Monday, March 18, 2013

পরিবর্তন জমানায় পশ্চিম বঙ্গে সর্ব ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের আবহ।পেশী শক্তি গ্রাস করেছে নাগরিক পরিষেবা।সাধারণ জনগণের চিকিত্সা ক্রয়শক্তি নিরপেক্ষ নয়, তাই সরকারি হাসপাতাল রোগ নিরাময়ের একমাত্র ঠিকানা অধিকাংশ মানুষের।সেখানে দৈনান্দিন যে অভিজ্ঞতা ঘটে, তা আমরা প্রত্যক্ষ দেখতে পাই। কিন্তু দায়িত্বহীনতার যে নজির সৃষ্টি হচ্ছে, তার ফলে চিকিত্সা পেশার নৈতিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।আমরা বরং রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে এই সংকটের সমাধান কল্পে কিছু করার চেষ্টা করি, যদি সুস্থ জীবনের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন বোধ হয়।যাদের প্রচুর পয়সা হয়েছে এবং যারা সরকারি হাসপাতালের সীমানা অতিক্রমণ করেন না, তাঁদের হয়ত কিছু যাবে আসবে না।কিন্তু যাদের যায় আসে, তাঁদের কথাটিও একবার ভেবে দেখুন। পলাশ বিশ্বাস

পরিবর্তন জমানায় পশ্চিম বঙ্গে সর্ব ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের আবহ।পেশী শক্তি গ্রাস করেছে নাগরিক পরিষেবা।সাধারণ জনগণের চিকিত্সা ক্রয়শক্তি নিরপেক্ষ নয়, তাই সরকারি হাসপাতাল রোগ নিরাময়ের একমাত্র ঠিকানা অধিকাংশ মানুষের।সেখানে দৈনান্দিন যে অভিজ্ঞতা ঘটে, তা আমরা প্রত্যক্ষ দেখতে পাই। কিন্তু দায়িত্বহীনতার যে নজির সৃষ্টি হচ্ছে, তার ফলে চিকিত্সা পেশার নৈতিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।আমরা বরং রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে এই সংকটের সমাধান কল্পে কিছু করার চেষ্টা করি, যদি সুস্থ জীবনের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন বোধ হয়।যাদের প্রচুর পয়সা হয়েছে এবং যারা সরকারি হাসপাতালের সীমানা অতিক্রমণ করেন না, তাঁদের হয়ত কিছু যাবে আসবে না।কিন্তু যাদের যায় আসে, তাঁদের কথাটিও একবার ভেবে দেখুন

 পলাশ বিশ্বাস

কাজ ফেলে দল বেঁধে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেলেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন ডাক্তাররা। হাসপাতালের ১২২জন ইন্টার্ন দুদিনের জন্য তাজপুর, মন্দারমণি বেড়াতে চলে গিয়েছেন। শনিবার গভীর রাতে এনআরএস হাসপাতাল থেকে তিনটি ভলভো বাসে রওনা হন তাঁরা। অভিযোগ, ইন্টার্নদের দুদিনের এই ট্যুর স্পনসর করছে তিনটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। 

ওই তিন সংস্থার টাকাতেই তাজপুর, মন্দারমণিতে হোটেল বুক করা হয়েছে। এনআরএস সূত্রে খবর ছুটির তোয়াক্কা না করেই ইন্টার্নরা কোনও অনুমতি ছাড়াই বেড়াতে গেছেন এই ইন্টার্নরা।


পরিবর্তন জমানায় পশ্চিম বঙ্গে সর্ব ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের আবহ।পেশী শক্তি গ্রাস করেছে নাগরিক পরিষেবা।সাধারণ জনগণের চিকিত্সা ক্রয়শক্তি নিরপেক্ষ নয়, তাই সরকারি হাসপাতাল রোগ নিরাময়ের একমাত্র ঠিকানা অধিকাংশ মানুষের।সেখানে দৈনান্দিন যে অভিজ্ঞতা ঘটে, তা আমরা প্রত্যক্ষ দেখতে পাই। কিন্তু দায়িত্বহীনতার যে নজির সৃষ্টি হচ্ছে, তার ফলে চিকিত্সা পেশার নৈতিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।আমরা বরং রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে এই সংকটের সমাধান কল্পে কিছু করার চেষ্টা করি, যদি সুস্থ জীবনের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন বোধ হয়।যাদের প্রচুর পয়সা হয়েছে এবং যারা সরকারি হাসপাতালের সীমানা অতিক্রমণ করেন না, তাঁদের হয়ত কিছু যাবে আসবে না।কিন্তু যাদের যায় আসে, তাঁদের কথাটিও একবার ভেবে দেখুন

