Friday, April 25, 2014

সারদার কাটা দুধ জমে দই,নির্বাচনে জিতেও কুণালদশা অসম্ভব নয় তৃণমূল এবং সি পি এম-কে বাদ দিয়ে রাজ্যে একটি নতুন তৃতীয় বিকল্পের সম্ভাবনার কথা জানালেন সি পি এম থেকে বহিষ্কৃত নেতা রেজ্জাক মোল্লা৷‌

সারদার কাটা দুধ জমে দই,নির্বাচনে জিতেও কুণালদশা অসম্ভব নয়


তৃণমূল এবং সি পি এম-কে বাদ দিয়ে রাজ্যে একটি নতুন তৃতীয় বিকল্পের সম্ভাবনার কথা জানালেন সি পি এম থেকে বহিষ্কৃত নেতা রেজ্জাক মোল্লা৷‌

बासी कढ़ी में उबाल,फिर शारदा फर्जीवाड़े का बवाल!

এক্সকেলিবার স্টিভেন্স বিশ্বাস


एक्सकैलिबर स्टीवेंस विश्वास

সারদা কাণ্ডে জনসমক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে কি কুণাল ঘোষ নেত্রীর সততার ভাবমূর্তির উপর বড় প্রশ্ন তুলে দিলেন?

হ্যাঁ

না

এবার মিলবে জবাব



টাকা সরাতে খোলা হয় লোকসানের সংস্থা

মাত্র ছ'বছরে আমানতকারীদের কাছ থেকে প্রায় ২৪৬০ কোটি টাকা তুলেছিল সারদা গোষ্ঠী। চার বছরের মধ্যে এই গোষ্ঠীর অধীনে জন্ম নিয়েছিল ২৩৯টি সংস্থা। এবং সেই প্রতিটি সংস্থাই নাকি লোকসানে চলত! সরকারি সংস্থা রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ (আরওসি)-এর কাছে সুদীপ্ত সেনের সারদা গোষ্ঠী ফি বছর যে অডিট রিপোর্ট পেশ করেছে, সেখানেই এমন দাবি করা হয়েছে।

২৬ এপ্রিল, ২০১৪

e e e


ফাঁসে মৃত্যু সারদার আমানতকারীর

সারদা-সহ তিনটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা রেখেছিলেন ক্যানিংয়ের পরানিখেকো গ্রামের সুশান্ত সর্দার (৪২)। সেই টাকা যে ফেরত পাবেন না, তা প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার ইস্তক মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতাও ছিল। শুক্রবার সকালে বাড়ির কাছেই একটি গাছ থেকে তাঁর মৃতদেহ ঝুলতে দেখেন গ্রামবাসী।

২৬ এপ্রিল, ২০১৪

e e e


সিবিআই হলে তৈরি মুকুল, প্রশ্ন মমতার, সরব বুদ্ধদেব

সারদা-কাণ্ডে বিরোধীদের লাগাতার আক্রমণের মুখে এ বার ভিন্ন সুর ধরা পড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শাসক দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের গলায়। পুরনো উদাহরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যখন সিবিআই তদন্তের যুক্তি নিয়েই প্রশ্ন তুললেন, তখন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা মুকুলবাবু ঘোষণা করলেন সিবিআই কেন, যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে তাঁরা প্রস্তুত!

২৬ এপ্রিল, ২০১৪

e e e


ইডির সওয়ালের জবাব লিখে এলেন অর্পিতা

তিনি বলেছিলেন, নিজের কেন্দ্রে ভোট মিটে যাওয়ার পরের দিনই হাজিরা দেবেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর সামনে। কথা রাখলেন অর্পিতা ঘোষ। বৃহস্পতিবারই ভোট হয়েছে বালুরঘাটে। আর শুক্রবার সল্টলেকে ইডি-র অফিসে হাজির হয়ে আড়াই ঘণ্টা ধরে তদন্তকারীদের নানা প্রশ্নের জবাব দিলেন বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী। সমস্ত প্রশ্নের উত্তর হাতে লিখে জমা দিয়ে আসতে হয়েছে তাঁকে।

২৬ এপ্রিল, ২০১৪

e e e


উধাও কত, জানেই না সারদা কমিশন

বাজার থেকে ঠিক কত টাকা তুলেছে সারদা গোষ্ঠী, এক বছর পরেও তা জানাতে পারল না শ্যামল সেন কমিশন! সারদা কেলেঙ্কারির পরে গত বছর শ্যামল সেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করে রাজ্য সরকার। গত এক বছরে তারা কী কী কাজ করেছে, শুক্রবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তার ফিরিস্তি পেশ করেন কমিশনের চেয়ারম্যান শ্যামল সেন।

২৬ এপ্রিল, ২০১৪

e e e


লাইসেন্সের দানছত্র, ইডিতে অভিযুক্ত পুরসভা

সারদা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার নামে কলকাতায় একটি ঠিকানায় ৪৩টি লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলে আগেই অভিযোগ উঠেছিল। এ বার সেই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র কাছে। গত বছর সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পরে পুরসভায় এই নিয়ে সরব হন কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়।

২৬ এপ্রিল, ২০১৪

e e e


সারদার কাটা দুধ জমে দই,নির্বাচনে জিতেও কুণালদশা অসম্ভব নয়

মনে হচ্ছিল ঈলিশ ভোজে সারদা ভ্যানিশ,কোথায় কি গরমে হাস ফাঁস,কালবৈশাখীর দেখা নেই,শরীর জ্বালা জ্বালা,সারা বাংলা এখন মরুভূমি,বৃষ্টির পূর্বাভাষও নৈব নৈব চ- ইহার মধ্যেই চতুষ্কোণীয় নির্বাচন দাবপ্রবাহের মধ্যে সারদা মুর্তিমান কালবৈশাখী৷‌লাফিয়ে লাফিয়ে চড়ছে পারদ৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে ৪১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায় আলিপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা৷ ২০০৯ সালের ১৯ এপ্রিল ৪১.২ ডিগ্রিতে পৌঁছেছিল শহরের পারদ৷ দশ বছরে এপ্রিল মাসেই পারদের এতটা উত্থানের নজির আর নেই৷ ১৯৮০ সালের ২৫ এপ্রিল ৪১.৭ ডিগ্রির গরমের সাক্ষী থেকেছে শহর৷ সাড়ে তিন দশকের সেই রেকর্ড কি ভেঙে যাবে আজ?

বাংলার সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চাইছে মানুষ৷ অধিকাংশ সাধারণ মানুষ চাইছেন নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এই মামলার দায়িত্ব দেওয়া উচিত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে৷ তাহলেই উঠে আসবে প্রকৃত তথ্য৷ সন্ধান মিলবে বাংলা-বিহার-অসম-ত্রিপুরা-ওডিশায় কীভাবে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন সুদীপ্ত সেন৷ বুধবার দিনভরের জনমত সমীক্ষায় জোরাল দাবি উঠে এল সারদা-কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের৷


স্পষ্ট করে আবহবিদরা কিছু বলতে নারাজ৷ পূর্বাভাস বলছে, আজ, শুক্রবারও মহানগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশপাশেই থাকবে৷ সেক্ষেত্রে পর পর চার দিন ৪০ ডিগ্রির কাঁটা ছুঁয়ে থাকবে পারদ৷ এমনটাও শেষ বার হয়েছিল ২০০৯ সালেই৷ সে বার অবশ্য টানা ছ'দিন ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়ে ছিল পারা৷ সেই রেকর্ডও কি ভেঙে যাবে?


সবিশেষ উল্লেখ্য, চিটফান্ড নিয়ে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দলের অবস্হান পরিষ্কার করে দিলেন৷‌ তিনি বলেন, তৃণমূল চিটফান্ডের টাকা নেয় না৷‌ গরিবের দল৷‌ নিজের টাকায় আমরা খুব কষ্ট করে দল চালাই৷‌ পচাদের টাকা আমরা নিই না৷‌ সি পি এমকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, সি পি এমের আমলেই চিটফান্ডের বাড়বাড়ম্ত হয়৷‌ কোটি কোটি টাকা ওদের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হত৷‌ আমরা এ সব করি না৷‌ এর আগেই মমতা বলেন, তিন বছরের মধ্যে কোনও চিটফান্ড তৈরি হয়নি৷‌ যারা মানুষকে ঠকিয়েছে, তাদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি৷‌ আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ারও ব্যবস্হা করা হয়েছে৷‌ সরকার থেকেই কমিশন তৈরি হয়৷‌ মমতা এদিন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে চিটফান্ড নিয়ে মিডিয়ার একাংশ প্রচার করছে৷‌ যদিও আমার এতে কিছু এসে যায় না৷‌ তৃণমূল স্বচ্ছ রাজনীতি করে৷‌ মানুষের কথা ভাবে৷‌ মানুষের সঙ্গে থাকে৷‌ তাই যখনই মানুষ বিপদে পড়ে, আমরা তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই৷‌ এখনও বলছি, চিটফান্ডের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই৷‌ মমতা এদিন জোরের সঙ্গে বলেন, সরকার কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করবে না৷‌ যখনই কোনও ঘটনা ঘটছে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা তদম্ত শুরু করছি৷‌ সমাজবিরোধীদের ধরা হচ্ছে৷‌ আইন আইনের পথে চলছে৷‌ আমরা এ নিয়ে কারওর সঙ্গে আপস করব না৷‌


সারদা কেলেঙ্কারিতে ধৃত সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর ও সুদীপ্ত সেনের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী পিয়ালি সেন ৩০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেলেন। শুক্রবার সুদীপ্ত সেনের স্ত্রী পিয়ালি এবং পুত্র শুভজিত্‍কে নিজেদের হেফাজত থেকে ফের আদালতে হাজির করে ইডি৷ এদিন আদালতে তোলা হলে শর্তসাপেক্ষে জামিন পান পিয়ালি সেন। অন্যদিকে শুভজিত্‍ সেন জামিনের আবেদন করলে তা বাতিল হয়ে যায়। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন নগর দায়রা আদালতের বিচারক।


এদিন ইডি-র দপ্তরে নাট্যকর্মী এবং বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষও ইডির দপ্তরে হাজিরা দেন। অর্পিতাদেবী নিজেই বালুরঘাটে জানিয়েছিলেন, তিনি ইডি-র নোটিস পেয়েছেন এবং ভোট মিটলে ইডি-র দপ্তরে হাজির হবেন৷ কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন,আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ধাপে ধাপে বেশ কয়েকজনকে নোটিস পাঠানো হবে৷ তবে তাঁদের নাম জানাতে চাননি ইডি-র গোয়েন্দারা৷ কলকাতার একটি কাগজের সম্পাদক এবং তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ইমরান হাসানকেও ইডি তলব করেছে৷ তিনি সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ওই কাগজটি কিনে নেন গত বছর৷


অপরদিকে, এদিন সারদার এক আমানতকারী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। মৃতের নাম সুশান্ত সর্দার। ক্যানিংয়ের বেলেখালির বাসিন্দা সুশান্ত একদিকে যেমন আমানতকারী ছিলেন,আবার সারদার এজেন্টও ছিলেন।



৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গেল কলকাতার তাপমাত্রা৷‌ মরশুমে এই প্রথম৷‌ চার বছর পর৷‌ গরমে হাঁসফাঁস শুধু শহর কলকাতা নয়, দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় দাবদাহে নাজেহাল মানুষ৷‌ কালবৈশাখী কবে? তারও আগাম খবর দিতে পারছে না আবহাওয়া দপ্তর৷‌ তবে তীব্র এই গরমের মধ্যেই ভোটপ্রচার সারতে হচ্ছে নেতা-কর্মীদের৷‌ আজ, বুধবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জায়গায় তাপপ্রবাহের সতকর্তা জারি হয়েছে৷‌ সর্বত্রই আরও বাড়বে তাপমাত্রা৷‌ রাজ্যের বাইরে থেকে আসা গরম উত্তর-পশ্চিম হাওয়ার জন্যই এই অবস্হা৷‌ এদিকে বর্ধমানের কাটোয়ায় গরমে মৃত্যু হল এক কাঠমিস্ত্রির৷‌ কাটোয়ার দাঁইহাটের বাসিন্দা স্বপন বারুই কাজ থেকে ফেরার সময় সানস্ট্রোকে আক্রাম্ত হন৷‌ আগামী দু'তিন দিনেও পরিস্হিতির বিশেষ পরিবর্তন হবে না৷‌ মেঘ সেভাবে তৈরি হতে না পারার জন্যই এই অবস্হা তৈরি হচ্ছে৷‌ আসলে কয়েকদিন ধরেই বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমতে শুরু করেছে৷‌ সর্বনিম্ন আপেক্ষিক আদ্রর্তা কম থাকার জন্যই গরম হাওয়া বইতে থাকে৷‌ এদিন তার পরিমাণ ছিল মাত্র ২৮ শতাংশ৷‌ আগামী কয়েকদিনে তা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে৷‌ আসলে এর পরিমাণ যত কমবে গরম হাওয়া ততই বাড়বে৷‌ এই গরমের সঙ্গে বিশেষ পরিচয় নেই কলকাতার৷‌ অল্প রোদেই ঘর্মাক্ত হওয়াই যেন দস্তুর৷‌ কিন্তু এবার মার্চের শেষ থেকেই কিছুটা অচেনা গরম সঙ্গী হয়েছে শহর কলকাতার৷‌ এখন ঘাম হয় না৷‌ চোখ-নাক-মুখ জ্বলে যাচ্ছে৷‌ এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই অপরিচিত গরম আরও বেশি করে জাঁকিয়ে বসেছে৷‌ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে বিশেষ করে বাঁকুড়া, আসানসোলের শিল্পাঞ্চল, পুরুলিয়া– সর্বত্রই তাপমাত্রার পারদ যথেষ্ট চড়া৷‌ সেখানকার পরিস্হিতি আরও খারাপ৷‌ প্রসঙ্গত, প্রবল গরমে আসানসোলে সোমবারই এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছিল৷‌ গরমকালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বা তার বেশি থাকে, তা হলে তাপপ্রবাহের পরিস্হিতি তৈরি হয়৷‌ ঠিক উল্টোটা হয় শীতের সময়৷‌ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বা তার কম হলে তখন শৈত্যপ্রবাহের পরিস্হিতি তৈরি হয়৷‌ তবে সেক্ষেত্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে হয় ১০ ডিগ্রির নিচে৷‌ সেই মতো রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় ইতিমধ্যেই তাপপ্রবাহের পরিস্হিতি তৈরি হয়েছে৷‌ কলকাতায় শেষ বার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়েছিল ২০১০ সালে– পৌঁছেছিল ৪০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷‌ এপ্রিলে কলকাতার রেকর্ড তাপমাত্রা ছিল ১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল– পৌঁছেছিল ৪৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷‌ মঙ্গলবারের কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি ছিল৷‌ তাই তাপপ্রবাহ শুরু হয়েই গেছে৷‌ সকাল থেকে অনেকেই চোখেমুখে জ্বালা অনুভব করেছেন৷‌ কলকাতার রাস্তায় সকালেই চোখে পড়েছে নানারকমের সুদৃশ্য মাস্ক৷‌ চিকিৎসকের পরামর্শমতো অনেকেই এই মাস্ক ব্যবহার করেছেন৷‌ আপাতত কয়েক দিন এই গরম হাওয়ার দাপট থাকবে৷‌ বেলা একটু বাড়তেই রাস্তায় ভিড় কমতে শুরু করে৷‌ ভিড় বাড়ে বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয়ের দোকানে৷‌ এপ্রিলে গরম হাওয়া বওয়াটাই স্বাভাবিক৷‌ কিন্তু এই হাওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে৷‌ সাধারণত রাজ্যবাসী যে গরম হাওয়ার সঙ্গে পরিচিত, তা দখিনা হাওয়া৷‌ সেই হাওয়ায় জলীয় বাষ্পও থাকে৷‌ কিন্তু এই হাওয়া আসছে ছোট নাগপুরের মালভূমি থেকে৷‌ এতে কোনও জলীয় বাষ্প থাকে না৷‌ তাই এটি অনেক বেশি রুক্ষ হয়৷‌ আর বঙ্গোপসাগরের ওপরও নিম্নচাপ অক্ষরেখা থাকায় জলীয় বাষ্প পরিমাণমতো ঢুকতে পারছে না৷‌ এই অক্ষরেখা সরে গেলে অবশ্য জলীয় বাষ্প বেশি করে ঢুকবে৷‌ যার ফলে বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হবে৷‌ আর এদিকে চলতি সপ্তাহেই বর্ষার প্রাথমিক পূর্বাভাস দেবে মৌসম ভবন৷‌ তখন বোঝা যাবে, এই তীব্র গরম থেকে রেহাই দিতে কবে নামবে বর্ষা, আর কতটাই-বা তীব্র হবে৷‌ রাজ্যে বর্ষা আসে ১০ জুনের পরে৷‌


কোথায় কত


বাঁকুড়া ৪১.৩


আসানসোল ৪০.৫


কলকাতা ৪০.০


ডায়মন্ডহারবার ৪০.০


মেদিনীপুর ৪০.০


শ্রীনিকেতন ৩৯.৯


সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ডিগ্রি সেলসিয়াসে


যে সাংসদ সারদা কর্তার টিভি চ্যানেল,খবরের কাগজ দখল করেছেন,এক দফায় জোর করে তিনশ কোটির লগ্নি দস্তখত করিয়েছেন,তাঁর মুখচ্ছবি আবিস্কারের জন্য কৌন বনেগা করোড়পতি প্রতিযোগিতারও প্রযোজন নেই৷‌


মন্ত্রী সাংসদ আমলা শামলা চিত্রকর মায় রাষ্ট্রপতির নাম মুখে মুখে

সিবিআইয়ে অসম,উড়ীষ্যা,ত্রিপুরা এবং পূর্ববর্তী বাম শাসনের মুখ্যমন্ত্রীও প্রস্তুত,মা মাটি মানুষ সরকারের চোখে শুধুই চক্রান্ত

হেরে গেলে ল্যাঠা চুকে যাবে,পিয়ালীর ওকালতি নিয়ে ভূতের ভবিষতও হবে না,কিন্তু দাগিরা জিতলে পর কুণালদশা যদি পাইকারি সমাজবাস্তব হয়,বিধানসভা নির্বাচন গেরুয়া সুনামি হলেও মুলনিবাসী বহুজনদেরও কিছু করার থাকছে না৷‌


অন্যদিকে তৃণমূল এবং সি পি এম-কে বাদ দিয়ে রাজ্যে একটি নতুন তৃতীয় বিকল্পের সম্ভাবনার কথা জানালেন সি পি এম থেকে বহিষ্কৃত নেতা রেজ্জাক মোল্লা৷‌ নীতি-আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে-ওঠা এই ফ্রন্ট আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবে রাজ্যে৷‌ এবং সেই ফ্রন্টই পারবে বাংলায় বদল আনতে৷‌ শুক্রবার সরিষাতে ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রের পি ডি এস প্রার্থী সমীর পুততুন্ডের সমর্থনে একটি সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে রেজ্জাক এই মম্তব্য করেন৷‌ রেজ্জাক বলেন, 'পি ডি এসের মতো রাজ্যে আরও অনেক ছোট দল আছে৷‌ এই দলগুলো তৃণমূল এবং সি পি এমের বিরুদ্ধে লড়াই করছে৷‌ নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে এই দলগুলোকে এক করে একটি তৃতীয় বিকল্প গড়ে তুলতে হবে৷‌ রাজ্যের সেই তৃতীয় ফ্রন্ট আগামী বিধানসভা ভোটে লড়াই করবে৷‌ রাজ্যের দুই বড় পুঁজিবাদী ও নীতিহীন দলের বিরুদ্ধে গরিব মানুষদের নিয়ে লড়াই করলে বাংলায় বদল আসবেই৷‌' অন্যদিকে, লোকসভা নির্বাচনে তৃতীয় বিকল্পকে সমর্থন করে রেজ্জাক বলেন, 'শিল্পপতিদের কালো টাকায় দেশের বড় দুটি দল কংগ্রেস এবং বি জে পি ভোট করে৷‌ নির্বাচনী ব্যবস্হাকে গ্রাস করেছে কালো টাকা৷‌ টাকার খেলার জোরে পুঁজিপতিরা দেশকে কিনে নিচ্ছে৷‌ পুঁজিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে দিল্লিতে তৃতীয় বিকল্প প্রয়োজন৷‌' এদিন সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সভাস্হলে আসেন রেজ্জাক৷‌ তিনি আগেই সমীরের হয়ে প্রচারে আসার জন্য কথা দিয়েছিলেন৷‌ একদা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সি পি এমের সম্পাদক ছিলেন সমীর৷‌ সেই সময় রেজ্জাক দলের জেলা সদস্য ছিলেন৷‌ সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে এদিন সমীরের হয়ে তিনি প্রচারে আসেন বলে জানান রেজ্জাক৷‌ সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে তোপ দেগে কৃষক আন্দোলনের প্রবীণ নেতা রেজ্জাক বলেন, 'মমতা কোনওকালে জমি নিয়ে কারবার করেননি৷‌ ওঁর মাথায় কিছু ঢোকে না৷‌ সমীররা ওঁর পিছনে ছিলেন বলে আজ মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন৷‌' এদিন সভায় উপস্হিত ছিলেন সমীর পুততুন্ড, অনুরাধা দেব৷‌


দিল্লি থেকে পুলিস এসে সারদা-কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল নেতাদের ধরছে৷‌ এবার তাঁদের ৩ হাজার কোটি টাকার হিসেব দিতে হবে৷‌ নেতা-মন্ত্রীরা কেউ বাদ যাবেন না৷‌ শুক্রবার মেমারির সাতগাছিয়ায় এক নির্বাচনী জনসভায় এই মম্তব্য করেন সি পি এম নেতা প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব৷‌ এদিন তিনি মেমারির সাতগাছিয়া ও কালনা শহরে দলীয় প্রার্থী সাইদুল হক এবং ঈশ্বরচন্দ্র দাসের সমর্থনে দুটি সভা করেন৷‌ গৌতম দেব বলেন, ১৬ মে-র পর থেকেই তৃণমূলের উঠে যাওয়ার শুরু হবে৷‌ থাকবে বামেরা আর কংগ্রেস, বি জে পি৷‌ মমতা ব্যানার্জি ও তৃণমূল কংগ্রেসের সৌজন্যবোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলে গৌতমবাবু বলেন, আমি মন্ত্রী থাকার সময় পার্থ চ্যাটার্জি বারবার আমার কাছে আসতেন৷‌ সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় সমস্যা মেটানোর জন্য মদন মিত্র আমাকে বারবার ফোন করতেন৷‌ ওই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বহু জনকেই আমি বহুবার জ্যোতিবাবু, বুদ্ধদার কাছে নিয়ে গেছি৷‌ অথচ মমতা ব্যানার্জি বা তাঁর সরকারের মন্ত্রীরা ন্যূনতম সৌজন্য দেখান না৷‌ হাওয়াই চটি পরে কপ্টার চেপে মমতা ব্যানার্জির ভোট-প্রচারকেও কটাক্ষ করে গৌতমবাবু বলেন, দলটার মধ্যে গণতন্ত্রের বালাই নেই৷‌ বিরোধী নেতাদের সম্মান দেয় না৷‌ তৃণমূলের তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি আত্মসমালোচনাও করেন গৌতমবাবু৷‌ বলেন, ২০০৯ সাল থেকেই বামেদের পতন শুরু হয়৷‌ আমাদের নীতি ও কর্মপদ্ধতিতে বেশ কিছু ভুলভ্রাম্তি হয়েছে৷‌ সে সব আমরা চিহ্নিত করেছি৷‌ বহু ক্ষেত্রে শোধরানোও হয়েছে৷‌ এর পরই বলেন, তিন বছরে পরিবর্তনের সরকার সম্পর্কে মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে৷‌ বামেদের প্রতি মানুষের আস্হা ফিরছে৷‌


ইতিমধ্যে সারদা-কাণ্ডে তদম্তে নেমে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ই ডি) দুটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পেয়েছে৷‌ সেই চিঠিতে টাকা লেনদেনের প্রসঙ্গ রয়েছে৷‌ এ ছাড়াও পাওয়া গেছে বেশ কিছু ক্যাশ ভাউচার৷‌ সুদীপ্ত সেনের স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করার পর জেরায় তাঁরা এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন, যা তদম্তে চাঞ্চল্যকর৷‌ ই ডি ইতিমধ্যেই সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ সন্দেহে ১৫ জনকে চিঠি দিয়েছে৷‌ প্রায় ৪০ জন বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে৷‌ সারদার টাকা ওঁরা ব্যবসার কাজে লাগিয়েছেন, বলে তদম্তে পাওয়া গেছে৷‌ আজ, শনিবার সারদা-কাণ্ডের তদম্তে শহরে আসছেন ই ডি-র যুগ্ম্মঅধিকর্তা সত্যেন্দ্র মাথুরিয়া৷‌ ই ডি সূত্রের খবর, যাঁদের চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা এই মুহূর্তে ব্যস্ত৷‌ ই ডি-র চিঠিতে জানানো হয়েছে, তাঁরা দিল্লি অথবা কলকাতায় যে কোনও জায়গায় ই ডি দপ্তরে দেখা করে, তাঁদের বক্তব্য রেকর্ড করতে পারেন৷‌ ই ডি-র তদম্তে নতুন কিছু দিক উঠে আসছে৷‌ মূলত টাকা কীভাবে, কোন পথে বাইরে পাঠানো হয়েছিল, তার হদিশই পেতে চাইছে ই ডি৷‌ যাঁদের চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ২০০৯-১৩ পর্যম্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তালিকা নেবে ই ডি৷‌ অর্থাৎ, যাতে হঠাৎ করে কোনও মোটা অঙ্কের টাকা এলে, তার উৎস কী, সেটাই জানতে চায় ই ডি৷‌ তাঁদের সঙ্গে ওই সময়ে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের কীভাবে যোগাযোগ হল৷‌ যাঁরা সারদায় বড় বড় পদে কাজ করতেন, তাঁদের অম্তত তিনজন এখনও পলাতক৷‌ তাঁদেরও খোঁজ করছে ই ডি৷‌ মূলত, ভুয়ো সংস্হা দেখিয়ে টাকা এক সংস্হা থেকে অন্য সংস্হাকে ঋণ দেওয়া হত৷‌ এই 'ঋণ' দেওয়ার বিষয়টি আসলে টাকা সরিয়ে ফেলার ছক৷‌ তারপর ঋণ নিল যে সংস্হা, তারা এই পরিমাণ টাকা বিভিন্ন ব্যাঙ্কে সরিয়ে ফেলত৷‌ এবং সেই টাকা আবার তুলে অন্য বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কে সরিয়ে ফেলা হত৷‌ আবার এক সংস্হা অন্য সংস্হাকে হঠাৎ করে ঋণের টাকা শোধও দিয়ে দিত৷‌ টাকা সংক্রাম্ত যাবতীয় চাবিকাঠি অবশ্য থাকত খোদ সুদীপ্ত সেনের হাতেই৷‌ বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কয়েকজন ম্যানেজারের সন্ধান পেয়েছে ই ডি, যাঁরা সারদার টাকাপয়সা লেনদেনের ব্যাপারে জড়িত ছিলেন৷‌ শুধু তাই নয়, সারদা থেকে তাঁরা মাসোহারা নিতেন বলেও ই ডি জানতে পেরেছে৷‌ সারদার টাকা নানাভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, দেশের কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে৷‌ এমনকী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি ব্যাঙ্কেও টাকা সরিয়ে রাখা হয়েছিল৷‌ ই ডি সূত্রের খবর, তাই টাকার খোঁজখবর নিতে সুদীপ্ত ও তাঁর বিশ্বস্ত লোকেরা যেতেন৷‌ ই ডি-র সন্দেহ, বিভিন্ন প্রোজে' তৈরির নামে বিদেশে যাতায়াত আসলে সরিয়ে রাখা টাকার খোঁজ নিতেই৷‌ সুদীপ্ত সেনের ছেলে যে ফেরারি গাড়ি ব্যবহার করতেন, সেটিরও খোঁজ চলছে৷‌ যদি বিক্রি করে থাকেন, তাহলে কাকে বিক্রি করা হয়েছে, তা-ও জানতে চায় ই ডি.


