-07-17
    8. ↑ ৮.০ ৮.১ Pritchett, Frances। "In the 1900s" (PHP). Retrieved 2006-08-02
    9. ↑ ৯.০ ৯.১ Pritchett, Frances। "In the 1930s" (PHP). Retrieved 2006-08-02
    10. ↑ ১০.০ ১০.১ Pritchett, Frances। "In the 1940s" (PHP). Retrieved 2006-08-02
    11. ↑ ১১.০ ১১.১ ১১.২ ১১.৩ ১১.৪ Ambedkar, Bhimrao Ramji (1946). "Chapter X: Social Stagnation"Pakistan or the Partition of India. Bombay: Thackers Publishers. pp. 215–219. Retrieved 2009-10-08.
    12. ↑ ১২.০ ১২.১ ১২.২ ১২.৩ Pritchett, Frances। "In the 1950s" (PHP). Retrieved 2006-08-02
    13.  Online edition of Sunday Observer - Features
    14.  B. R. Ambedkar (1979), Dr. Babasaheb Ambedkar, writings and speeches, Bombay: Education Dept., Govt. of Maharashtra,
    15.  "Riddle In Hinduism"। Ambedkar.org. Retrieved 2010-07-17
    16.  "Magazine / Land & People : Ambedkar in Hungary"। Chennai, India: The Hindu। 2009-11-22. Retrieved 2010-07-17
    17.  Jamnadas, K.। "Jai Bhim and Jai Hind"
    18.  Dr. Babasaheb Ambedkar -ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ
    19.  P.ANIMA (2009-07-17)। "A spirited adventure"। Chennai, India: The Hindu. Retrieved 2009-08-14
    20.  [১]
    21. http://www.greatbritainhotel.com.au/

    [সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ

No comments:

Post a Comment