 প্রমোদ ভ্রমণ থেকে কার্যত মুখ লুকিয়ে হাসপাতালে ফিরলেন এনআরএস-এর ইন্টার্নরা। ওষুধ কোম্পানির টাকায় মন্দারমনি ও তাজপুর বেড়াতে যান এনআরএস-এর ১২২ জন ইন্টার্ন। এমনকি হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার কথা এরা কেউ কর্তৃপক্ষকে জানানোর প্রয়োজনও বোধ করেননি বলে অভিযোগ। সংবাধমাধ্যমে এই খবর জানাজানি হতেই গভীর রাতে এরা ফিরে আসেন। 

সাংবাদিকদের এড়াতে একসঙ্গে না ফিরে, কেউ শিয়ালদহ, কেউ মৌলালিতে বাস থেকে নেমে আলাদা আলাদা ভাবে হাসপাতালে ফেরেন। এখানেই শেষ নয়, কলকাতায় ফিরে ফের ঝামেলায় জড়ান হবু ডাক্তাররা। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের সঙ্গে এরা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন বলে জানা গিয়েছে। ইন্টার্নদের বেড়াতে আসার খবর সম্প্রচার করার 'অপরাধে' সাংবাদিকদের সঙ্গে গোলমাল করেন তাঁরা। ক্যামেরা দেখেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন অনেকে। জেলা পুলিশের এসকর্টে গভীর রাতে কলকাতায় ফেরেন ইন্টার্নরা। সাংবাদিকদের সঙ্গে ঝামেনা করার জন্য পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হলেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গোটা বিষয়টি নিয়েই কোনও মন্তব্য করতে চাননি এনআরএস কর্তৃপক্ষ।

এনআরএসে গণ-ছুটি বিতর্কে ১২২ জন ইন্টার্নকে শোকজ করল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনার তদন্তে প্রিন্সিপালের নেতৃত্বে তিন সদস্যের  কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

একসঙ্গে চিঠি লিখে শোকজের জবাব দিয়েছেন ইন্টার্নরা। কিন্তু, এক চিঠিতে নয় পৃথক পৃথকভাবে ১২২ জনকে শোকজের জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আপাতত প্রত্যেকে পৃথকভাবে উত্তর দিচ্ছেন। সকলের উত্তর হাতে পাওয়ার পর স্বাস্থ্য দফতরের কাছে রিপোর্ট জমা দেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

এর আগে, এই ঘটনায়  ইন্টার্নদের আড়াল করার চেষ্টা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইন্টার্নদের পক্ষে সাফাই দিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শ্রীকান্ত পুরকায়েত জানান, ইন্টার্নরা ডাক্তার নন। তাঁদের রেজিস্ট্রেশন নেই। তাই চিকিত্সার অধিকারও নেই। সেকারণে ইন্টার্নদের ছুটি দেওয়া বা না দেওয়া নিয়ে, তাঁর কোনও দায় নেই বলে দাবি করেছিলেন অধ্যক্ষ। 


ওষুধ কোম্পানির অর্থে বেড়ানোর অভিযোগ হবু ডাক্তারদের বিরুদ্ধে



এই সময়: খাতায়-কলমে এখনও কেউ ডাক্তার হননি৷ তার আগেই ওষুধ কোম্পানির পয়সায় প্রমোদ-ভ্রমণে যাওয়ার অভিযোগ উঠল এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১২২ জন ইন্টার্নের বিরুদ্ধে৷ রবিবার ভোররাতে মন্দারমণি ও তাজপুরের সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে তাঁদের কেউ হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার কথা কর্তৃপক্ষকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি বলেও অভিযোগ৷ এনআরএসের অধ্যক্ষ শ্রীকান্ত পুরকায়স্থের সাফাই, একসঙ্গে এতজনের ছুটি নেওয়ার বিষয়টি তাঁর আদৌ জানা নেই৷ 