সারদা গোষ্ঠী বাজার থেকে যে টাকা তুলেছিল, তার মধ্যে ১২৮০ কোটি টাকা দেশেই আছে৷‌ সেই টাকা উদ্ধার করা সম্ভব বলেই মনে করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ই ডি)৷‌ সারদা-কাণ্ডে ধৃত সংস্হার কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের স্ত্রী ও ছেলেকে জেরা করে এই টাকার হদিশ পেতে চাইছেন ই ডি-র আধিকারিকরা৷‌ দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে এই দু'জনকে৷‌ শুক্রবার তাঁদের জেরা করার জন্য দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছেন এই কেন্দ্রীয় তদম্তকারী সংস্হার অ্যাসিস্টেন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার এক অফিসার৷‌ বৃহস্পতিবার রাতে ই ডি-র আধিকারিকরা সুদীপ্তর স্ত্রী পিয়ালিকে নিয়ে হানা দিয়েছিলেন বিধাননগরের একটি ব্যাঙ্কে৷‌ ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট ও লকার আছে পিয়ালির৷‌ তদম্তে জানা গেছে, সুদীপ্তর ছেলে শুভজিৎ সেন ও স্ত্রী পিয়ালির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকা কিছুদিন আগে সরানো হয়েছে৷‌ প্রায় ২০০টি অ্যাকাউন্টে চালান করা হয়েছে এই টাকা৷‌ সেই টাকার সন্ধান চলছে৷‌ পাশাপাশি ইতিমধ্যেই শুভজিৎ, পিয়ালিকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু নথিপত্র, বিভিন্ন সংস্হার শেয়ার, ফ্ল্যাটের মালিকানার কাগজপত্র পাওয়া গেছে৷‌ জানা গেছে, পিয়ালির ছেলে ও মেয়ের নামেও ব্যাঙ্কে রয়েছে বেশ কয়েক কোটি টাকা৷‌ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু সূত্র মিলেছে বলেও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর৷‌ তদম্তের অগ্রগতিতে তা সাহায্য করবে বলে মনে করছেন তদম্তকারী আধিকারিকরা৷‌ ই ডি সূত্রের খবর, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী বাজার থেকে প্রায় ২৪৬০ কোটি টাকা তোলে সারদা চিটফান্ড সংস্হা৷‌ এর মধ্যে ৪৫৩ কোটি টাকা আমানতকারীদের ফেরত দেওয়া হয়েছিল৷‌ বাকি টাকার মধ্যে ৭২০ কোটি টাকার কোনও হদিশ নেই৷‌ বিদেশে এই টাকা পাচার করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷‌ তবে ১২৮০ কোটি টাকা রয়েছে দেশেই৷‌ নামে-বেনামে নানা সম্পত্তি, বিমার মাধ্যমে এই টাকার একটি অংশ গচ্ছিত আছে৷‌ এ ছাড়া প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তিকেও মোটা টাকা দেওয়া হয়েছে সারদা গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে৷‌ কোথায় কোথায় সারদার সম্পত্তি বা টাকা রয়েছে, কাদের টাকা দেওয়া হয়েছে, তা খুঁজে বের করাই এখন লক্ষ্য ই ডি-র৷‌


আমানতকারীর টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যম্ত সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে আমরা সরকারকে ছাড়ব না৷‌ আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতেই হবে৷‌ কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের ভেতরে ভেতরে একটা যোগাযোগ আছে জানি৷‌ কিন্তু সারদার ব্যাপারে আমরা সরকারকে ছাড়ব না৷‌ শুক্রবার বর্ধমানে এক নির্বাচনী সভায় এ কথা বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ডাঃ সূর্যকাম্ত মিশ্র৷‌ এদিন বর্ধমানে পর পর দুটি জনসভা করেন সি পি এমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকাম্ত মিশ্র৷‌ বিকেলে খণ্ডঘোষে সূর্যকাম্তবাবু প্রথম সভাটি করেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রের সি পি এম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাস ও বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের সি পি এম প্রার্থী সুস্মিতা বাউরির সমর্থনে৷‌ পরে সন্ধেয় বর্ধমান শহরে উৎসব ময়দানে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সি পি এম প্রার্থী অধ্যাপক সাইদুল হকের সমর্থনে আরও একটি জনসভা করেন তিনি৷‌ সেখানে তিনি সারদা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বলার পরই দিল্লি মনে করেছে সারদা নিয়ে আবার নাড়াচাড়া দেওয়ার দরকার আছে৷‌ কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের একটা হটলাইন আছে৷‌ সেটা সবাই জানে৷‌ যা-ই হোক আমরা ছাড়ব না৷‌ এটা পঞ্চায়েত বা পুরসভার নির্বাচন নয়৷‌ এই নির্বাচন রাজ্য নির্বাচন কমিশন নয়, পরিচালনা করছে ভারতের নির্বাচন কমিশন৷‌ তাই যদি ভাবেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যা করেছেন তা-ই করবেন, তা হলে মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন৷‌


সারদা-কাণ্ডের সামান্য একটু প্রকাশিত হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ধৈর্য হারিয়েছেন৷‌ অসহিষ্ণু হয়ে পড়ে৷‌ নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবেই বিঁধলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু৷‌ তাঁর অভিযোগ, সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনকে ছবি কিনতে বাধ্য করা হয়েছে৷‌ মঙ্গলবার সি পি এম রাজ্য দপ্তরে তিনি বলেন, অসহিষ্ণু হয়ে উনি যা মম্তব্য করছেন, তা বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে মানায় না৷‌ উনি তো সবাইকে মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগানোর পরামর্শ দেন৷‌ এখন তো মনে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগানো উচিত৷‌ এদিন সাংবাদিক-বৈঠকে বিমানবাবু অভিযোগ করেন, সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন বছরখানেক আগে গ্রেপ্তার হলেও এতদিন তাঁর পরিবারের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ, গ্রেপ্তার করা হল না৷‌ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ই ডি)-কে আসতে হল৷‌ ডাল মে কুছ কালা হ্যায়৷‌ যে তদম্তের খেলা রাজ্য সরকার খেলছিল, তার পেছনে গূঢ় রহস্য রয়েছে৷‌ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ই ডি নির্বাচনের সময় সুদীপ্ত সেনের পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে, এটা ঠিক৷‌ রাজ্য সরকার তৎপর হয়নি, এটাও ঠিক৷‌ রাজ্য কেন তৎপর হয়নি, তার জবাব দিক৷‌ রাজ্য করলে ই ডি বাধ্য হত না৷‌ নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনার পাশাপাশি তাঁকে বাক‍্-সংযমী হওয়ার পরামর্শও দেন বিমানবাবু৷‌ তাঁর কটাক্ষ, উনি আম্তর্জাতিক মানের চিত্রশিল্পী৷‌ কিন্তু তাঁর গুণ বোঝার যোগ্য আমি হয়ত নই৷‌ তাঁর দুটি ছবি ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে৷‌ বিক্রির সময় সেখানে কেনার লোক ছিল৷‌ অনেক রথী-মহারথীরা ছিলেন৷‌ এখন জানা যাচ্ছে সেই অর্থ সুদীপ্ত সেনের স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া হয়েছে৷‌ আসলে ছবি কিনতে বাধ্য করা হয়েছিল৷‌ তৃণমূল গরিবের দল৷‌ ছবি বিক্রি করে দল চালানো হয়, এগুলি দেখাতেই৷‌ সারদা-কাণ্ডে তৃণমূলের এক প্রার্থীকে সমন দিয়েছে ই ডি৷‌ নির্বাচনের পর উত্তর দেবেন বলে জানিয়েছেন ওই প্রার্থী৷‌ সারদা-কাণ্ড সামান্য একটু প্রকাশিত হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী অসহিষ্ণু হয়ে পড়েছেন৷‌ যা মম্তব্য করছেন বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে মানায় না৷‌ অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে চিদু বলা যায়? সমবয়সীদের যা বলব, বয়সে বড়দেরও তা বলা যায়? মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে কোনও সংযম থাকবে না? তিনি বলেন, নির্বাচনে দুটো ভোট পাওয়ার জন্য বাজার গরম করতে বলা হচ্ছে বামফ্রন্ট সরকারের সময় চিটফান্ড হয়েছে৷‌ তাই যদি হয়, সি বি আই-কে দিয়ে তদম্ত করানো হোক৷‌ বামফ্রন্টের কোনও নেতা দোষী প্রমাণিত হলে জেলে পোরা হোক৷‌ সেই সঙ্গে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের কেউ দোষী থাকলে তাঁদেরও৷‌ সোজাভাবেই তো বলছি৷‌ বামফ্রন্ট সরকারের সময় চিটফান্ডে লাগাম টানতে কড়া আইন তৈরির চেষ্টা হয়েছিল৷‌ বিল বানানো হয়েছিল৷‌ নির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় তা পাস করানো যায়নি৷‌ তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল শাসন ক্ষমতায় আসার পরই সেই বিল প্রত্যাহার করে নেয়৷‌ এখান থেকেই শুরু হয় চক্রাম্তের জাল৷‌ এদিন বামফ্রন্টের পক্ষে সি পি এম নেতা রবীন দেব সারদা-কাণ্ড নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন৷‌ বলেন, সারদা-কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে অর্পিতা ঘোষের৷‌ অথচ তাঁর হয়ে প্রচার করছেন মুখ্যমন্ত্রী৷‌ সারদা-কাণ্ডে যাঁর নাম জড়িয়েছে, তাঁকেই প্রার্থী করা হল? সারদা গোষ্ঠীর এক কর্মীকে জেতাতে তৃণমূলের এত তৎপরতা কেন? সুদীপ্ত সেনের গ্রেপ্তারের পর প্রায় এক বছর হয়ে গেল৷‌ এতদিন তাঁর পরিবারের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারল না রাজ্য সরকার৷‌ ই ডি দায়িত্ব নিল৷‌ আর ই ডি-র এক সমনেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷‌ সব রাজনৈতিক দলকে হুমকি দিচ্ছেন৷‌ তৃণমূল নেতারাও হুমকি দিচ্ছেন, আবার পিছিয়ে যাচ্ছেন৷‌ অভিযোগ রবীনবাবুর৷‌ তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী যত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্হার জালে জড়িয়ে পড়ছেন, তত তিনি ধৈর্য হারাচ্ছেন৷‌ কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে৷‌ রাজ্য সরকার কোনও নিষ্পত্তি করল না কেন? উল্টে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে৷‌ যারা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করল, তাদের আড়াল করার চেষ্টা চলছে৷‌ কুণাল ঘোষ যাদের নাম বলেছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ গ্রেপ্তার হল না কেন? কুণালবাবু রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷‌ সারদা-কাণ্ডের দোষীদের শাস্তির ব্যবস্হা করা হচ্ছে না৷‌ তৃণমূল সব রাজনৈতিক দলকেই হুমকি দিচ্ছে৷‌ কিন্তু মানুষ হুমকি উপেক্ষা করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন৷‌


আবার ওদিকে রাজনীতির রঙ না দেখে ই ডি যেন নিরপেক্ষভাবে কাজ করে৷‌ মঙ্গলবার সারদা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের কাছে এ মম্তব্য করেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি৷‌ তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পার্থবাবু৷‌ তিনি বলেন, ই ডি-র কাজ নিয়ে আমরা কিছু বলছি না৷‌ সারদা-কাণ্ড নিয়ে পার্থবাবু বলেন, এর পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে৷‌ চিটফান্ড সি পি এমের আমলে তৈরি হয়েছে৷‌ চিটফান্ড-কাণ্ডে তৃণমূলের কেউ যুক্ত নন বলে পার্থবাবু দাবি করেন৷‌ সি পি এম-কে কটাক্ষ করে পার্থবাবু বলেন, ২০০১ থেকে ২০১১ পর্যম্ত তারা কোনও আইন করতে পারেনি৷‌ মমতার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হওয়ার পর সারদার প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷‌ আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্হা করা হয়েছে৷‌ তৈরি করা হয়েছে শ্যামল সেনের নেতৃত্বে কমিশন৷‌ মমতা আমানতকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন৷‌ পার্থবাবু বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় সারদা-কাণ্ড নিয়ে হইচই করা হল৷‌ নির্বাচনে তার কোনও প্রভাব পড়ল না৷‌ মানুষ মমতার পাশে দাঁড়াল৷‌ এবারও নির্বাচনে তার কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন পার্থবাবু৷‌ নির্বাচনের সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে৷‌ মানুষকে বোকা ভাবা ভুল৷‌ ঠিক সময় তারা জবাব দেবে৷‌ পার্থবাবুর অভিযোগ, সি পি এম রাজনৈতিক কুৎসা করছে৷‌ ওদের আমলে নেতারা সারদার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন৷‌ তিনি বলেন, কংগ্রেস দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে৷‌ আগে নিজেদের গদি সামলাক তারপর বড় বড় কথা বলুক৷‌ তাঁর অভিযোগ, তদম্তকারী সংস্হাগুলির ওপর জোর করে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে৷‌


সারদা-কাণ্ডে বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে জেরা করছে ইডি। সারদা-কাণ্ডের তদন্তে তাঁকে সমন পাঠানো হয়েছিল। শাসকদলের ঘনিষ্ঠ এক চিত্রশিল্পীকেও তলব করতে পারে ইডি। তদন্তে, ইডি জানতে পেরেছে বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে ওই চিত্রশিল্পী সুদীপ্ত সেনকে টিভি চ্যানেল বিক্রি করেন। সেই চ্যানেলেই কাজ করতেন অর্পিতা ঘোষ।


তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই এক প্রাক্তন পুলিসকর্তাকে জেরা করেছে ইডি। সারদার কর্মী, ডিজি পদমর্যাদার ওই প্রাক্তন পুলিসকর্তা সংস্থায় কার্যত ডিরেক্টরের ভূমিকা পালন করতেন। পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ওই প্রাক্তন পুলিসকর্তাকে জেরায় সন্তুষ্ট নন ইডি-র আধিকারিকরা। তার ভিত্তিতে এবার আরও কয়েকজনকে সমন পাঠাতে পারেন তাঁরা। গতকাল, সল্টলেকে সুদীপ্ত সেনের ফ্ল্যাটে তল্লাসি চালায় ইডি। উদ্ধার হয় দলিলের ছেঁড়া পাতা। সেগুলি, সারদার সম্পত্তির দলিল হতে পারে বলে মনে করছে ইডি। সুদীপ্ত সেনের ছেলে শুভজিত সেনকে জেরা করে তাঁর কয়েকজন বন্ধুর খোঁজ পেয়েছে ইডি। জানা গেছে, ওই বন্ধুদের মাধ্যমে টাকা খাটাতেন শুভজিত। এ বিষয়ে খোঁজখবর করতে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাসি চালান ইডি-র আধিকারিকরা।


সারদাকাণ্ডে যোগ রয়েছে মৃত আইনজীবী পিয়ালি মুখার্জির। ইডির তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সংস্থার আইনি দিক দেখতেন পিয়ালি। তাঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখছে ইডি। তদন্তে উঠে আসতে পারে পিয়ালীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টিও।অন্যদিকে, জামিন পেলেন সুদীপ্ত সেনের স্ত্রী। তবে প্রয়োজনীয় অর্থ জমা দিতে না পারার দরুণ আজ মুক্তি পেলেন না তিনি। ৩০ তারিখ অবধি জেল হেফাজত হয়েছে সুদীপ্ত সেনের পুত্র শুভজিতের।


আজ আদালতে তোলা হল সুদীপ্ত সেনের ছেলে শুভজিত্‍ সেন ও সুদীপ্ত সেনের স্ত্রী পিয়ালি সেনকে। আজ তাদের ব্যঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। পিয়ালি ও শুভজিত্‍ সেন দুজনেই আদালতে জামিনের আবেদন জানান। পিয়ালির আইনজীবী বলেন পিয়ালির দুই সন্তান রয়েছে,তার জামিনের আর্জি মঞ্জুর করা হোক। এরপর ইডি পিয়ালির জামিনের বিরোধিতা করেনি। তবে শুভজিত্‍ সেনের জামিনের বিরোধিতা করেছে। শুভজিত্‍ সেনের দুদিনের জেল হেফাজত চেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।


বাঁকুড়ায় এসে সারদা-দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস ও সি পি এমকে তুলোধোনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷‌ মঙ্গলবার কোতুলপুর থানার সিহর অধরচন্দ্র মিত্র হাই স্কুল মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'কংগ্রেস সি পি এমের দালালি করছে৷‌ নির্বাচন এলেই কংগ্রেস, সি পি এম এবং বি জে পি-র সারদা-কাণ্ডের কথা মনে পড়ে যায়৷‌ পঞ্চায়েত নির্বাচন চলাকালেও এই তিন দল সারদা-কাণ্ড নিয়ে শোরগোল বাধিয়েছিল৷‌ তার যোগ্য জবাব পেয়েও তাঁদের শিক্ষা হয়নি৷‌ এবার তাই ওই তিন দলকে ভোট না দিয়ে সমুচিত শিক্ষা দিতে হবে৷‌ সি পি এম, কংগ্রেস, বি জে পি-র ম্যাচ ফিক্সিং বন্ধ হোক৷‌ ওদের গটআপ গেম বন্ধ করতে হবে৷‌' আরামবাগের সভাতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,'সি পি এম সারদা দেখাচ্ছে, ওরা হল সারদার বড়দা৷‌ সি পি এম-কে টাকা দিয়েছে, আর সি পি এম তাদের মুখপত্রে সব সারদার বিজ্ঞাপন ছেপেছে৷‌ সব সি পি এমের দালালি৷‌' এদিন জয়রামবাটি, আরামবাগ ও শ্রীরামপুরে লোকসভা ভোটের প্রচারে তিন জায়গাতেই বড় মাপের সভা করেন মমতা৷‌ আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দারের সমর্থনে স্হানীয় পারুল মাঠে এবং আর শ্রীরামপুরে দলের প্রার্থী কল্যাণ ব্যানার্জির সমর্থনে সভা করেন৷‌ কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ করে মমতা আরও বলেন, ওরা তাদের পতাকাটা সি পি এম-কে বিক্রি করে দিয়েছে৷‌ বি জে পি-কে আরও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কুৎসা করার জবাব এই নির্বাচনে তারা পাবে৷‌ দার্জিলিং-সহ সারা রাজ্যে তারা এবারেও জিরো হবে৷‌ উল্লেখ্য সিহর এলাকাটি বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে৷‌ সেখানেই জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল৷‌ একটু দূরে ফাঁকা মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার নামে দুপুর ১-২০ মিনিটে৷‌ এই এলাকাটি বাঁকুড়া, হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বর্ডার৷‌ তাই তিন জেলা থেকেই এসেছিলেন মানুষ৷‌ তাপমাত্রাও ছিল ৪১ ডিগ্রি৷‌ তীব্র গরম সত্ত্বেও জনসমাগম ছিল ভালই৷‌ দেড়টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী আসেন সভামঞ্চে৷‌ সভায় অবশ্য অন্য কোনও ওজনদার নেতা ছিলেন না৷‌ ছিলেন জেলা নেতারা ও বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ এবং কোতুলপুর বিধানসভার দলীয় প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা৷‌ সৌমিত্র বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়ায় কোতুলপুর বিধানসভার এই উপনির্বাচন হতে চলেছে৷‌ মমতা সেখানে বলেন, 'সারদা-দুর্নীতি নিয়ে সি পি এম, কংগ্রেস এবং বি জে পি মাতামাতি করছে৷‌ আমাদের নামে মিথ্যা রটাচ্ছে৷‌ কুৎসা করছে৷‌ ওদের জানা উচিত, চার লক্ষ মানুষের টাকা ফেরত দিয়েছি৷‌ টাকা নেই৷‌ থাকলে আরও দিতাম৷‌ আরও ২ লক্ষ মানুষকে ক্ষতিপূরণ দেব৷‌' আরামবাগের পারুল মাঠের জনসভাতেও মুখ্যমন্ত্রী সারদা প্রসঙ্গে সি পি এম-কে আক্রমণ করেন৷‌ তাঁর অভিযোগ, ১৯৮০ সালে যখন চিটফান্ড তৈরি হয় তখন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু৷‌ আর সারদা যখন ২০০৫-এ তৈরি হয় তখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷‌ আর কেন্দ্রে কংগ্রেস৷‌ কংগ্রেস আর সি পি এম কি তখন দুধভাত খাচ্ছিল? তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন তখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়া হয়নি? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ক্ষমতায় এসেছি ২০১১-র মে-তে৷‌ ২০১২-তে আমাদের নজরে আসে সারদার দুর্নীতি৷‌ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্হা নিই৷‌ মূল অভিযুক্তকে কাশ্মীর থেকে গ্রেপ্তার করে আনি৷‌ চার্জশিটও হয়ে গেছে৷‌ অথচ আমাদের বিরুদ্ধে এই তিন দল ক্রমান্বয়ে কুৎসা করে বেড়াচ্ছে৷‌ ওদের বলব, আমাকে বেশি ঘাঁটাবেন না৷‌ কে কোথা থেকে টাকা নিয়েছে সব আমার জানা আছে৷‌ দরকার হলে সব ফাঁস করে দেব৷‌ আমার কাছে সব ডকুমেন্টস আছে৷‌' মুখ্যমন্ত্রী এদিনও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে৷‌ বলেন, 'দিল্লির কনট প্লেসে তাঁর অফিস৷‌ তাঁর অফিস থেকে ঢিল-ছোঁড়া দূরত্বে রমরমিয়ে চলছে একটি চিটফান্ড পি এ পি এল৷‌ তারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকা তুলেছে বলে অভিযোগ৷‌ অথচ পুলিসের কাছ থেকে আমি যতটুকু জেনেছি, সারদা-কাণ্ডে তোলা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা৷‌' তাঁর অভিযোগ, পি এ সি এলের দুর্নীতির ব্যাপারে এখনও পর্যম্ত কোনও ব্যবস্হা নেননি তিনি৷‌ অথচ লোকসভা নির্বাচনের মুহূর্তে বাজার গরম করতে ই ডি-কে বাংলায় পাঠিয়েছেন তিনি৷‌ তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, চিদম্বরমবাবু, আপনি ভুলে যাবেন না, সারদা-দুর্নীতির অভিযোগপত্রে আপনার স্ত্রীরও নাম আছে৷‌ সি পি এমের বিরুদ্ধে বিষোক্কার করে বলেন, ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকেও ওরা রাজ্যের উন্নয়নে কিছুই করেনি৷‌ ওদের নেতারা এখন বড় বড় কথা বলছেন৷‌ কংগ্রেস এবং বি জে পি-কে নিয়ে মহাজোট করছেন৷‌ এক দল লাগিয়ে দিচ্ছে অন্য দলের পতাকা৷‌ মমতার কথায়, বাংলা কারও পায়ে পড়তে যাবে না৷‌ নির্বাচনের পর দিল্লিকেই বাংলার পায়ে পড়তে হবে৷‌ বি জে পি-র বিজ্ঞাপন দেওয়া নিয়েও এদিন তিনি সরব হন৷‌ বলেন, বি জে পি ৫০০০ কোটি টাকা শুধু বিজ্ঞাপনেই খরচ করছে৷‌ চিম্তা করা যায়? ওই টাকা থাকলে ৫ লক্ষ, ১০ লক্ষ ছেলের চাকরি হত৷‌ বি জে পি-র একটাই কাজ, হিন্দু-মুসলমানকে বিভক্ত কর৷‌ বাংলাটাকে ভাগ করে দাও৷‌ দার্জিলিংটাকে ভাগ করে দাও৷‌ গোর্খাল্যান্ড করে দাও৷‌ সমতলটাকে ভাগ করে দাও৷‌ রাজ্যের উন্নয়ন প্রসঙ্গে মমতা বলেন, বর্তমানে কৃষকরা ধান, আলু-সহ সমস্ত সবজির যথাযথ দাম পাচ্ছেন৷‌ তাই দেখে সি পি এম, কংগ্রেস হিংসায় মরে যাচ্ছে৷‌ এই হিংসার কোনও মেডিসিন নেই৷‌ তবে একটা আছে– বিছুটি পাতা৷‌ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে বাংলার সর্বনাশ করেছে৷‌ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্হিত ছিলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত, জেলা সভাধিপতি মেহবুব রহমান, বিধায়ক পারভেজ রহমান, ইকবাল আহমেদ, কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা, স্বপন নন্দী এবং প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার৷‌