প্রশ্ন উঠছে মূলত দু'টি বিষয় ঘিরে৷ এক, কর্তৃপক্ষকে অন্ধকারে রেখে ও পরিষেবা শিকেয় তুলে একসঙ্গে এতজন ইন্টার্নের বেড়াতে যাওয়া৷ এবং দুই, মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার (এমসিআই) নির্দেশিকা অমান্য করে ও নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে তিনটি ওষুধ কোম্পানির যৌথ স্পনশরশিপে প্রমোদ-ভ্রমণে অংশ নেওয়া৷ দু'টি অভিযোগের কোনওটাতেই কোনও মন্তব্য করতে চাননি এনআরএস কর্তৃপক্ষ৷ চিকিত্সকদের নৈতিক নিয়ামক সংস্থা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার দিলীপকুমার ঘোষ বলেন, 'নীতিগত ভাবে বিষয়টি একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়৷ এনআরএস কর্তৃপক্ষ যদি কাউন্সিলের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে, তা হলে তদন্ত হবে এবং দোষ প্রমাণিত হলে ওই ইন্টার্নদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷' 

হাসপাতালের এমারজেন্সি ও ইনডোর বিভাগের পরিষেবা টিকিয়ে রাখার সিংহভাগ দায়িত্ব প্রধানত যাঁদের উপর, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইন্টার্নরা৷ সিনিয়র ডাক্তারদের ঠিক করে দেওয়া চিকিত্‍সার গতিপথ অক্ষরে অক্ষরে প্রয়োগ করে ইনডোরে চিকিত্‍সাধীন রোগীদের যথাযথ পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি বাস্তবে ডাক্তারি করার বুনিয়াদি শিক্ষাও নেন ইন্টার্নরা৷ কিন্ত্ত এ দিনের ঘটনায় স্পষ্ট, সরকারি স্তরে এশিয়ার বৃহত্তম ইনডোর পরিষেবা প্রদানকারী এনআরএস হাসপাতালের প্রায় ২৫০০ রোগীর চিকিত্সা পরিষেবা ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েই সমুদ্র সৈকত উপভোগ করতে গিয়েছেন একসঙ্গে এত জন হবু চিকিত্‍সক৷ 

উল্লেখ্য, এনআরএসের এ দিনের এই ঘটনা এ রাজ্যে এই প্রথম নয়৷ এর আগেও বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্নদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিত্সক বলেন, 'সব মেডিক্যাল কলেজের সমস্ত ইন্টার্নরাই তাঁদের ইন্টার্নশিপ শেষ করার পর দল বেঁধে প্রমোদ-ভ্রমণে যায়৷ অধিকাংশ সময়েই তা সংবাদমাধ্যমের গোচরে আসে না৷ জানাজানি হলে, অভিযুক্তদের ডেকে স্বাস্থ্যকর্তারা ভত্র্‌সনা করেন৷ শাস্তি কখনোই হয় না৷' ফলে, এই ১২২ জনের বিরুদ্ধেও কোনও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে স্বাস্থ্য মহলেই৷ 

এবিপি আনন্দর খবরের জের৷ ছুটি কাটছাঁট করে আজ ভোরে তাজপুর থেকে কলকাতায় ফিরলেন নীল রতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (এনআরএস)-এর ১২০ জন ইন্টার্ন৷


হাসপাতাল ফাঁকা করে তাজপুর ভ্রমণ৷ মেডিক্যাল কলেজের ১২০ জন ইন্টার্নের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দ্রুত তদন্ত শেষ করে স্বাস্থ্য ভবনে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে কলেজের অধ্যক্ষকে৷ 
অন্যদিকে, এবিপি আনন্দর খবরের জেরে ভ্রমণ কাটছাঁট করে সোমবার ভোরেই তাজপুর থেকে কলকাতায় ফিরলেন এনআরএসের ১২০ জন ইন্টার্ন৷ ফেরার পথে কেউ নামলেন নিজের বাড়িতে, কেউ বা এসে সরাসরি যোগ দিলেন হাসপাতালে৷
হাসপাতাল ফাঁকা করে তাজপুরে ভ্রমণে যান এনআরএস হাসপাতালের ১২০ জন ইন্টার্ন ডাক্তার৷ রবিবার এই খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে তাঁদের হাতে আক্রান্ত হন এবিপি আনন্দের প্রতিনিধি৷ এবিপি আনন্দে খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পর রবিবার বিকেল থেকেই তাজপুরে ইন্টার্নদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা৷ তাঁদের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা৷ রাতভর চলে বিক্ষোভ৷ শেষ পর্যন্ত ভোররাতে পুলিশের সাহায্যে তাজপুর ছাড়েন ইন্টার্নরা৷ 

http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/34724-2013-03-18-09-36-41