পাওনাদারদের গঞ্জনা সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী সারদার এজেন্ট

পাওনাদারদের গঞ্জনা সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী সারদার এজেন্টএনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তে নতুন রূপে সামনে এসেছে সারদা কেলেঙ্কারি। সামনে আসছে, দুহাজার চারশো কোটির প্রতারণা নিয়ে নিত্যনতুন তথ্য। এরইমাঝে আত্মঘাতী হলেন সারদার এক এজেন্ট। নিহতের নাম সুশান্ত সর্দার। বাড়ি ক্যানিংয়ের বেলেখালি গ্রামে। তিনি সারদার আমানতকারীও ছিলেন।


আজ সকালে সুশান্ত সর্দারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। পাওনাদারদের তাগাদা ও গঞ্জনা সহ্য করতে না পেরেই সুশান্ত সর্দার আত্মঘাতী হয়েছেন বলে ক্যানিং থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ছায়া সর্দার। সুশান্ত সর্দারকে ধরে সারদার আত্মঘাতী এজেন্ট-আমানতকারীর সংখ্যা বেড়ে হল তেষট্টি। তার মধ্যে নদিয়া জেলাতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ আত্মঘাতী হয়েছেন।


সরকারের সাহায্য নিয়েই সারদা সাধারণের টাকা লুঠেছে, ইসলামপুরে তোপ সোনিয়া গান্ধীর

সারদা-কাণ্ডে রাজ্য সরকারকে কড়া আক্রমণ করলেন সোনিয়া গান্ধী। ইসলামপুরের জনসভায় তাঁর অভিযোগ, "সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে চিটফান্ড সংস্থাগুলি আঠারো লক্ষ মানুষের টাকা লুঠ করেছে।" সারদা-কাণ্ডে ইডি-র তদন্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন মুখ্যমন্ত্রী সহ তৃণমূলের অন্য নেতারা। এ সবের মধ্যেই ভোটের প্রচারে রাজ্যে এসে তৃণমূল সরকারকে পাল্টা বিঁধলেন কংগ্রেস সভানেত্রী।


উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি করছে রাজ্য সরকার। দীপা দাশমুন্সির সমর্থনে ইসলামপুরের জনসভায় এই অভিযোগ করলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। রায়গঞ্জে এইমস না হওয়ার জন্য তৃণমূল ও বামফ্রন্টকে দায়ী করেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গে ভোট প্রচারে এসে চিটফান্ড, এইমস ও ১০০ দিনের কাজ নিয়েই মূলত রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করে গেলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী৷‌ তবে এই সমালোচনায় একবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নাম নেননি সোনিয়া৷‌ সারদার নাম উল্লেখ না করে চিটফান্ড প্রসঙ্গে সোনিয়া এদিন রায়গঞ্জে বলেছেন, '১৮ লক্ষেরও বেশি পরিবারের টাকা লুট করা হয়েছে৷‌ বেশিরভাগই কৃষিজীবী পরিবার৷‌ রাজ্য সরকার এই সব চিটফান্ডের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্হা নেয়নি৷‌' রায়গঞ্জে এবারের ভোটের অন্যতম ইস্যু এইমস প্রসঙ্গও উঠে আসে কংগ্রেস নেত্রীর কথায়৷‌ বলেন, 'রাজ্য সরকার এইমস নিয়ে রাজনীতি করছে৷‌ উন্নয়ন নিয়েও রাজনীতি করা হচ্ছে৷‌ ইউ পি এ সরকার রায়গঞ্জে এইমস করার সিদ্ধাম্ত নিয়েছিল৷‌ কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও পর্যম্ত জমি দিতে পারেনি৷‌ আগের সি পি এম সরকারও জমি দেয়নি৷‌ ১০০ দিনের কাজ এখানে ভাল হচ্ছে না বলেই এই জেলার মানুষ কর্মসংস্হানে পাড়ি দিচ্ছে ভিন রাজ্যে৷‌' এদিকে সি পি এম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের জোর প্রচারে কিছুটা হলেও মুষড়ে পড়েছিলেন রায়গঞ্জ কেন্দ্রের কংগ্রেসকর্মীরা৷‌ মঙ্গলবার প্রচারের শেষ মুহূর্তে ঝটিকা সফরে এসে এই কেন্দ্রের দলীয় কর্মীদের অনেকটাই চাঙ্গা করে গেলেন সোনিয়া গান্ধী৷‌ স্বস্তি পেলেন প্রার্থী দীপা দাসমুন্সিও৷‌ দুপুরে রায়গঞ্জ কেন্দ্রের গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়া মঞ্জক ময়দানে দীপা দাসমুন্সির হয়ে প্রচারসভা করলেন সোনিয়া৷‌ তাঁর আগে একই মঞ্চ থেকে মায়ের জন্য ভোট চায় দীপা ও প্রিয়রঞ্জনের কিশোর পুত্র প্রিয়দীপ ওরফে মিছিলও৷‌ ২০০৯ সালেও শিশু প্রিয়দীপ ইসলামপুরের জনসভায় ভোট চেয়েছিল মায়ের জন্য৷‌ মা জিতেওছিলেন৷‌ বি জে পি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির কড়া সমালোচনা করে কংগ্রেস সভানেত্রী আরও বলেন, 'গদির জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য বি জে পি নেতা এমন উঠেপড়ে লেগেছেন, যাতে সাংবিধানিক ও সামাজিক সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে৷‌ কীভাবে দেশ সুরক্ষিত থাকবে তা নিয়ে ভাবছেন না বি জে পি নেতারা৷‌ একমাত্র কংগ্রেসই দেশের কথা ভেবে এসেছে৷‌ কোটি কোটি লোক আত্মবলিদান দিয়েছেন দেশের জন্য৷‌ কংগ্রেসকর্মীদেরও বলিদান ভোলার নয়৷‌ দেশের উন্নয়নে লড়াই করেছেন প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি৷‌ এখন লড়াই করছেন দীপা দাসমুন্সি৷‌' এরপর সোনিয়া একে একে ইউ পি এ সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তি দেন৷‌ গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ, পানীয় জল, মিড-ডে মিল, খাদ্য সুরক্ষা বিল, লোকতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, নারীর অধিকার রক্ষা ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন কাজগুলির উল্লেখ করেন৷‌ কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার তুলে ধরে বলেন, যেখানে পুলিস নিয়োগের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ মহিলা পুলিস নিয়োগের কথা বলা হয়েছে৷‌ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কর্মসংস্হানেরও৷‌ তুলে ধরেন রাজীব গান্ধীর আমলের কম্পিউটার ও যোগাযোগ ব্যবস্হার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের কথা৷‌ বলেন অসংগঠিত ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষার কথাও৷‌ বলেন, দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে দেশকে উন্নয়নের দিশা দিতে পারে একমাত্র কংগ্রেসই৷‌ তাই কংগ্রেস ও এখানকার প্রার্থী দীপা দাসমুন্সিকে বিপুল ভোটে জেতানোর অনুরোধ জানাচ্ছি আপনাদের কাছে৷‌ সোনিয়ার বক্তব্যের আগে বক্তব্য পেশ করেন প্রার্থী দীপা দাসমুন্সি৷‌ ধন্যবাদ দেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত৷‌


জঙ্গিপুর মহকুমার সুতির ছাবঘাটি ময়দানে আয়োজিত সভায় সোনিয়া বলেন, অন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও অর্থ দিতে কখনই কাপর্ণ্য করেনি কেন্দ্রীয় সরকার৷‌ বাংলার উন্নতির জন্য আগে বাম সরকারের আমলেও যেমন অর্থ দেওয়া হত, বর্তমান তৃণমূল সরকারের ক্ষেত্রেও সেভাবেই চলছে৷‌ প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদে জনসভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বহুবার কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে অর্থের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গকে কেন্দ্র বঞ্চনা করছে বলে অভিযোগ তোলেন৷‌ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থনে জঙ্গিপুরে এসে মমতার অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণ করতে সোনিয়া গান্ধী কড়া ভাষায় তারই জবাব দেন৷‌ তিনি বলেন, উন্নয়ন নিয়ে কংগ্রেস কখনই রাজনীতি করে না৷‌ রাজনীতি ও মানুষের উন্নয়ন দুটি পৃথক৷‌ মানুষের জন্য উন্নয়ন করতে চাইলে তা নিয়ে কখনই রাজনীতি করা উচিত নয়৷‌ কংগ্রেস তাদের ইস্তাহারে যে সব কথা লেখে, তা বাস্তবায়িত করে দেখায়৷‌ তৃণমূলের মতো বড় বড় কথা বলে নির্বাচনের আগে ভোটব্যাঙ্ক বাড়ায় না৷‌ সমাজকে ভেঙে দিয়ে নয়, তা জুড়ে উন্নয়ন করতে হয়– সেটাই পরম্পরা৷‌ যেটা কংগ্রেস করে৷‌ কংগ্রেস যে লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছিল, তা থেকে তারা সরে আসেনি৷‌ তা বাস্তবায়িত করার নিরম্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷‌ এদিন জঙ্গিপুরের সভার আগে রায়গঞ্জের সভায় যান সোনিয়া৷‌ সেখান থেকে আকাশপথে সাড়ে তিনটে নাগাদ জঙ্গিপুরে আসেন তিনি৷‌ মাত্র ১৫ মিনিট বক্তব্য পেশ করেন তিনি৷‌ সোনিয়া জানান, অন্যান্য দেশে ভারতের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ করেছে তার মাটিকে৷‌ কিন্তু বর্তমানে কিছু ক্ষমতালোভী লোক তা বিনষ্ট করতে চাইছে৷‌ নরেন্দ্র মোদি সকলের সামনে নিজেকে দেশপ্রেমিক হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন৷‌ আতঙ্কবাদ, দাঙ্গা থেকে রক্ষা করাকে দেশপ্রেম বলে৷‌ যেটা কংগ্রেস এতদিন করে এসেছে৷‌ কিন্তু মোদির কার্যকলাপ আমাদের ভয় পাইয়ে দিচ্ছে৷‌ সোনিয়া এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা জানিয়ে বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকীকরণ এই সরকারই করেছে৷‌ পশ্চিমবঙ্গে গত ৩৪ বছরে কী হয়েছে, বর্তমানে কী হচ্ছে, তা আপনাদের কাছে পরিষ্কার৷‌ রাজীব গান্ধী গ্রামীণ যোজনায় দরিদ্রদের ঘর আলো হয়েছে৷‌ ফরাক্কায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৫০০ মেগাওয়াট বাড়ানো হয়েছে৷‌ জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে ২২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ, তারাপুর হাসপাতালে উন্নত পরিষেবা, জঙ্গিপুরে পেনশন অফিস, নবগ্রামে সেনাছাউনি প্রভৃতি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে৷‌ ভবিষ্যতে আরও কিছু করার জন্য সমর্থন দরকার জনগণের৷‌ ভবিষ্যতে যুবকদের কাজের ট্রেনিং দিয়ে রোজগারের বন্দোবস্ত, কৃষি ও চিকিৎসায় উন্নতির প্রসার ঘটানো হবে৷‌ আসন্ন নির্বাচন কোনও প্রদেশ নয়, দেশ গঠনের নির্বাচন৷‌ জনসাধারণ কংগ্রেসের পাশে থাকুন৷‌ এদিন সোনিয়ার সঙ্গে জনসভায় ছিলেন অধীর চৌধুরি, আবু হেনা, আবু হাসেম খান চৌধুরি-সহ অন্য কংগ্রেস নেতারা উপস্হিত ছিলেন৷‌





সততার প্রতীক এখন সারদার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন৷‌ নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং তাঁর দল তৃণমূলকে এভাবে বিঁধলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷‌ শুক্রবার শ্রীরামপুরের গান্ধী ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় তিনি বলেন, দু'বছরের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ৯০ ভাগ কাজই শেষ হয়ে গেছে৷‌ আসলে উনি নিজেই জানেন না মুখ্যমন্ত্রীর কাজ কী! এই সরকারের একটাই কাজ, শুধু ধার করো আর উৎসব করো৷‌ কার টাকায় কীসের উৎসব হচ্ছে? এদিন এই কেন্দ্রের সি পি এম প্রার্থী তীর্থঙ্কর রায়ের সমর্থনে ভাষণ দিতে গিয়ে বুদ্ধদেববাবু রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেন৷‌ এদিন সভায় হাজির ছিলেন সি পি আই নেতা মঞ্জুকুমার মজুমদার, আর এস পি নেতা মনোজ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন দে, সি পি এমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরি প্রমুখ৷‌ বুদ্ধবাবু বলেন, রাজ্যে মহিলাদের ওপর একের পর এক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে৷‌ এই সরকারের ওপর থেকে নিচুতলা পর্যম্ত অনেকে অপরাধীদের সঙ্গে যুক্ত৷‌ সেই অপরাধীদের নিয়েই মিটিং-মিছিল করছেন তিনি৷‌ নাম না করে অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে বলছেন, কী করেছিস? নারকেল-মুড়িখাওয়াতে পারছিস না৷‌ এ-সব শুনে মাথা লজ্জায় নিচু হয়ে যায়৷‌ টেট কেলেঙ্কারি প্রসঙ্গে বলেন, কিছু ছেলে মাস্টার হতে চেয়েছিল৷‌ রাস্তায় ফেলে তাদের মারধর করা হল৷‌ তিনি বলেন, কংগ্রেসের পাপ এবং অপরাধ সবই তৃণমূল সমর্থন করেছে৷‌ এখন তৃণমূল চাইছে দিল্লি গিয়ে আমি 'রাজা' তৈরি করব৷‌ একবারও বলছে না কংগ্রেসে গিয়ে ভুল করেছি৷‌ বি জে পি-তে যাব না৷‌ ক্ষমতার জন্য সুযোগ পেলেই আবার ওই দলে যাবে৷‌ ক্ষমতা ছাড়া উনি কিছু জানেন না৷‌ কিন্তু মানুষ কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বি জে পি-র বিরুদ্ধে রায় দেবে৷‌ দেশের পরিস্হিতি নিয়ে তিনি বলেন, রাজস্হান, বিহার, উত্তরপ্রদেশে কোটি কোটি গরিব মানুষ রয়েছে৷‌ জমি নেই৷‌ সারা ভারতে কৃষকদের জমি দিতে হবে, এটাই আমাদের কর্মসূচি৷‌ গরিব মানুষকে আমরা জমি দিতে চাই৷‌ গরিব মানুষদের রেশন দিতে চাই৷‌ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেঁধে দিতে হবে৷‌ শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা করতে হবে৷‌ এর জন্য আইন তৈরি করতে হবে৷‌ পিছিয়ে-পড়া মানুষের জন্য একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছি আমরা৷‌ জমি, রেশন, মজুরি ছাড়াও পেনশন দিতে হবে৷‌ লেখাপড়ার সুযোগ বাড়াতে হবে৷‌ এ-সবের ওপর দাঁড়িয়ে নির্বাচন হোক৷‌ তিনি বলেন, আমরা সবাই বুঝতে পারছি কংগ্রেস থাকছে না৷‌ দশ বছর মানুষ কংগ্রেসকে সময়, সুযোগ দিয়েছিল৷‌ কিন্তু কংগ্রেস পারেনি৷‌ আমরা বামপম্হীরা চাইছি কংগ্রেস সরে যাক৷‌ তার কারণ, কংগ্রেস বেকারি, দারিদ্র্য, ক্ষুধায় ভরিয়ে দিয়েছে দেশটাকে৷‌ কংগ্রেসের নীতি, সরকারের সম্পত্তি সব বেচে দাও৷‌ বিলগ্নীকরণ ওদের কাছে খুব বড় কথা৷‌ ওদের নীতি হল বিনিয়ন্ত্রণ৷‌ মানুষ যদি কিনতে না পারে, ওদের কিছু করার নেই৷‌ আমরা বলছি নিয়ন্ত্রণ চাই৷‌ এক সময় দেশের পুঁজিপতি ছিলেন ৮ জন৷‌ মনমোহন সিং ১০ বছরে পুঁজিপতি বানিয়েছেন ১২২ জন৷‌ মানে ৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে যাঁরা মালিক, তাঁদেরতিনি তৈরি করে দিয়ে গেছেন৷‌ কেন্দ্রীয় সরকারের এই নীতি অনুসরণ করে নরেন্দ্র মোদিও ওই কথাই বলছেন৷‌ ১২২ জনের মাথায় তেল দিচ্ছেন৷‌ আমরা বলছি ওপথে দেশ বাঁচবে না৷‌ সর্বনাশ হবে৷‌ পুঁজিপতিরা বড়লোকদের দল কংগ্রেসকে সমর্থন করেছেন৷‌ এখন পুঁজিপতিরা বলছেন, তাঁদের প্রার্থী নরেন্দ্র মোদি৷‌ যেখান থেকে মনমোহন সিং ছেড়ে গেছেন সেখান থেকেই মোদির শুরু৷‌ তাই ওঁদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই৷‌ কংগ্রেস এবং বি জে পি-র মোট ভোট মেলালেও দেশের ৫০ শতাংশ ভোট হবে না৷‌ এই কথা মাথায় রেখেই বিকল্প সরকার হিসেবে বামফ্রন্টের নীতির কথাই তুলে ধরেন তিনি৷‌ বলেন, আর এস এস হল আমাদের দেশে সব থেকে পিছিয়ে-পড়া সংগঠন৷‌ তারা বলছে, আমরা মোদিকেই চাই৷‌ এখানেই বিপদ৷‌ শ্রীরামপুরের প্রার্থী তীর্থঙ্কর রায় বলেন, বাম সরকারের নীতি, আদর্শকে সামনে রেখে আমাদের সংগ্রাম ও লড়াই৷‌ জুট মিল, কলকারখানার শ্রমিকদের কথা আমি সংসদে গিয়ে তুলে ধরব৷‌ আপনারা আমাকে সেই সুযোগ করে দিন৷‌




बासी कढ़ी में उबाल,फिर शारदा फर्जीवाड़े का बवाल! एक के बाद एक गढ़े मुर्दे उखाड़े जा रहे हैं। वामपक्ष, भाजपा और कांग्रेस तीनों तरफ से इस रफा दफा मामले को लेकर घेराबंदी हो रही है मां माटी मानुष की सरकार की।सीबीआई जांच के लिए असम,ओड़ीशा और त्रिपुरा तीनतीन राज्य सरकारें राजी हैं।ऐतराज सिर्फ बंगाल को है,जबकि बतौर विपक्षी नेता हर छोटे बड़े मामले में दीदी सीबीआई जांच के लिए केंद्र सरकार से गुहार लगाती रही है।


बंगाल सरकार का अजब तर्क है कि बाकी राज्यों में तो सीबीआई जांच करें लेकिन बंगाल में जांचराज्य सरकार की ओर से गठित विशेष जांच दल करे।


इस जांच दल यानी सिट का फंडा तो ऐसा है कि साल भर में सुदीप्त की पत्नी पियाली सेन का फ्लैट को सील कर रखा है ,जहां छापा मारकर इडी ने गहने और नकदी के अलावा बेहद खास दस्तावेज अपने कब्जे में कर लिये,जिसकी कोई गंध भी सूंघ नहीं पाया।फिर एक बैंक में इडी के पहुंचने से पहले ही पियाली सेन के लाकर खोल कर जब्ती कर ली जांच दल ने।


दीदी ने चुनाव के नाजुक मौके पर रफा दफा इस मामले के अचानक मुद्दा बन जाने से पहले की तरह आक्रामक मुद्रा में अपने दागी मंत्रियों,सांसदों और नेताओं का बचाव करने लगी है और हर आरोप को चक्रांत कहकर खारिज करने लगी हैं।


विपक्ष कम से कम शारदा मामले में सीबीआई जांच की मांग के सिलसिले में एकजुट है।जाहिरा तौर पर चुनाव आयोग के खिलाफ जिहादी तेवर अपनायी दीदी सीबीआई जांच को लेकर भी बेहद आक्रामक हैं।मुश्किल यह है कि मामले की सुनवाई पूरी हो गयी है।


फैसला सुरक्षित है।इस फर्जीवाड़े में किस किसको फायदा हुआ,यह पूछकर सर्वोच्च न्यायालय ने पहले ही दीदी की साख को दांव पर चढ़ा दिया है ।


अब अगर सुप्रीम कोर्ट सीबीआई जांचका आदेश जारी कर दें, तो क्या दीदी अवमानना का जोखिम उठायेंगी,सवाल यह है और उसका सीधा जवाब है ,नहीं।अफसरान के तबादले के चुनावी आदेश पर उबल चुकी दीदी ने आखिर चुनाव आयोग का आदेश मान ही लिया।


मालूम हो कि प्रवर्तन निदेशालय की ओर से पिछले हफ्ते सुदीप्त की पत्नी व बेटे की गिरफ्तारी के बाद इस चुनावी सीजन में शारदा घोटाला अचानक एक मुद्दा बन गया है। भाजपा के प्रधानमंत्री पद के उम्मीदवार नरेंद्र मोदी और कांग्रेस उपाध्यक्ष राहुल गांधी अपने रैलियों में शारदा घोटाले के बहाने ममता बनर्जी पर करारे हमले कर चुके हैं। राहुल ने कहा कि इसकी जांच सीबीआई से होने पर सबकुछ साफ हो जाएगा।


इस मामले में जेल में दिन काट रहे तृणमूल कांग्रेस के निष्कासित सांसद कुणाल घोष ने भी मामले की जांच सीबीआई से कराने की मांग की है।


उधर, दीदी पहले ही आरोप लगा चुकी हैं कि वित्त मंत्री पी. चिदंबरम की पत्नी इस घोटाले में शामिल हैं। उन्होंने उनको गिरफ्तार करने की मांग करते हुए कहा है कि अगर प्रवर्तन निदेशालय के अधिकारियों में हिम्मत है तो मुझे गिरफ्तार कर के दिखाए।



अभी बंगाल में कुल मिलाकर दस ही सीटों के लिए मतदान हुआ है।अभी शारदा पोंजी स्कीम में पैसा झोंके एक और निवेशक ने खुदकशी कर ली।जस्टिस श्यामल सेन आयोग ने तमाम मामलो की सुनवाई भी पूरी कर ली।लेकिन  शारदा समूह की संपत्ति बेचकर जो मुआवजा देना था,वह संभव नहीं हुआ है। क्योंकि शारदासमूह में जमा करीब छह सौ करोड़ रुपये का कोई हिसाब ही नहीं है।


तो दूसरी ओर जब्ती और रिकवरी हुई ही नहीं।राज्य सरकार ने जो पांच सौ करोड़ रुपये का फंड बनाया पीड़ितों को राहत के वास्ते,उसका न्यारा वारा हो गया। करीब तीन लाख शारदा पीड़ितों को मुावजा दिया जा चुका है राजकोष से।


अब श्यामल सेन आयोग ने दूसरी चिटफंड कंपनियों के खिलाफ लाखों शिकायतों को भी सही पाया है और अदालती आदेश उन सबको मुआवजा देने का है।यानी राजकोष से फिर पोंजी पापस्खलन होना है।


सीबीआई जांच का आदेश हो गया तो दीदी की मुश्किलें इस चौतरफा चुनाव में बढ़ने वाली हैं।मीडिया के मुताबिक जहां कांग्रेस को साइनबोर्ड में तब्दील हो जाना चाहिए था,उत्तर बंगाल की रपटों के मद्देनजर वैसा होते नहीं दीख रहा है।


खबर है कि भाजपा के हक में व्यापक मतदान हो रहा है।समझा जा रहा है कि तृणमूल वोटबैंक में सेंध के लिए कांग्रेस और वामदल भगवा लहर को बंगाल में खूब हवा दे रहे हैं।


सबसे बड़ी बात तो यह है कि दीदी खुद ऐसा ही आरोप लगा रही हैं।


अब साफ नही है कि भाजपा सिर्फ वोट काटेगी या फिर दो चार सीटें भी झटक लेगी। फिर वोट काटेगी तो किसके वोट।वोटों में कटौती होने पर मीडिया के मुताबिक तृणमूल के लिए बंगाल में विपक्ष का सफाया करना संभव नहीं होगा।


उससे बड़ा खतरा यह है कि ईडी ने पहले ही ढेरों सबूत जुटा लिये हैं।इडी और सीबीआई युगलबंदी हो गयी तो दागियों का बच निकलना मुश्किल है।


पियाली सेन  के बैंक लाकर से दो ड्राफ्ट मिले हैं,जो शारदा समूह के टीवी चैनल और अखबार बेचने के एवज में हुए भुगतान से संबंधित है।


समझा जाता है कि एक अति शक्तिशाली सांसद ने यह सौदा किया। उसी सांसद का खास आदमी शारदा समूह के लेखा विभाग में था,बताया जाता है।जो नकदी की आवक की अग्रिम जानकारी सांसद को देता था और सांसद फौरन वसूली कर लेते थे।


इडी ने ऐसे एक वसूली का ब्यौरा भी जुगाड़ लिया है जिसमें तीन सौ करोड़ तक के भुगतान बिना मोहलत दिये तुरंत करने के लिए सुदीप्तो को मजबूर किया गया।


इसी बीच  प्रवर्तन निदेशालय (इडी) का शिकंजा कसता जा रहा है। केंद्रीय जांच एजेंसी ने बालुरघाट से तृणमूल कांग्रेस उम्मीदवार व पेशे से नाट्यकर्मी अर्पिता घोष समेत तीन लोगों को नोटिस जारी किया है।एक विशवविख्यात चित्रकार भी केंद्रीय एजंसियों के निशाने पर हैं।