তাড়া থাকলে অন্যত্র যান, কর্মীর 'পরামর্শ' এনআরএসে



তাড়া থাকলে অন্যত্র যান, কর্মীর 'পরামর্শ' এনআরএসে
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য 

স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, নিয়ম মেনেই চলছে সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ৷ অর্থাত্, যখন খোলার কথা তখনই খুলছে৷ চিকিত্সক থাকছেন৷ ঠিক সময়ে টিকিট দেওয়া হচ্ছে৷ এই সব আর কী! কিন্ত্ত আদতে কী অবস্থায় রয়েছে সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ? সেটা জানতেই 'এই সময়' হাজির নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে৷ 

এমারজেন্সি গেট পেরিয়ে ডানদিকে তিনতলা বহির্বিভাগ ভবন৷ সকাল ন'টা৷ আউটডোর টিকিট কাটার লম্বা লাইন একতলার লম্বা করিডোরে৷ একই ছবি অন্যান্য কাউন্টারগুলোর বাইরেও৷ যে কাউন্টার খোলার কথা সকাল ৯টায়, হাসপাতালকর্মীরা হেলতে দুলতে এসে সেই কাউন্টার খুললেন সওয়া ৯'টায়৷ ধীর লয়ে শুরু হল ওপিডি টিকিট দেওয়া৷ পেছন থেকে এক রোগীর কাতর অনুনয়, 'দাদা একটু তাড়াতাড়ি হাত চালাবেন৷ শরীর বড় খারাপ! দাঁড়াতে পারছি না আর৷' সপাটে অন্য প্রান্ত থেকে উত্তর এল, 'এত তাড়া থাকলে বেসরকারি হাসপাতালে যান৷' 

আধঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানোর পর টিকিট হাতে এল৷ এবার ডাক্তার দেখানোর জন্য নির্দিষ্ট ঘরে যাওয়ার পালা৷ একতলার তিন নম্বর ঘর কার্ডিওলজির৷ আউটডোর টিকিট নিয়ে সেই ঘরে যেতেই তালিকায় নাম উঠল৷ কিন্ত্ত ভেতরে সব ভোঁ-ভাঁ৷ যে অ্যাসিস্টান্ট প্রফেসরের (নাম- বিপি চ‌েাপাধ্যায়) বসার কথা তিনি এসেই পৌঁছন নি৷ বদলে অন্য ঘরে রোগী দেখছেন একজন মেডিক্যাল অফিসার এবং একজন জুনিয়র ডাক্তার৷ যদিও সেখানে শুধুই নতুন রোগীদের (অর্থাত্, এদিনই প্রথমবার তাঁরা বহির্বিভাগে এসেছেন ডাক্তার দেখাতে) ভিড়৷ আর পুরোনো রোগীদের ভাগ্যে শুধুই অপেক্ষা৷

ডাক্তারের ঘরের ভেতরে বসেছিলেন হাসপাতালেরই এক মহিলা কর্মী৷ 'ডাক্তারবাবু কখন আসবেন?' জানতে চাওয়ায় জবাব এল, 'ডাক্তারের অনেক কাজ৷ সময় হলেই আসবেন৷ অপেক্ষা করুন৷' ভাবটা এমন, নির্ধারিত সময়ে বহির্বিভাগে আসার দায় শুধু রোগীদের৷ ডাক্তারদের নয়৷ বিপি চ‌েাপাধ্যায় অবশ্য এলেন৷ তবে নির্ধারিত সময় থেকে মাত্র এক ঘণ্টা লেটে৷ অর্থাত্ ১০টায়৷ পুরোনো রোগীদের গা-সওয়া মুখ৷ বছর চল্লিশের সুষমাদেবী (নাম পরিবর্তিত) বললেন, 'কভি কভি অউর ভি দেরি করতে হ্যায় ডক্টার সাব৷' ডাঃ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, আমি নির্দিষ্ট সময়েই বহির্বিভাগে ঢুকি৷ কখনও কখনও দেরি হয়, কারণ, আমাকে ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের দেখে আসতে হয়৷ ততক্ষণ পিজিটি আর মেডিক্যাল অফিসাররাই সামলে দেন৷ 