और तो और,इडी को मिले सबूत के मुताबिक दीदी के बनाये चित्रों की अप्रत्याशित कीमत भी पियाली सेन के खाते से हुआ,जबकि अपने  चित्र बेचकर दीदी ने विधानसभा का चुनाव फंड और चुनावखर्च जुगाड़ करने का दावा करती रही हैं।


सांसद का चेहरा आम जनता के बीच उजागर हो चुका है तो एक मंत्री भी बुरी तरह फंसे हैं।जिनके एक महिला वकील से मधुर संबंध थे।पियाली नाम की उस महिला वकील की रहस्यमय परिस्थितियों में मृत्यु हो गयी,जो राजनेताओं और दूसरे लोगों को  भुगतान के मामले देखती थीं और अपनी आय के मुकाबले बेहद आलीशान जिंदगी जीते हुए मर गयी।एक आईपीएस अफसर हैं जो सत्तादल के खासमखास है ,जिनको हम महीने फर्जी बिल पर एक लाख का भुगतान होता था।उनका भी पियाली से संबंध बताये जाते हैं।आरोप है कि वे मौत से पहले पियाली के साथ उसके फ्लैट में देखे गये।इडी ने गैरकानूनी भुगतान के मामले में पियाली प्रकरण से जुड़े सबूत भी इकट्ठे कर लिये हैं।


जवाबी हमला बतौर विवादित परिवहन मंत्री मदन मित्र ने तत्कालीन केंद्रीय वित्तमंत्री बतौर मौजूदा राष्ट्रपति प्रणव मुखर्जी को इस विवाद में घसीट लिया है और आरोप लगाया है कि पोंजी स्कीम के तहत उन्होंने ही शारदा को लाइसेंस दिलवाया। मित्र के आरोप में देश के सर्वोच्च व्यक्तित्व के परिजनों को शारदा समूह से भुगतान हुआ।


दरअसल शारदा चिटफंड घोटाले में प्रवर्तन निदेशालय (इडी) का शिकंजा कसता जा रहा है। केंद्रीय जांच एजेंसी ने तृणमूल कांग्रेस के पांच नेताओं को सम्मन जारी किया है। इन्हें 25 अप्रैल तक बयान दर्ज कराने को कहा गया है। हालांकि अभी तक इनके नामों का खुलासा नहीं हुआ है।


हालत इतनी नाजुक है कि  इडी ने ऐसे 15 लोगों की सूची तैयार की है, जिनसे वह पूछताछ करना चाहता है। इसमें तृणमूल कांग्रेस के मंत्री और नेताओं सहित पूर्व अधिकारी भी शामिल हैं।


इडी ने चलाया तलाशी अभियान

इडी ने शारदा समूह के मालिक जेल में बंद सुदीप्त सेन की पत्नी पियाली चक्रवर्ती व उसके बेटे शुभोजीत सेन को हिरासत में लिया है। इनसे पूछताछ के बाद शनिवार को जांच एजेंसी ने तलाशी अभियान चलाया। जानकारी के अनुसार, शनिवार को विधाननगर के एक बैंक में इडी अधिकारियों ने जांच पड़ताल की। बैंक में सुदीप्त सेन की पत्नी पियाली सेन का एकाउंट है। हालांकि उस एकाउंट में कितने रुपये थे, इसकी जानकारी नहीं मिल सकी है।


सुदीप्त से पूछताछ कर सकता है इडी

प्रवर्तन निदेशालय घोटाले के मुख्य आरोपी सुदीप्त सेन से पूछताछ कर सकती है। सेन को अपनी हिरासत में लेने के लिए इडी अदालत का दरवाजा खटखटाने जा रहा है।


गौरतलब है कि शारदा कांड में कुल 2500 करोड़ रुपये के घोटाले का मामला सामने आया था। 1900 करोड़ रुपये का हिसाब पता लगाने में राज्य सरकार पीछे रह गयी है। इसलिए इडी अब इस मामले में जिन-जिन लोगों का नाम सामने आया है, उनसे पूछताछ करने जा रहा है।


कथित सीडी का रहस्य गहराया

सुदीप्त सेन की पत्नी ने पूछताछ में बताया है कि गिरफ्तार होने के पहले तक तृणमूल कांग्रेस सांसद कुणाल घोष उनके संपर्क में थे। कुणाल घोष हमेशा एक सीडी के बारे में पूछ रहे थे, हालांकि पियाली ने दावा किया कि वह उस सीडी के बारे में कुछ नहीं जानती हैं। इस संबंध में भी जानकारी हासिल करने के लिए इडी अब सुदीप्त सेन को हिरासत में लेना चाहती है।


इडी दफ्तर पहुंचे सुदीप्त सेन के वकील

शनिवार को सुदीप्त सेन के वकील समीर दास साल्टलेक स्थित इडी कार्यालय पहुंचे और उनकी पत्नी पियाली व बेटे शुभजीत से मिलने की मांग की। लेकिन इडी के अधिकारियों ने उनको मिलने का मौका नहीं दिया। इडी अधिकारियों से सुदीप्त सेन के वकील ने बातचीत की। उन्होंने इडी अधिकारियों से पूछा कि सारधा कंपनी के किसी भी व्यवसाय में उनकी पत्नी व बेटे का कोई नाम नहीं है, फिर उन्हें क्यों गिरफ्तार किया गया है।



दीदी और उनके सिपाहसालार शुरु से इस मामले में पूर्ववर्ती वाम सरकार को घेरती रही हैं।राष्ट्रपति का नाम पहलीबार सामने  आया है।जबकि तत्कालीन मुख्यमंत्री बुद्धदेव भट्टाचार्य ने सीधे सीबीआई जांच की मांग करते हुए दावा किया कि वाम पक्ष का कोई भी इस घोटाले में शामिल नहीं है।अगर है तो सीबीआईउसका खुलासा करके दोषियों को सजा दिलाये,यह उनकी खुली चुनौती है।


परिवर्तन और भूमि आंदोलन में दीदी के सबसे करीबी और शारदा समूह के मीडिया प्रभारी कुणाल घोष को दीदी ने राज्यसभा भेजा तो उसी कुणाल घोष ने दीदी को भी शारदा फर्जीवाड़ा मामले में लपेटा।राज्यसरकार ने उन्हें गिरफ्तार कर जेल भिजवा दिया। वे अब भी जेल में है और शारदा समूह से अपनी ही पार्टी के नेताओं के मधुर संबंधों का कच्चा चिट्ठा खोलने को तैयार बैठे हैं।खास बात यह है कि अपने दागी सांसदों और नेताओं को दीदी ने लोकसभा चुनावों में  मैदान में उतारा है।वे हार जायें तो नुकसानकम होगा।लेकिन वे जीते और कुणाल जैसा उनका भी हश्र हुआ तो सत्तादल पर मुश्किलों का ऐसा पहाड़ टूटने वाला है,जिसके नीचे से निकलकर अगली विधानसभा चुनावों में सत्ता कीराह बनाना बहुत बड़ी चुनौती होगी।


हाल यह है कि बंगाल की मुख्यमंत्री ममता बनर्जी और माकपा नेता बुद्धदेव भट्टाचार्य ने शुक्रवार को शारदा चिटफंड घोटाले को लेकर एक दूसरे पर निशाना साधा। ममता ने जहां माकपा के धन के स्रोत पर सवाल उठाया तो पूर्व मुख्यमंत्री बुद्धदेव भट्टाचार्य ने सीबीआई जांच की मांग कर दी। इस पर ममता बनर्जी ने भट्टाचार्य पर निशाना साधते हुए कहा, ''आपके कार्यकाल में 2006 में यह घोटाला हुआ था। क्या मैं नाम बताउं? जैसे कि आपको कुछ पता ही नहीं है।'' गौरतलब है कि     वाम मोर्चा की सरकार के शासनकाल में ही शारदा समूह ने अपना कारोबार शुरु किया था।


तृणमूल कांग्रेस अध्यक्ष ने हुगली जिले के तारकेश्वर में चुनावी सभा में कहा, ''चोरों की मां सबसे तेज बोलती है और खाली बर्तन ज्यादा बजते हैं। माकपा के पास हजारों करोड रपये कहां से आये।''  उन्होंने कहा, ''वाम मोर्चा सरकार के वित्त मंत्री ने किसके बैंक खाते से अपना चुनाव अभियान चलाया।''

 ममता ने कहा, ''किसने चोरी की है और किसे जिम्मेदार ठहराया जा रहा है? अगर आप तृणमूल कांग्रेस में दोष निकालने की कोशिश करेंगे तो केवल अच्छे लोग ही दिखाई देंगे।''



ताजा खबरों के मुताबिक करोड़ों रुपये के शारदा  चिटफंड घोटाले के सूत्रधार सुदीप्त सेन का बेटा शुभोजित सेन प्रतिदिन गाड़ियों के काफिले पर 60 हजार रुपये खर्च करता था। शुभोजित शारदा समूह के 17 निदेशकों में से एक था।

शुभोजित के साथ उसकी मां पियाली सेन भी लग्जरी कारों का भरपूर इस्तेमाल करती थी। ईडी अधिकारियों के अनुसार 35 लग्जरी कारों का इस्तेमाल सुदीप्त की पत्नी व पुत्र करते थे। इसमें पांच विदेशी कारें भी थीं। शुभोजित ने गत तीन वर्षों में 20 करोड़ रुपये में सिर्फ गाड़ियों का काफिला तैयार किया था।

शारदा  समूह से जुड़े वित्तीय अधिकारियों ने बताया कि सुदीप्त ने निर्देश दे रखे थे कि शुभोजित जितने भी रुपये मांगता है उसे दिए जाएं। ईडी के अधिकारियों का कहना है कि शुभोजित व पियाली सेन को मनी लांड्रिंग में गिरफ्तार किया गया है।

शारदा  के एक और निवेशक ने दी जान

शारदा  चिटफंड घोटाले में रुपये डूबने से एक और पीड़ित ने फांसी लगा ली। पश्चिम बंगाल के दक्षिण चौबीस परगना जिले के कैनिंग थाना इलाके में सुशांत सरदार (42) ने आत्महत्या कर ली। वह पेशे से राज मिस्त्री था। उसने करीब डेढ़ लाख रुपये शारदा  में निवेश किए थे।



गौरतलब है कि  परिवहन मंत्री मदन मित्र ने प्रवर्तन निदेशालय को इस बात का खुलासा करने की चुनौती दी है कि शारदा घोटाले में राष्ट्रपति प्रणब मुखर्जी के बेटे और बेटी ने कितनी रकम ली थी। उन्होंने रविवार देर शाम बर्दवान जिले के केतुग्राम में एक चुनावी रैली को संबोधित करते हुए यह चुनौती दी।

मित्र ने कहा कि वे निदेशालय को यह खुलासा करने की चुनौती देते हैं कि देश के सर्वोच्च संवैधानिक पद पर आसीन पूर्व कांग्रेस नेता के बेटे व बेटी ने शारदा से कितने करोड़ रुपए लिए हैं। कांग्रेस ने मित्र के आरोपों का खंडन किया है। उसी रैली में मित्र ने सवाल उठाया कि रिजर्व बैंक के पूर्व गर्वनर ने शारदा समूह को शुरू करने की अनुमति दी थी। ऐसे में इसके लिए उनको भी क्यों नहीं गिरफ्तार करना चाहिए। उन्होंने कहा कि केंद्र या कांग्रेस 15 मई तक जो चाहे कर सकती है। 16 मई के बाद बंगाल के दस करोड़ लोग जेलों का घेराव करेंगे।

दूसरी ओर कांग्रेस के वरिष्ठ नेता प्रदीप भट्टाचार्य ने मित्र के आरोपों को निराधार करार देते हुए कहा है कि पार्टी इस बारे में चुनाव आयोग से शिकायत करेगी। विपक्ष ने आरोप लगाया है कि शारदा से नजदीकी की वजह से मित्र को निजी तौर पर काफी फायदा हुआ है। वे समूह के कई कार्यक्रमों में मालिक सुदीप्त सेन के साथ देखे गए थे। सेन ने ही उनको शारदा समूह की कर्मचारी यूनियन का नेता मनोनीत किया था।

शारदा चिटफंड घोटाले को लेकर पश्चिम बंगाल सरकार को आड़े हाथ लेते हुए कांग्रेस अध्यक्ष सोनिया गांधी ने आरोप लगाया कि उसकी (राज्य सरकार) चिटफंड कंपनियों के साथ मिलीभगत है जिन्होंने 18 लाख से अधिक लोगों को लूटा है।


सोनिया गांधी ने ऐसे समय में पश्चिम बंगाल सरकार पर हमला किया है जब कुछ ही दिन पूर्व उनके बेटे और कांग्रेस उपाध्यक्ष राहुल गांधी ने इसी मुद्दे पर प्रदेश सरकार को निशाना बनाया था।


उत्तर दिनाजपुर जिले में रायगंज लोकसभा निर्वाचन क्षेत्र से चुनाव लड़ रहीं पार्टी प्रत्याशी दीपा दासमुंशी के समर्थन में एक चुनावी रैली को संबोधित करते हुए सोनिया ने कहा कि यहां की सरकार की मिलीभगत से चिटफंड कंपनियों ने 18 लाख से भी अधिक परिवारों को लूटा, उन्हें बरबाद किया है।'


उन्होंने कहा, 'गरीब लोग पैसा जोड़ने के लिए काफी संघर्ष करते हैं ताकि वे जरूरत के समय इसका इस्तेमाल अपने तथा अपने बच्चों के लिए कर सकें।' उन्होंने कहा कि शारदा मामले में प्रवर्तन निदेशालय और सेबी ने राज्य सरकार को कई बार गड़बड़ी के प्रति अगाह किया था, लेकिन राज्य सरकार ने कोई कार्रवाई नहीं की। राज्य सरकार लोगों की मूल धन तक वापस नहीं कर पायी हैं।



इससे तीन दिन पहले कांग्रेस उपाध्यक्ष राहुल गांधी ने तृणमूल कांग्रेस सरकार पर हमला बोलते हुए कहा था कि यह सरकार उन लोगों के खिलाफ कार्रवाई नहीं कर रही है जो करोड़ों रुपये के शारदा पोंजी घोटाले में शामिल थे। इसके बजाय यह उन्हें बचाने का प्रयास कर रही है।


সারদা মামলার শুনানি শেষ হলেও সুপ্রিম কোর্ট বুধবার কোনও রায় দিল না৷ বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং বিচারপতি সি নাগাপ্পনের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানি শেষ করে এ দিন জানিয়ে দেয়, ওডিশাতেও সারদা-সহ বেশ কিছু বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার সেই আবেদন এখনও মঞ্জুর করেনি৷ ত্রিপুরাতে সিবিআই তদন্তের কাজ শুরু করে দিয়েছে৷ তাই বিচারপতিরা ওডিশার মামলাও শুনতে চান৷ জানতে চান সে ব্যাপারে সিবিআইয়ের বক্তব্য৷ ২৩ এপ্রিল ওডিশার শুনানি হবে৷ সেদিনই রায় ঘোষণা করা হতে পারে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে৷ শুনানির শুরুতেই বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এ দিনই শুনানি শেষ করা হবে৷


সর্বোচ্চ আদালত সারদা-মামলার রায় ঘোষণা না-করায় রাজ্য সরকার আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যে প্রথম দফার ভোটের আগে সামান্য হলেও স্বস্তি পেল৷ তবে পশ্চিমবঙ্গের সারদা-মামলার সঙ্গে অন্য রাজ্যের মামলাকে এক সঙ্গে না জড়ানোর ব্যাপারে রাজ্য সরকারের আবেদন মানেনি সুপ্রিম কোর্ট৷ তাতে সরকার ধাক্কাও খেয়েছে৷ বিচারপতি ঠাকুর বলেন, 'আমরা যদি সারদা-মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিই, তা হলে ওডিশার সব মামলার তদন্তের দায়িত্বও তাদের হাতে যাবে৷ ২৩ এপ্রিল ওডিশা-মামলার শুনানি৷ সেই শুনানি শেষ করে আমরা রায় দেব৷' সিবিআই তদন্ত চেয়ে যাঁরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, 'ওডিশার শুনানি শেষ করে আদালত সিবিআই তদন্তের পক্ষেই রায় দেবে বলে আমাদের আশা৷' তবে রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা এ দিনও সিবিআই তদন্ত ঠেকানোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন৷


সারদা-কাণ্ডে সমস্যায় পড়া হাজার হাজার মানুষের কৌতূহল ছিল, বুধবার সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়, তা জানার জন্য৷ কিন্ত্ত রায় ঘোষণা না-হওয়ায় তাঁরা কিছুটা হতাশই হয়েছেন৷ অন্যদিকে তৃণমূল নেতৃত্ব তথা রাজ্য সরকারেরও আশঙ্কা ছিল, বুধবারই হয়তো সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হয়ে যাবে৷ কিন্ত্ত সেটা না-হওয়ায় তারা কিছুটা দম ফেলার সুযোগ পেল৷


সারদা-মামলার সিবিআই তদন্ত চাওয়ার পক্ষে বিকাশ ভট্টাচার্যদের অন্যতম যুক্তি হল, সারদা-কেলেঙ্কারিতে অনেকগুলি রাজ্যের মানুষ জড়িত৷ তাই রাজ্যের তদন্তকারীরা তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে পারবেন না৷ রাজ্যের আইনজীবী বৈদ্যনাথন এর বিরোধিতা করে বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ওডিশার কেলেঙ্কারির চরিত্র আলাদা৷ দু'টি কেলেঙ্কারির কোনও সম্পর্ক নেই৷' বিচারপতি তখন ওডিশার আইনজীবীর কাছে জানতে চান, তাঁদের রাজ্যের কেলেঙ্কারিতে সারদা গোষ্ঠী অভিযুক্ত কি না? ওই আইনজীবী জানান, ওডিশাতেও সারদা অভিযুক্ত৷


অসম ও ত্রিপুরা সরকার সারদা-সহ বিভিন্ন সংস্থার কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব ইতিমধ্যেই সিবিআইকে দিতে চেয়েছে৷ ত্রিপুরায় সিবিআই কাজ শুরুও করে দিয়েছে৷ অসমের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার এখনও অনুমতি দেয়নি৷ বিচারপতিরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চান, কেন তারা এখনও এই অনুমতি দেননি৷ আবেদনকারীদের আইনজীবী বিকাশবাবু জানান, তিনি সব রাজ্যের আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়েই রায় চান৷ কারণ, সব রাজ্যে একই ধরনের কেলেঙ্কারিতে একই সংস্থা, একই ধরনের লোকজন জড়িত৷ হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করার পদ্ধতিও এক৷ তাঁর অভিযোগ, সব জায়গায় সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ নিয়ন্ত্রকরা ওই কেলেঙ্কারি রুখতে ব্যর্থ হয়েছে৷ সে জন্যই তিনি সিবিআই তদন্ত চাইছেন৷


তবে বিচারপতিরা যাতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ না দেন, তার জন্য রাজ্য সরকারের আইনজীবী বৈদ্যনাথন আগাগোড়া সচেষ্ট ছিলেন৷ এই প্রসঙ্গে আগের দিন রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর সিবিআইকে সমালোচনা করার প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি৷ তাঁর বক্তব্য, 'রাজ্যে তদন্তকারীরা অত্যন্ত সঠিক পথে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত হচ্ছে৷ আমাদের চূড়ান্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করুন৷ আমরা যে কোনও ধরনের নজরদারিতে রাজি৷ দেখুন, গোপালকৃষ্ণ গান্ধী কী বলেছেন সিবিআই সম্পর্কে৷' বিচারপতি ঠাকুর বলেন, 'আমরা এ নিয়ে কিছু বলছি না৷' বিকাশবাবুর মন্তব্য, 'কে কী বললেন, সেটা আদালতে প্রমাণ হিসাবে গ্রাহ্য হয় না৷ এর পরই বৈদ্যনাথন বলেন, 'রাজনীতিবিদদের মামলায় সিবিআই কী ভূমিকা নিচ্ছে তা সকলে জানেন৷ লালু, মুলায়ম, মায়াবতীর মামলা আমাদের সামনে আছে৷' কিন্ত্ত বিচারপতি ঠাকুরের পর্যবেক্ষণ হল, অভিযাগ দু-তরফেই রয়েছে৷ সিবিআই নিয়ে যেমন আশঙ্কা রয়েছে, তেমনই রাজ্যের তদন্ত নিয়েও রয়েছে৷ বেঞ্চ এ দিন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সেবিকেও ভত্‍র্‌সনা করে বলে, 'এত বড় একটা কেলেঙ্কারি হল, আপনারা কি এতদিন চোখ বুজে ছিলেন? আপনাদের আচরণ সুদীপ্ত সেনের থেকে কম আপত্তিজনক নয়৷' এর আগেই রাজ্য সরকার আদালতে জানিয়েছিল, সেবি, রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজ ও আরবিআই-এর অফিসাররা সারদার কাছ থেকে মাসে ৭০ লক্ষ করে টাকা নিতেন৷ চার বছর বা তার বেশি সময় ধরে তাঁরা এই টাকা নিয়ে গিয়েছেন৷ বিচারপতিরা জানতে চান, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও অন্য সংস্থাগুলির কাদের জেরা করা হয়েছে? কেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক প্রাক্তন অফিসার ছাড়া অন্যদের জেরা করা হল না?


রাজ্য সরকারের আর্জি ছিল, এখন নির্বাচন চলছে, এখন যেন এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়৷ কিন্ত্ত বিকাশবাবু বলেন, 'জনস্বার্থ মামলার সঙ্গে রাজনীতির, ভোটের কী সম্পর্ক? সারদার টিভি চ্যানেলগুলি এখন কারা চালাচ্ছে? কারা টাকা দিচ্ছে?' তিনি বলেন, 'কুণাল ঘোষকে যখন অঢেল টাকা দিতেন সুদীপ্ত, তখন তিনি সাংসদ হননি৷ সেই টাকা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে লাগানো হত৷ তার পুরস্কার হিসাবে কুণাল সাংসদ হতে পেরেছিলেন৷ অন্য একজনও এ ভাবে সাংসদ হয়েছেন৷ রাজ্য সরকার কেন সিবিআইকে ভয় পাচ্ছে?' শুনানি শেষে দুই বিচারপতি বলেন, 'আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ৷ ওডিশার মামলা শুনে আমরা রায় দেব৷'



কলকাতার চিঠি

সারদা-কাণ্ডে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ

আবার কুণাল ঘোষ তাঁর ফেসবুকে সারদা-কাণ্ডের কথা জানেন, এমন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে যান। এই তালিকায় রয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও।

আর এসব ঘটনায় এবার চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর কুণাল ঘোষ হয়ে যান মমতার ছায়াসঙ্গী। যেখানে মমতা, সেখানে কুণাল ঘোষ। আর মমতাও কুণাল ঘোষের ওপর প্রচণ্ড আস্থা রেখে চলছিলেন। এর পুরস্কারও দেন মমতা কুণাল ঘোষকে। ভারতের আইনসভার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সাংসদ বা এমপি করেন তাঁকে।

এদিকে কুণাল ঘোষকেও কাছে টেনে নেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। সুদীপ্ত সেনও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন মিডিয়াজগৎকে হাতে নেওয়ার। কিনতে থাকেন এক এক করে বিভিন্ন মিডিয়া। প্রিন্ট থেকে ইলেকট্রনিক মিডিয়া। এমনিভাবে সারদার হাতে চলে আসে ১০টি মিডিয়া। কলকাতা ও আসামে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি ও উর্দু ভাষার ছয়টি দৈনিক এবং তারা, চ্যানেল-১০সহ চারটি টিভি চ্যানেল। আর মিডিয়া সেলের সিইও হয়ে যান তিনি।

হঠাৎ ওলটপালট হতে থাকে সারদার সাজানো বাগান। সারদার মালিকানাধীন তারা মিউজিক ও তারা নিউজ চ্যানেলের কর্মীদের অনিয়মিত বেতন দেওয়া শুরু হয়। খবরটি চলে আসে অন্য মিডিয়ায়। কর্মীদের বেতন বাকিও পড়ে। আন্দোলনে নামেন তারা টিভির কর্মকর্তা ও কর্মীরা। এরই মধ্যে এ বছরের ১০ এপ্রিল হঠাৎ গা ঢাকা দেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। তোলপাড় হতে থাকে কলকাতার রাজনীতিতে। উঠে আসে সারদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকা শাসক দলের বেশ কজন মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কের নাম। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি।

সুদীপ্ত সেন কলকাতা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি চিঠি লিখে যান ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইকে। ১৮ পাতার ওই চিঠিতেই সুদীপ্ত সেন জানিয়ে যান, কেন তাঁর এত বড় সাম্রাজ্যের পতন হলো। এ জন্য তিনি দায়ী করেছেন শাসক দলের বেশ কজন নেতা, মন্ত্রীসহ ২২ ব্যক্তিকে, যাঁরা তাঁর ওপর চাপ প্রয়োগ করে দিনের পর দিন আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন সারদা গোষ্ঠী থেকে।

এই চিঠিকে সুদীপ্ত সেন এফআইআর হিসেবে গণ্য করে মামলা দায়ের করার জন্য অনুরোধও জানিয়ে যান সিবিআইকে। ইতিমধ্যে অর্থলগ্নিকারীদের সাড়ে ১৮ লাখের বেশি আবেদন পড়ে সরকারের কাছে।

এদিকে কুণাল ঘোষ গ্রেপ্তার হওয়ার পর সারদা-কাণ্ড সিবিআইকে দিয়ে তদন্তের জোর দাবি ওঠে। বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, বিজেপি—সব দলই এক দাবিতে অনড় থাকে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা জানেন, এই কেলেঙ্কারির তদন্তভার যদি সিবিআইয়ের হাতে চলে যায়, তবে আরও বেরিয়ে পড়বে শাসক দলের কেলেঙ্কারির নানা কাহিনি। ফলে তিনি শুরু করেন সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা। অন্যদিকে বিরোধীরাও নাছোড়বান্দা। তাঁরাও শুরু করেন রাজ্যব্যাপী সিবিআই তদন্তের দাবিতে আন্দোলন। সেই আন্দোলন এখনো চলছে। দিনে দিনে জোরদার হচ্ছে।

অমর সাহা: প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি।


No comments:

Post a Comment