একই ছবিরই যেন আলাদা আলাদা চিত্রনাট্য গোটা বহির্বিভাগ জুড়েই৷ ইএনটি, সার্জারি, মেডিসিন কোথাওই সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দেখা নেই সিনিয়র ডাক্তারদের৷ অথচ, যাঁদের ওপিডিতে হাজির থাকার কথা সকাল ৯টায়৷ 

দোতলার আট নম্বর ঘরের মেডিসিন এপিডি৷ জনা তিরিশেক রোগীর ভিড় ঘরটিতে৷ 'অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর এনএম বিশ্বাস এসেছেন?' জানতে চাওয়ায় কর্তৃব্যরত হাসপাতাল কর্মীর জবাব এল, 'এখনও আসেননি৷ আদৌ আসবেন কি না জানা নেই৷' কিন্ত্ত, 'আজ তো ওঁরই থাকার কথা ওপিডিতে৷' এবার আর জবাব নয় পরিবর্তে অর্থপূর্ণ হাসি ফুটল প্রবীণ ওই কর্মীর মুখে৷ যদিও, মুখে শুধু বললেন, 'এখন, সাড়ে দশটা বাজে৷ যদি অপেক্ষা করতে পারেন, তো বসুন৷' অপেক্ষারত অন্যান্য রোগী আর রোগীর আত্মীয়রা জানালেন, আরেক জন অ্যাসিস্টান্ট প্রফেসর (পিনাকি রায়) ততক্ষণে বেরিয়ে গিয়েছেন৷ ফলত, পুরোনো রোগীদের কপালে জুটল অপেক্ষাই৷ ডাঃ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ডিউটি আওয়ার্স শুরু হয় ৯টায়৷ ৯টাতেই ওপিডিতে আসলে রাউন্ড দেব কখন? শুক্রবার দেরি করে ওপিডিতে যাওয়ার কারণ, তখন আমি রাউন্ড দিচ্ছিলাম ওয়ার্ডে৷ 

পাশেই ন'নম্বর ঘরটা সার্জারি ওপিডি৷ সেখানেও সিনিয়র ডাক্তারের অপেক্ষায় হাপিত্যেশ করতে হচ্ছে রোগীদের৷ কারণ, তিনিই এসে রোগীদের ভর্তির ডেট দেবেন৷ এমন সমস্যা যে এনআরএসে নতুন নয় তা মানছেন এক হাসপাতাল কর্তা৷ তাঁর মন্তব্য, 'আগের এমএসভিপি চেষ্টা করেছিলেন সিনিয়র ডাক্তারদের হাজিরা নিশ্চিত করার৷ কিন্ত্ত, তাতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি৷ এক ডাক্তার তো রিতিমত টেবিল চাপড়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন এমএসভিপিকে৷' তবে, বহির্বিভাগে কেন এমন হাজিরা সিনিয়র ডাক্তারদের? জানতে চাওয়ায় হাসপাতালের বর্তমান মেডিক্যাল সুপার তথা উপাধ্যক্ষ শাশ্বতি মজুমদার 'সদ্য এসেছি' বলে বিষয়টা এড়িয়ে গিয়েছেন৷ তাঁর মন্তব্য, 'আমি সদ্য এসেছি৷ তাই আমার পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়৷ আপনি স্বাস্থ্য দন্তরের মুখপাত্রকে যোগাযোগ করন৷' আর হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রদীপ ঘোষের মন্তব্য, 'এটা এমএসভিপি-র দেখার কআ৷ তবে লিখিত অভিযোগ জমা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷' 

অর্থাত্, কোনও রোগীর পরিবার যদি লিখিত আকারে সিনিয়র ডাক্তারদের এই মর্জিমাফিক চলনের প্রতিবাদ করলে তবেই কিছু হতে পারে৷ নতুবা, বহির্বিভাগের হাল শুধরোনোর কোনও দায় নেই হাসপাতালের৷ স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী অবশ্য ডাক্তারদের বক্তব্য মানতে নারাজ৷ ২০১১ সালের জুনে রাজ্য সরকারের অর্ডার অনুযায়ী, কোনও ডাক্তারের ওপিডি ডিউটি থাকলে তাঁকে ন'টাতেই ওপিডিতে উপস্থিত হতে হবে৷ রাউন্ড দেওয়ার প্রয়োজন থাকলে, প্রয়োজনে আগে এসে রাউন্ড সারতে হবে৷ 

No comments:

Post a Comment